আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা বিরোধী, জন দুশমন উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, যে দলের প্রধান প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে নিজ দেশে অ্যাটাক করতে অনুরোধ করে, তারা কখনো স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিশ্বাস করতে পারে না। তারা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিরোধী। তিনি আরো বলেন, যে দলের কাছে নিজ দলের নেতাকর্মী নিরাপদ নয়, সেই দলের কাছে দেশ ও জাতি নিরাপদ থাকতে পারেনি এবং পারবে না। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ কে নিজেদের পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে দেশের জনগণ কে তাদের প্রজা মনে করেছিলো। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে মতিঝিল থানা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, কেউ কেউ বলছেন, সবার রাজনীতি করার অধিকার আছে। যারা মানুষের রক্ত ও জীবন নিয়ে হোলি খেলেছে, তাদের রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে না। আগে গণহত্যার বিচার হতে হবে। তারপর এদেশের জনগণ সিদ্ধান্ত দিবে কার রাজনীতি করার অধিকার আছে আর কার রাজনীতি করার অধিকার নাই বা থাকবে না। প্রেস কনফারেন্স করে যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করা দলের পক্ষে দালালি করে এরাই গত ১৫ বছর ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের দোসর। এরা নিজ দলের জন্য যেমন ক্ষতিকর আবর্জনা তেমনি দেশ ও জাতির জন্যও এরা ক্ষতিকর আবর্জনা। এদেরকে বয়কট করা প্রথম কাজ দলের। এসময় তিনি অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রশাসনের ভিতরে, বাহিরে, রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় ফ্যাসিবাদের দোসরদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।নয়তো বাংলাদেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট হবে।
মতিঝিল উত্তর থানা আমীর এস. এম শামসুল বারী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ
মতিঝিল টিএন্ডটি কলোনী মাঠে অনুষ্ঠিত এই কর্মী সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী মো. কামাল হোসাইন ও মো. শামছুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদের সদস্য সৈয়দ সিরাজুল হক। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন শাহজাহানপুর পূর্ব থানা আমীর মাওলানা শরিফুল ইসলাম, মতিঝিল পূর্ব থানা আমীর মো. নূর উদ্দিন, মতিঝিল থানা শাখা শিবির সভাপতি নাজমুল হাসান, শাহজাহানপুর পশ্চিম থানা আমীর সরোয়ার হোসেন প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেদেশের সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছেন, বাংলাদেশে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিতে পারলে, ভারতে কেন শেখ হাসিনা আশ্রয় নিতে পারবে না! ভারতের জনগণ বাংলাদেশের বিপক্ষে নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতীয় শাসক দল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ষড়যন্ত্র করতে গিয়ে মোদি সরকার ভারতের অর্থনীতি ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। এখন ভারতের কৃষক, জনতা, ব্যবসায়ীরা সহ সেখানকার জনগণ মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠতে শুরু করেছে। ভারতীয় নাগরিকদের স্বার্থ রক্ষার যে কোন আন্দোলন সংগ্রামে বাংলাদেশের জনগণ সহযোগিতা করবে।
সম্মেলনের অন্যতম বিশেষ অতিথি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, শেখ হাসিনা নিজেও আসতে চেষ্টা করছে, আমাদের অন্তবর্তীকালীন সরকারও তাকে দেশে আনার উদ্যোগ নেওয়া শুরু করেছে। শেখ হাসিনা দেশে আসতে চায় দেশ ও জাতির শান্তি বিনষ্ট করতে। জনগণ তাকে দেশে এনে গণহত্যার বিচার করবে। শেখ হাসিনা টেলিভিশনের সামনে এসে তার অপরাধ কি জানতে চাইছি, তার অপরাধ সে তার পিতার মতই এদেশের মানুষকে শোষণ করেছে। আলেম-ওলামা, নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর কে হত্যা করেছে। তিনি আরো বলেন, ভারত আমাদেরকে আলু, পেয়াজ, চাল, ডাল না দেওয়ার হুমকি দেয়। অথচ আমরা তাদের থেকে কিনে আনলেই ভারত সমৃদ্ধ হয়। আমরা না কিনলে তাদের পথে বসতে হয়। ভারতের মিডিয়ায় অপপ্রচার চালানো হয়, বাংলাদেশ আর নাই! অথচ ইতিহাস পাঠ করে জানা যায়, ভারত একদিন থাকবে না। স্বাধীন বাংলাদেশের একজন নাগরিককে হত্যা করা মানে পুরো বাংলাদেশকে হত্যা করা। সীমান্তে আর একজন মানুষকে হত্যা করা হলে, জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এদেশের ১৮ কোটি জনগণ ভারতের অভিমুখে লংমার্চ করবে।