রমাদানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, অশ্লীলতা ও নগ্নতা বন্ধ এবং রমাদানের পবিত্রতা রক্ষার দাবিতে আজ ১০ মার্চ রবিবার সকালে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র মতিঝিলের কাচাবাজার থেকে শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে দেলাওয়ার হোসেন, কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন, শামসুর রহমান, ড. মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সালাম, সৈয়দ সিরাজুল হক, মহানগরীর সহকারী প্রচার সম্পাদক আশরাফুল আলম ইমন, সহকারী অফিস সম্পাদক আব্দুস সাত্তার সুমন, সহকারী সমাজকল্যাণ সম্পাদক শাহীন আহমদ খান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা কলেজের সভাপতি মুস’আব আব্দুল্লাহ, ঢাকা মহানগরী পূর্বের সেক্রেটারি জাফর সাদিক, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি হেলাল উদ্দিন সহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের বিভিন্ন থানা আমীর ও সেক্রেটারিবৃন্দ।
অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, পবিত্র মাহে রমাদান আমাদের মাঝে সমাগত। আর মাত্র ১ দিন পরেই সিয়াম সাধনার মাধ্যমে মুসলমানেরা আল্লাহর ফরজ ইবাদত পালন করবে ইনশাআল্লাহ। তিনি রমাদানের পবিত্রতা রক্ষার জন্য সরকার সহ সকলের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে দেশের মানুষ আজ বিপর্যস্ত। দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোগাড় করতেই তারা দিশেহারা হয়ে পড়ছে। এরমধ্যেই রমাদানকে সামনে রেখে দ্রব্যমুল্য আবারও দফায় দফায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাজারের এ অবস্থা দেখে দেশে কোনো সরকার আছে বলে মনে হচ্ছে না। সরকারের ব্যর্থতায় আওয়ামী দলীয় লোকজন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে লুটপাট ও জনগণের পকেট কাটতে ব্যস্ত রয়েছে। তিনি অবিলম্বে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার দাবী জানান। সাধারণ মানুষ যেন নির্বিঘ্নে সেহরি ও ইফতার করতে পারে তারজন্য প্রয়োজনে সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকি দিয়ে হলেও রমাদানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে প্রত্যক্ষ করছি, এই সরকারের মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সুন্নত নিয়ে বিদ্রুপ ও কটুক্তি করছে। ইফতারিতে খেজুর খাওয়া সুন্নত অথচ শিল্পমন্ত্রী খেজুরের পরিবর্তে বরই খাওয়ার নির্দেশনা দিচ্ছে। এই কটুক্তির জন্য অবিলম্বে শিল্পমন্ত্রীকে এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় এই শিল্পমন্ত্রীর পদত্যাগের জন্য জনগণ আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে। সরকার ইসলামে নিষিদ্ধ মদের উপর শুল্ক ফ্রি করে খেজুরের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে। এরফলে খেজুরের মুল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা রমাদান উপলক্ষে খেজুরের শুল্ক সম্পুর্ন ফ্রী করার দাবি করছি। এই সরকারের শিক্ষামন্ত্রী মাদ্রাসার বিরুদ্ধে কথা বলে এদেশের ইসলামী শিক্ষা ও ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আগামীদিনে জনগণকে সাথে নিয়ে এই সরকারের ইসলাম ও ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করা হবে ইনশাআল্লাহ। তিনি সেই আন্দোলনে সকলকে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকার রাতের ভোট এবং কারচুপির মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতাকে দখল করেছে। সেই অভ্যাস তারা এখনো বদলাতে পারেনি। সম্প্রতি ঢাকা আইনজীবী সমিতি ও সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনেও তারা একইভাবে প্রকাশ্যে ভোট চুরির মাধ্যমে নির্বাচন ব্যবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি ও আদালত প্রাঙ্গণকে কলঙ্কিত করেছে। এই ভোটচোর লুটেরাদের বিরুদ্ধে দেশের সকল ক্ষেত্রে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।