বিদ্যুতের অযৌক্তিক ও অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ ও আমীরে জামায়াত জননেতা ডা. শফিকুর রহমানসহ সকল রাজবন্দী নেতাকর্মীর মুক্তির দাবিতে আজ দুপুর ১:০০টায় রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. মো. হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর পান্থপথ বসুন্ধরা মার্কেটের সামনে থেকে শুরু হয়ে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলাবাগান এলাকায় গিয়ে এক বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, শামছুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, কামরুল আহসান, ড. মোবারক হোসাইন, শরিফ উদ্দিন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী পূর্বের সেক্রেটারি আকিক ইসলাম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি আলাউদ্দীন আবির, ঢাকা কলেজ সেক্রেটারি আনিসুর রহমানসহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের বিভিন্ন থানা আমীর ও সেক্রেটারিবৃন্দ।
বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, দেশে বর্তমান ক্ষমতাসীন রাতের সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় ফলে এই অবৈধ সরকার দেশের জনগণকে জিম্মি করে রেখেছে। দেশে একেরপর এক গণবিরোধী সিদ্ধান্ত জনগণের উপরে চাপিয়ে দিয়ে নিজেরা ফায়দা লুটে নিচ্ছে। ক্ষমতাসীন সরকারের নানা ব্যর্থতা ও অন্যায়ের কারণে দেশে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের যখন নাভিশ^াস উঠেছে, ঠিক সেই সময়ে হঠাৎ আবারো বিদ্যুতের অযৌক্তিক ও অস্বাভাবিকভাবে মুল্য বৃদ্ধি করে মানুষের উপরে নতুন করে আবারও বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। দেশের জনগণ বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির এই হঠকারি সিদ্ধান্ত মানে না। জামায়াতের পক্ষ থেকে আমরা দাবি জানাই, দেশের মানুষের স্বার্থে অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন। অন্যথায় এই দাবিতে এবার জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে আপনাদের বিদায় ঘন্টা বাজানো হবে। এই অবৈধ ক্ষমতাসীন সরকার ব্যাংক ডাকাতির সরকার, জনগণের অর্থ-সম্পদ লুট করার সরকার। কুইক রেন্টালের নামে দেশের বিদ্যুৎ সেক্টরকে ধ্বংস করে এবং দেশের সম্পদ অবাধ লুটপাটের মাধ্যমে বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। অন্যদিকে সবকিছু দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। মানুষ আজ বড় অসহায় চরম বিপাকে আছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ। ভোট ডাকাতি, দখলদারী, গুম, খুন, দুঃশাসন এবং দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে দেশ গভীর সংকটে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, জনগণ মনে করে শেষ পদ্ধতি হিসেবে আবারো অবৈধ আওয়ামী সরকার জুলুম-নির্যাতনের মাধ্যমে জনগণকে জিম্মি করে জোর করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলে রাখতে চাই। এ কারণে আওয়ামী সরকার ভীত হয়ে দেশের জনপ্রিয় রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানকে সম্পূর্ণ মিথ্যা অজুহাতে কারাগারে আটক করে রেখেছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাস্সিরে কুরআন ও সাবেক এমপি মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ কারাগারে আটক রেখেছে, নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানসহ জামায়াতের এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের অনেক নেতা-কর্মীকে সরকার কারাগারে আটকে রেখেছে। সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বের হওয়ার পূর্বে পুনরায় মিথ্যা মামলা দিয়ে বারবার কারাগারে আটকে রেখে তাঁর উপর জুলুম করা হচ্ছে। সারাদেশে জামায়াতের অনেক নেতা-কর্মীকে গুম ও নিখোঁজ করে দেওয়া হয়েছে। দেশের বরেণ্য আলেমদেরকে মাসের পর মাস মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি কাজী ইবরাহীম, মুফতি আমীর হামজা সহ আটক ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও আলেম-ওলামাদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
ড. হেলাল আরও বলেন, যতই দমন, পীড়ন করুক না কেন দেশের জনগণকে আটকে রাখার শক্তি এই ভোট ডাকাত সরকারের নেই। রাজপথে মানুষের যে স্রোত শুরু হয়েছে, সেই স্রোতে এই দখলদার, ফ্যাসিবাদী সরকার ভেসে যাবে। দেশের মানুষ এই ব্যর্থ সরকারের কবল থেকে মুক্তি চাই, জনগণ জুলুমবাজদের কবল থেকে মুক্তি চাই এবং গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে এবং নির্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে তাহলেই সাধারণ মানুষ মুক্তিপাবে। এমতাবস্থায় ইসলামপ্রিয় দেশপ্রেমিক জনগণকে নিরব বসে থাকলে চলবে না। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের ষড়যন্ত্র, নৈরাজ্য ও অপতৎপরতা রুখে দিয়ে দাবী আদায়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।