বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড.শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন,
বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে যদি বাংলাদেশকে বের করতে হয়, তাহলে অবশ্যই ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের বিচার সম্পন্ন হওয়ার মধ্য দিয়েই দেশে প্রথম সংস্কার শুরু করতে হবে। সেই হতাকান্ডের বিচার সুষ্ঠুভাবে করা হলেই কেবল সকল সংস্কার সুন্দরভাবে সম্পন্ন হতে পারে। পরবর্তীতে দেশের সকল ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার বা যেকোনো সংস্কার ফলপ্রসূ হবে বলে জনগণ মনে করে। আমরা যদি আগামীতে ভয়ভীতি মুক্ত সত্যিকার একটি বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই তাহলে গত ফ্যাসিবাদী সরকারের সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। আজ ৩০ অক্টোবর (বুধবার) জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্ভাবনার বাংলাদেশ আয়োজিত সেমিনারে অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে “রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর: ফ্যাসিবাদের উত্থান; পথ হারিয়েছিল বাংলাদেশ” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সম্ভাবনার বাংলাদেশ সংগঠনের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ আবদুল মান্নানের পরিচালনায় উক্ত সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাছুম।
অন্যানের মধ্যে বক্তব্য রাখেন – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. প্রফেসর ওয়ারেসুল আলম বুলবুল, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, কবি আব্দুল হাই শিকদার, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহীদুল ইসলাম, কর্নেল আব্দুল হক, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. বেলায়েত হোসেন, প্রকৌশলী শেখ আল আমিন, এডভোকেট রেজাউল করিম প্রমুখ।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের যতটা বর্বরতা দেখেছি, মুক্তিযুদ্ধে পাক-হানাদার বাহিনীর ততটা বর্বরতা দেখিনি।
অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগে কোন সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি হবে না। রাষ্ট্রপতি এরশাদ উপরাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন। এখন যেহেতু উপরাষ্ট্রপতি পদ নাই সেহেতু রাষ্ট্রপতি জনগণের কাছে পদত্যাগ জমা দিবেন। জনগণের প্রতিনিধি হচ্ছে সরকার। সুতারাং রাষ্ট্রপতি অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে পারে। এছাড়া বক্তারা সকলেই রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবি করেন। তিনি ২৮ অক্টোবর ২০০৬ থেকে ০৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ কর্তৃক সংঘটিত সকল হত্যাকান্ডের বিচার কার্যক্রম শুরু করতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানান।
সেমিনারে বক্তারা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ মূলত চেয়েছে জামায়াত-বিএনপির ঐক্যের ফাটল ধরাতে। তারা জানত এটি করতে পারলেই তারা ক্ষমতা দখল করতে পারবে। কারণ জামায়াত-বিএনপি জোটগতভাবে নির্বাচন করলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাতো দূরের কথা কখনো বিরোধী দলের আসনেও সংসদে বসতে পারবে না। সেজন্য তারা ২৮ অক্টোবর সৃষ্টি করেছে। সেদিন তারা মশাল হাতে নিয়ে এসেছে জামায়াত-শিবিরের অফিস পুড়িয়ে দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে দেশবাসীকে নিজেদের কব্জায় রাখতে।