লেখনী ও বক্তৃতার মাধ্যমে ছাত্র, শিক্ষক তথা সর্বস্তরের মানুষের চিন্তার পরিশুদ্ধি ঘটানোই যার যাবতীয় কর্মকা-ের মূল লক্ষ্য, দুনিয়ার লোভনীয় বৈষয়িক আকর্ষণ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে যিনি সদা সচেষ্ট, কুরআন হাদীস তথা ইসলামী সাহিত্যে যার রয়েছে গভীর পান্ডিত্য, যিনি দুনিয়ার ঝামেলায় মোটেই নিজেকে জড়াতে চান না, প্রতিনিয়ত যিনি নিজেকে গর্হিত কাজ থেকে বাঁচিয়ে চলার চেষ্টা করেন এবং আল্লাহর দ্বীন কায়েমের জন্য নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন, কথা ও কাজে মিল রেখে জীবনযাপন করছেন তিনি হলেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ অধ্যাপক নাজির আহমদ।
পৃথিবীতে কিছু মানুষ জন্মগ্রহণ করে যারা নির্লোভ, নিরহংকার, গোপনে থেকে আল্লাহ প্রদত্ত মেধা, যোগ্যতা, সততা ও শ্রম দিয়ে ইসলামী আন্দোলনের এই বাগানকে গড়ার কাজেই রত থাকেন। তেমনি একজন ক্ষণজন্মা ইসলামী ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক একেএম নাজির আহমেদ।
প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েল ডিপার্টমেন্টের সেরা ছাত্র ছিলেন তিনি। ব্যক্তি জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অনেক সম্ভাবনার হাত ছানিকে বাদ দিয়ে আমৃত্যু ইসলামী আন্দোলনের খেদমতে নিজের জীবনকে বিলীন করে দিয়েছেন এই মহান প্রাণপুরুষ। নিজের মেধা, যোগ্যতা, প্রজ্ঞা, লেখনি ও বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে এক ব্যতিক্রম অধ্যায় রচনা করেছিলেন তিনি। পরিচ্ছন্ন চিন্তা, রাসূল (সা.)-এর জীবনাদর্শ অনুসরণ, শিরক এবং বিদআত মুক্ত জীবন-যাপনে তিনি ছিলেন অনড়।
তিনি ইসলামী ছাত্রসংঘের কেন্দ্রিয় সভাপতি ছিলেন। জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি একাধারে একজন সাহিত্যিক, ভাষাবিদ, লেখক বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবি ও অন্যতম সংগঠক ছিলেন। ব্যক্তি জীবনে নির্লোভ, পরোপোকারী, সদা হাস্যোজ্জল ইসলামী আন্দোলনের এক অকুতোভয় সৈনিক ছিলেন।
ইসলামী আন্দোলনের এই প্রাণপ্রিয় আধ্যাতিœক নেতা ২০১৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর গভীর রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠার ২ জানুয়ারি ২০১৪ সালে তিনি দ্বিতীয় দফা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। এরপর থেকে তিনি হাসপাতালে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকেন। পরে ৭ জানুয়ারি ২০১৪ সালে তিনি রাত ১১ টা ১০ মিনিটে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে ৭৪ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন। তিনি স্ত্রী, ৩ পুত্র, ২ কন্যা ও অসংখ্য আত্নীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে যান।
জন্ম ও শিক্ষাঃ অধ্যাপক একেএম নাজির আহমদ ১৯৩৯ সালের ১৮ জানুয়ারি কুমিল্লা জেলার বরুড়া থানার অন্তর্গত আড্ডা ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম- ওমর আলী ভূঁঞা এবং মাতার নাম- গোলাপ জাহান। তিনি নিজ গ্রামে পিতৃগৃহে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের পর স্থানীয় আড্ডা হাইস্কুলে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন। তিনি ছিলেন একজন মেধাবী ছাত্র। বরাবরই তিনি ক্লাসে প্রথম হতেন। ১৯৫৭ সালে প্রথম বিভাগেই ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। অতঃপর ১৯৫৯ সাওে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে দ্বিতীয় বিভাগে ইন্টারমেডিয়েট পাস করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬২ সালে ইংরেজি সাহিত্যে বি.এ. অনার্স ও ৬৩ সালে কৃতিত্বের সাথে এম.এ. পাস করেন। তিনি ঢাকা সেন্ট্রাল ল’ কলেজে আইন বিভাগে অধ্যয়ন করেন।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে তিনি একজন U.O.T.C ক্যাডেট ছিলেন। একবার পুরো ব্যাটেলিয়ান থেকে ৩৩ জন চৌকস ক্যাডেটকে বাছাই করা হয়। তিনি ছিলেন তাদের একজন।
ছাত্র ইসলামী আন্দোলন ও রাজনৈতিক জীবন: সমাজের মাঝে ইসলামের সুমহান আদর্শ পৌঁছে দেয়ার জন্য তিনি অগ্রভাগে থেকে ভূমিকা পালন করেছেন। নেতৃত্বের গুণাবলী সম্পন্ন ছাত্রনেতা তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ইসলামী ছাত্রসংঘের কেন্দ্রিয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি মুসলিম ছাত্র মজলিসের সভাপতি এ.কে.এম. হাবীবুর রহমান ও জেনারেল সেক্রেটারী শাহ আবদুল হান্নানের নিকট ইসলামী আন্দোলনের দাওয়াত পান। অতঃপর অধ্যাপক সাইয়্যেদ মুহাম্মদ আলী সাহেবের সংস্পর্শে আসেন। উল্লেখ্য সাইয়্যেদ মুহাম্মদ আলী তদানিন্তন ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি ছিলেন। উল্লেখ্য যে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তার জীবনে সাইয়্যেদ সাহেব এক বিরাট প্রভাব ফেলেন এবং চিন্তার ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে সক্ষম হন। মূলত সাইয়্যেদ মুহাম্মদ আলী ছিলেন তার ছাত্র ইসলামী আন্দোলনের শিক্ষাগুরু। প্রথমতঃ তিনি ১৯৬০ সালে মুসলিম ছাত্র মজলিসে যোগদান করেন, পরে ইসলামী ছাত্রসংঘে যোদ দেন। ‘৬২ সালে ছাত্র সংঘের সদস্য পদ লাভ করেন। ১৯৬৩ সাল থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত তদানিন্তন পূর্বপাকিস্তান ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় ছাত্র অঙ্গনে ইসলামী আন্দোলনের কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ছাত্র হিসাবে আইন শাস্ত্র অধ্যয়ন অব্যাহত রাখেন। ১৯৬৫ সালের শেষ দিকে বৃহত্তর ইসলামী আন্দোলন জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন এবং’৬৬ সালেই সদস্য পদ লাভ করেন। অতপর ১৯৬৭ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর কুমিল্লা জিলার আমীর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এখানে উল্লেখ্য যে, তিনি শুধু মাত্র জামায়াতের রুকুনিয়াত রক্ষার জন্য কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের চাকুরী থেকে ইস্তফা দেন। পরে কুমিল্লা কলেজে অধ্যাপনা করেন।
কর্মজীবনঃ বাংলাদেশ অভ্যুদয়ের পর তিনি নিজেকে আবার শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত করেন এবং ’৭৯ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনা করেন। কর্মজীবনে তিনি লক্ষ্মীপুর সরকারী কলেজ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ, কুমিল্লা কলেজ ও আবুজার গিফারী কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৯৭৯ সালের শেষভাগে ইসলামী গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টারের পরিচালক হিসাবে যোগদান করেন এবং ইন্তেকালের আগ পর্যন্ত তিনি যোগ্যতা, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে সুষ্ঠুভাবে উক্ত দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
সাংগঠনিক জীবন: তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অন্যতম নায়েবে আমীর এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ, ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য। ১৯৬০ সালে ছাত্র জীবনেই ইসলামী আন্দোলনে জড়িত হন। তিনি ১৯৬৫ সাল থেকেই জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৬৭ সালে কুমিল্লা জেলা জামায়াতের আমীর নিযুক্ত হন। পরবর্তীকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সর্বশেষে ২০০৯ সাল থেকে নায়েবে আমীর হিসেবে মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালে তিনি প্রাদেশিক পরিষদে বরুড়া থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। তিনি একজন প্রচার বিমুখ ব্যক্তি, বর্হিমুখী এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে কাজের চেয়ে আদর্শ মানুষ গড়ার কাজে স্বীয় চিন্তা ও যাবতীয় কর্মকান্ডে নিজেকে ব্যাপৃত রেখেছেন বেশী।
ইসলামী আন্দোলনের কঠিন সময়ে তিনি সাহসী ভূমিকা পালন করার মাধ্যমে ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। আওয়ামী সরকারের জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী সহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ যখন কারাগারে বাকী নেতৃবৃন্দ যখন মামলা-হামলার কারণে প্রকাশ্য ময়দানে আসতে পারছে না তখন মাঠে থেকে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাৎ, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সম্মানে ইফতার মাহফিল, কূটনীতিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিল ও বিভিন্ন কর্মকান্ডে জামায়াতে ইসলামী মুখপাত্র হিসেবে ভূমিকা পালন করেন। তাঁর বক্তব্যের ভাষা ছিল সংক্ষিপ্ত, প্রচন্ড শক্তিশালী, বুদ্ধিদীপ্ত ও নেতা-কর্মীদের জন্য প্রেরণাদায়ক।
গ্রেফতারঃ ইসলামী আন্দোলনের অন্য শীর্ষ নেতাদের মতো তিনিও এ জালিম সরকারের গ্রেফতারের রোষানল থেকে রেহাই পাননি। গ্রেফতারের পর এই বয়ো:বৃদ্ধ সর্বজন শ্রদ্ধেয় ইসলামী ব্যক্তিত্বকেও পুলিশি রিমান্ডে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু সকল জুলুম-নির্যাতনের মোকাবেলায়ও তিনি ছিলেন অটল এবং অবিচল। তার গোটা জীবনে ছিলো সহজ-সরল, সাদামাটা তিনি ছিলেন সত্যিই একজন সফল নেতৃত্বের প্রতিচ্ছবি।
মূলত: তাঁর প্রিয়ভাজন শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার শাহাদাতের ঘটনা তাঁর হৃদয়ে রক্তক্ষরণ সৃষ্টি হয়।
সাহিত্য কর্মঃ মানুষের মন-মানসিকতা পরিবর্তন করে আদর্শ ও চরিত্রবান মানুষ গড়ার লক্ষ্যে তিনি অনকগুলো বই লিখেছেন। অধ্যাপক একেএম নাজির আহমদ ইসলামী সাহিত্যের অনবদ্য ভান্ডার গড়ে তুলেছেন। বড় বড় ইতিহাস ও জ্ঞানগর্ভ বিষয়সমূহ তিনি অতি সংক্ষেপে লিখেছেন। এটা তার বিরাট কৃতিত্ব যে, তিনি অতি বড় জিনিসও সংক্ষেপে পেশ করতে ও লেখার মাধ্যমে তুলে ধরতে পারেন। তাঁর লিখিত বইগুলো পড়লেই তা সহজে বুঝা যায়। বইগুলো হৃদয়গ্রাহী এবং চিন্তার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক ও উপযোগী। তাঁর ছোট ছোট বিষয় ভিত্তিক বইগুলো পাঠকদের কাছে শিক্ষকের মত ভূমিকা রাখে। ছোট-বড় মিলিয়ে এখন পর্যন্ত তাঁর লিখিত বই সংখ্যা ৩৬টি। তাঁর লিখিত বই সারা বিশ্বে ইসলামী আন্দোলনের পাঠকদের কাছে সমাদৃত। পাশাপাশি তিনি হাদীসগ্রন্থ, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবু দাউদ শরিফ, নাসাঈ শরীফ ও রিয়াদুস সালেহীন সহ বিভিন্ন উৎস গ্রন্থ বিশুদ্ধ বাংলায় প্রকাশ করেছেন। তাঁর অনুবাদ ইসলামী সাহিত্যাঙ্গনকে করেছে সমৃদ্ধ। তাঁর লেখা বইগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বই হলো- আল্লাহর দিকে আহবান, ইসলামী সংগঠন, আদর্শ মানব মুহাম্মদ (সা.), মহানবীর মহান আন্দোলন, যুগে যুগে ইসলামী জাগরণ, ইসলামী জাগরণের তিন পথিকৃত, বাংলাদেশের ইসলামের আগমন, আল্লাহর পরিচয়, দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রয়াস, দ্বীন প্রতিষ্ঠার সঠিক পদ্ধতি, ইসলামের সোনালী যুগ, উসমানী খিলাফতের ইতিহাস ও সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী। এছাড়া তিনি বেশ কিছু বই অনুবাদ করেছেন।- কালজয়ী আদর্শ ইসলাম (সাইয়েদ কুতুব), অনাগত মানব সভ্যতা ও ইসলাম (সাইয়েদ কুতুব), পাশ্চাত্য সভ্যতার উৎস (আবদুল হামীদ সিদ্দিকী), ইসলামী শিক্ষার মূলনীতি (অধ্যাপক খুরশীদ আহমদ) ইত্যাদি। এদিকে তিনি ইসলামিক সেন্টারের গবেষণা সেলের মাধ্যমে সমসাময়িক বিষয়ের উপর দেশে খ্যাতনাম লেখক ও বুদ্ধিজীবিদের সমন্বয়ে অসংখ্য গবেষণা পত্রিকা প্রকাশ করেছেন। দেশে-বিদেশের মানুষের কাছে সবচেয়ে পুরাতন ও ব্যতিক্রমধর্মী গবেষণা পত্রিকা ‘মাসিক পৃথিবী’ সর্বাধিক প্রচারিত ও সমাদৃত। ত্রৈমাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘কলম’ তাঁর অবদানের সাক্ষর হয়ে আছে। শিশু সাহিত্যের ক্ষেত্রেও তিনি রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। সব মিলিয়ে তাঁর লিখিত মৌলিক গ্রন্থ-পুস্তিকা প্রায় শতাধিক।
অধ্যাপক এ.কে.এম. নাজির আহমদ রচিত গ্রন্থাবলী
১. আল্লাহর দিকে আহবান
২. মহানবীর (সা) মহান আন্দোলন
৩. ইসলামের সোনালী যুগ
৪. ইসলামী সংগঠন
৫. সৃষ্টি ও দৃষ্টিকোণ
৬. পুরুষ ও মহিলাদের স্বাভাবিক কর্মক্ষেত্র
৭. আদর্শ শিক্ষক
৮. বাংলাদেশে ইসলামের আগমন
৯. ইসলামের দৃষ্টিতে উন্নতি
১০. বর্তমান সভ্যতার সংকট
১১. আল্লাহর পরিচয়
১২. আল্লাহর পরিচয় ও দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রয়াস
১৩. ইসলামী বিপ্লবের স্বাভাবিক পদ্ধতি
১৪. যুগে যুগে ইসলামী জাগরণ
১৫. বসনিয়া হারজেগোভিনার ইতিকথা
১৬. ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতি
১৭. সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী
১৮. উসমানী খিলাফতের ইতিকথা
১৯. ইসলামী জাগরণের তিন পথিকৃত
২০. আদর্শ মানব মুহাম্মদ (সা)
২১. ইসলামের দৃষ্টিতে ভাল ব্যবহার
২২. সাইয়্যেদ আবুল আ’লা মওদূদী
২৩. সূরাহ আল বাকারা (আয়াত ও অনুবাদ) -প্রকাশিতব্য
অনুবাদ গ্রন্থ
১. কালজয়ী আদর্শ ইসলাম
২. পাশ্চাত্য সভ্যতার উৎস
৩. আগামী দিনের জীবন বিধান
৪. ইসলামী শিক্ষার মূলনীতি
পাঠ্য পুস্তক
১. বাংলা পড়া-১
২. বাংলা পড়া-২
৩. A Childs English
৪. English Lessons Book-1
৫. English Lessons Book-2
৬. বাংলা ব্যাকরণ ও প্রবন্ধ রচনা-১ম খ-
৭. বাংলা ব্যাকরণ ও প্রবন্ধ রচনা-২য় খ-।
ইসলামী আন্দোলনের এই মহান দিকপাল তাঁর রচিত সাহিত্যের মাধ্যমে আমাদের মাঝে জাগরুক থাকবেন শতাব্দী থেকে শতাব্দীকাল। মুসলিম উম্মাহর জন্য তিনি হয়ে থাকবেন প্রেরণার বাতিঘর।
আল্লাহভীরু নেতা জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য আঞ্জাম দিয়েছিলেন অক্ষরে-অক্ষরে। তাঁর দারসুল কুরআন এবং আসহাবে রাসূলের জীবনের উপরে আলোচনা সত্যিই ছিল ব্যতিক্রম। জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ অনেকেই ছিলেন তাঁরই হাতে গড়া মানুষ। আনুগত্যের পরম পরাকাষ্ঠা হয়ে তিনি জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত ভূমিকা পালন করে গেছেন অনেকটাই নিরবে নিভৃতে।
সমাজ সেবাঃ তিনি ঢাকাস্থ ইসলামিক এডুকেশন সোসাইট ও বরুড়া আলফালাহ সোসাইটির চেয়ারম্যান এবং কুমিল্লা ইবনে তাইমিয়া ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।
দেশ ভ্রমণঃ এ পর্যন্ত তিনি ১৪টি দেশ সফর করেছেন এবং আন্তর্জাতিক সেমিনার ও সম্মেলনে যোগদান করে বক্তব্য প্রদান করেছেন। বিশ্বের ইসলামী আন্দোলনের নেতা ও পন্ডিত ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মতবিনিময় করেছেন। তিনি ১৯৯৫ সালে হজ্বব্রত পালন করেন। উল্লেখ্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইটালী, পাকিস্তান, ভারত, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, আরব-আমীরাত, থাইল্যান্ড, সিংগাপুর, জাপান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশ সফর করেন।
বৈবাহিক জীবনঃ ১৯৬৭ সালের ১২ নভেম্বর বরুড়া থানার অর্জুনতলার মিঞা বাড়ীতে তিনি বিবাহ করেন। তার স্ত্রীর নাম মনোয়ারা বেগম। তাদের ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে।