অবিলম্বে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে সরকারের পদত্যাগ করা, দেশে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও ওলামায়ে কেরামের মুক্তি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে আগামীকাল ২৮শে অক্টোবর রাজধানীর শাপলা চত্ত্বরে শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শুক্রবার জামায়াত রাজধানীর লালবাগ-বংশাল জোনে ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলন করে।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ও জোন পরিচালক মু. দেলাওয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে ও জোন সহকারী জনাব আহসান উল্লাহ’র পরিচালনায় উক্ত সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। সম্মেলনে আরও আরো বক্তব্য রাখেন জোনের ৭ টি থানার সম্মানিত আমিরবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, যতোই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করুন ২৮ অক্টোবর শাপলা চত্ত্বরে জনগণের দাবি আদায়ের জামায়াতে ইসলামীর মহাসমাবেশ বন্ধ করা যাবে না। দেশে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত নেই বলেই জনগণের দূর্ভোগ আজ চরম আকার ধারণ করেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে জনগণ দিশেহারা। বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি দেশের বরেণ্য ওলামায়ে কেরামগণ কারাগারে বন্দি। মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি আমীর হামজা সহ সকল ওলামায়ে কেরামগণকে দেশের তৌহিদী জনতা মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেছে। আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আওয়ামী এই স্বৈরাচারের চূড়ান্ত পতন ঘটিয়ে বরেণ্য সব আলেমদেরকে মুক্ত করা হবে। এর জন্যই আগামীকাল ২৮ অক্টোবর রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বরে জামায়াত শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। প্রশাসনকে অনুরোধ জানায় জামায়াতের মতো সুশৃঙ্খল শান্তিকামী রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মসূচির অনুমতি দিতে কোনো টালবাহানা খুঁজবেন না। কোনো অজুহাত দিয়ে টালবাহানা করে আর জনগণকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। দীর্ঘদিন জনগণ দেখছে এক একটা নতুন নতুন পয়েন্ট অজুহাত ব্যক্ত করে জনগণের আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে। জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রশাসনকে স্মরণ করে দিতে চাই, আপনারা যদি রাষ্ট্রের বা প্রজাতন্ত্রের সত্যিকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হয়ে থাকেন, তাহলে জনগণের সেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করুন। কারণ বাংলাদেশের জনগণের করের টাকায় আপনার বেতন হয়ে থাকে। তাই জনগণের অধিকার আদায়ের প্রশ্নে এই শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নির্বিঘেœ সফল করতে প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করবেন এটাই জনতার ন্যায্য দাবি। সম্মানিত ইউনিট দায়িত্বশীল প্রতিনিধিগণ আপনারা দেশের এই সংকট পরিস্থিতি উত্তরণে সার্বিক সহযোগিতার কথা ব্যক্ত করেছেন। তা অব্যাহত রাখবেন এটা প্রত্যাশা করি। জামায়াতের এই মহাসমাবেশ কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য, এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য, ফ্যাসিবাদের কবল থেকে জনগণের মুক্তির জন্য। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে দেশের মানুষ আজ দিশেহারা। দেশের এই পরিস্থিতিতে আমরা বসে থাকতে পারি না। জামায়াতে ইসলামী একটি নিপিড়িত মজলুম সংগঠন। দেশের মানুষ ও মানবতা রক্ষায় আমরা দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সভাপতির বক্তব্যে দেলাওয়ার হোসেন বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন ও অবৈধ স্বৈরাতান্ত্রিক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করতে হবে।নির্দলীয় কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।বাংলাদেশের আকাশে আজ কালো মেঘের ঘনঘটা দেখা যাচ্ছে। জোর পূর্বক জগদ্দল পাথরের মতো আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ১৫ বছর জাতির ঘাড়ে চেপে আছে। তারা দেশের গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান এক এক করে ধ্বংস করে দিয়েছে। জনগণের চলমান এই আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে দেশে সত্যিকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হবে। তিনি কাল ২৮ অক্টোবর রাজধানীর শাপলা চত্ত্বরে মহাসমাবেশে দলে দলে যোগদান করার জন্য রাজধানীবাসীর প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।আমাদের সমাবেশকে ঘিরে আওয়ামীলীগ এবং প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছেন। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই আমরা আল্লাহ ব্যথিত কাউকে ভয় পাইনা। শত বাঁধা উপেক্ষা করে আমরা আমাদের মহাসমাবেশ বাস্তবায়ন করবো ইনশাআল্লাহ।