বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেছেন, দেশ ও জাতির কল্যাণে জামায়াত কর্মীদের অতন্দ্র প্রহরী হয়ে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বৈষম্য দুর করে দুর্ণীতি-শোষণমুক্ত সমাজ গঠন ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে হবে। আর এই ত্যাগ ও কুরবানী পেশ করার প্রেরণা মুলত আমরা ঈদুল আযহা থেকে পেয়ে থাকি। ফলে ঈদুল আযহার চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মানবতার কল্যাণ ও জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের চকবাজার থানার উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য ও চকবাজার থানা আমীর শেখ আল আমীনের সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি এডভোকেট মুরাদ খান শাহীনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য মাওঃ আনিছুর রহমান, মোজাম্মেল হক, জহির আহম্মেদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, পবিত্র ঈদুল আযহা মুসলিম মিল্লাতকে ত্যাগ ও কুরবানীর শিক্ষা দিয়ে যায়। ধর্মপ্রান মুসলমানগন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এসময় প্রিয় পশু কুরবানী করে থাকে। মুলত প্রিয় পশু কুরবানী করার মাধ্যমে মুমিনগন নিজেদের অন্তরের কলুষতা ও পশুবৃত্তিকে দূর করার এবং আত্মত্যাগের শিক্ষা পেয়ে থাকে। সেই ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে আমাদেরকে ইসলামের আলোকে নিজেদের জীবন পরিচালনার শপথ নিতে হবে। নৈতিকতা সম্পন্ন আদর্শবান সুনাগরিক হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তোলার জন্য প্রচেষ্ঠা চালাতে হবে। পবিত্র ঈদুল আযহার এই মহান শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে হযরত ইব্রাহীমের আ. এর মত ত্যাগের সর্বোচ্চ ইতিহাস সৃষ্টির মাধ্যমে এদেশের সবুজ জমিনে ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার জনগণের জান ও মালের নিরাপত্তা বিধান করতে সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। রাষ্ট্রের সকল বিভাগ দলীয়করণ করায় জনসাধারণ আজ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত ও হয়রানির শিকার হচ্ছে। দেশের অর্থনীতি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। ব্যাংক গুলো তারল্য সংকট ও লোকসানের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ বাড়লেও কৃষক তার পণ্যের নায্য মূল্য পাচ্ছেনা। সোনালি আঁশ পাট ধ্বংস হয়ে শেষ, এখন চামড়া শিল্প ধ্বংসের মুখে। একদিকে ভয়াবহ বন্যা, অপরদিকে ডেংগুর ভয়াবহতা জনজীবনে দুর্বিষহ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। মহামারি হিসেবে ডেংগু সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় ডেংগু প্রতিরোধের জন্য দরকার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সমন্বিত উদ্যোগ। অথচ সরকারের লোক দেখানো কার্যক্রম পরিচালনা ও যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের অভাবে দেশে ডেংগু পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। এমতাবস্থায় তিনি দেশের মানুষের কষ্ট ও দুর্ভোগ লাঘবে সরকারকে যথাযথ ও কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহনের আহবান জানান।
মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া আরও বলেন, আজ ভারত সরকার কাশ্মীরের নিরাপরাধ জনগনের অধিকার কেঁড়ে নিয়ে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। সেখানে চরমভাবে সরকারের দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। ক্ষুধা নিবারনের জন্য কাশ্মীরী জনগণের ঘরে খাবার নেই, হাসপাতাল গুলোতে চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত ঔষধ নেই। আজ পশু কুরবানির পরিবর্তে স্বজনদের হারিয়ে তাদের ঘরে ঘরে শোকের মাতম চলছে। কাশ্মীরে যে অমানবিক নির্যাতন চলছে তা কোনো বিবেকবান মানুষ সহ্য করতে পারে না। তিনি কাশ্মীরের নির্যাতিত-নিপীড়িত মুসলমানদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও স্বাধীনতার দাবীতে সোচ্চার হওয়ার জন্য মুসলিম বিশ্ব সহ বিশ্ববাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।