বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, নির্বাচনকে অর্থবহ করতে জামায়াতে ইসলামীর উত্থাপিত ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি’, ‘পিআর পদ্ধতিতে সংসদের উভয় কক্ষের নির্বাচন’, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ’, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা’ এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ’ করার ৫ দফা দাবি জামায়াতে ইসলামীর একক দাবি নয়। একটি দল ব্যতীত দেশের অন্য সকল রাজনৈতিক দলও ৫ দফা দাবির পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। পুরো জাতি ৫ দফা দাবি বাস্তবায়ন চায়। ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়া সম্ভব। জাতি এমন একটি নির্বাচনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে।
রবিবার (০৫ অক্টোবর) ভয়েস অব সিভিল রাইটস ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘দুর্নীতিমুক্ত সমাজ ও ফ্যাসিবাদ মুক্ত রাষ্ট্র গঠনে মানবাধিকার, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যমত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরো বলেন, তরুণ প্রজন্ম যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩৫ এর মধ্যে এরা জন্মের পর থেকে একটিবারও ভোট দেননি। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে পাওয়ার পথ তৈরি হয়েছে। সরকার যদি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করে, তবে সাধারণ জনগণ ডাকসু নির্বাচনের মতোই ইসলামের পক্ষে আরেকটি বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম হবে।

ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, বিচার ও সংস্কার ব্যতীত অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমুখী নির্বাচন আশা করা যায় না। সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের নির্বাচনের আগেই বিচারের আওতায় না আনলে তারা দুর্নীতি-চাঁদাবাজির কালো টাকার ছড়াছড়ি করে নির্বাচনকে বিতর্কিত করবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সোচ্চার হতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা চাঁদাবাজি করছে তারা ধরে নিয়েছে যে তারাই রাষ্ট্রক্ষমতায় আছে এবং আসবে। কিন্তু জনগণ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে চাঁদাবাজদের ভোটের মাধ্যমে বয়কট করবে। জাতি চায় জামায়াতে ইসলামী নেতৃত্বে একটি বৈষম্যহীন, সুখী ও সমৃদ্ধ কল্যাণ রাষ্ট্র গড়তে। জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশ্য হচ্ছে জাতিকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, বেকারত্ব, দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত বৈষম্যহীন কল্যাণ রাষ্ট্র উপহার দেয়া এ জন্য তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নতুন বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
ভয়েস অব সিভিল রাইটস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. মারুফ শাহারিয়ারের সভাপতিত্বে এবং নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুর রহমানের পরিচালনায় রাজধানীর কাকরাইলস্থ শহীদ মীর কাসেম আলী হলে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সোসাইটি ফর ন্যাশনাল চ্যারিটির নির্বাহী পরিচালক শাহীন আহমেদ খান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মারুফুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।