৫ মে শাপলা চত্বরের গণহত্যার স্মরণে ‘ছত্রিশ নয়া আজাদীর বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন’ কর্তৃক আয়োজিত “শাপলা ও গণহত্যার সিলসিলা” শীর্ষক আলোচনা সভায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, শাপলা গণহত্যা কেবল কয়েক শত আলেমকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিল না, বরং এই পরিকল্পনা ছিল এদেশ থেকে ইসলাম ও মুসলিম জাতিসত্তা মুছে ফেলা, নিঃশেষ করে দেওয়া।
তিনি বলেন, জাতি বা পরিচয় নিধনের এই চর্চা এতটাই সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে যে—জেনোসাইড সংঘটনকারীদের কাছে এটি নিছক কোনো অপরাধ নয়; বরং এটা তাদের কাছে ক্ষমতা ব্যবহারের একধরনের হাতিয়ার, যার মাধ্যমে তারা বিভিন্ন জাতি, গোষ্ঠী বা পরিচয়কে প্রতিনিয়ত শোষণ ও নিয়ন্ত্রণ করে।
নির্দিষ্ট ২/৩ টি ঘটনাই কেবল গণহত্যা নয়—উল্লেখ করে ড. মাসুদ বলেন, বিগত ১৬ বছর ধরে প্রতিদিন বিরতিহীনভাবে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, কমপক্ষে সাড়ে পাঁচ হাজার লোককে খুন, গুম, হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করার মধ্য দিয়ে তারা গণহত্যার মিশন শুরু করে এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত তারা এই গণহত্যা কার্যক্রম চালিয়ে গেছে। প্রতিটি গণহত্যার জন্য একবার করে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা উচিত, এবং প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের জন্য শেখ হাসিনার একবার করে ফাঁসি হওয়া উচিত—বলে মন্তব্য করেন তিনি। তবেই বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে দেশ মুক্ত হতে পারবে।
ইসলামী ছাত্র শিবিরের দায়িত্বশীল মেধাবী ছাত্র ওয়ালী উল্লাহ ও মোকাদ্দেসকে কোথায় নেওয়া হয়েছে, আজও কারো জানা নেই। এভাবে গুম হওয়া অসংখ্য ব্যক্তির কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাদের লাশ পর্যন্ত পরিবারকে দেওয়া হয়নি। তিনি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের পরবর্তী পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ডসহ আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের প্রতিটি দিনের গণহত্যার বিচার দাবি করে বলেন, “রাষ্ট্রকেই এই বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
ইসলামী ছাত্র শিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস. এম. ফরহাদের সভাপতিত্বে টিএসসি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, সাংবাদিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মাওলানা আলী হাসান তৈয়ব প্রমুখ।