বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদেরকে প্রতিটা মুহূর্তে প্রস্তুত থাকতে হবে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত এবং শহীদদের জন্য শুধুমাত্র এককালীন অনুদান নয় বরং তাদের পরবর্তী প্রজন্ম যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন ধারণ করতে পারে তার জন্য যা যা করা দরকার তার সবটাই সরকারকে করতে হবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও একটি দায়িত্বশীল সংগঠন হিসেবে বসে থাকতে পারে না। এরই অংশ হিসেবে আমরা প্রত্যেকটি শহীদ পরিবারকে প্রথমিকভাবে দুই লাখ টাকা এবং আহতদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের পাশাপাশি প্রত্যেক পরিবারকে এক লাখ টাকা করে অনুদান দিয়েছে। আহতদের চিকিৎিসায় সহযোগিতাও অব্যাহত থাকবে। তিনি সরকারের কাছে আহতদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা ও প্রয়োজনে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করার দাবি জানান।
আজ ২০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের হাজারীবাগ পশ্চিম থানার উদ্যোগে স্থানীয় ১৫নং স্টাফ কোয়ার্টার অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য ও হাজারীবাগ পশ্চিম থানার আমীর মো. মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি মো. মোহাম্মাদ সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যাপক ইজ্জত উল্লাহ, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য যথাক্রমে অধ্যাপক নূর নবী মানিক, শেখ শরীফ উদ্দিন আহমেদ, আব্দুর রহমান, দারসূল কুরআন পেশ করেন মাওলানা মোশাররফ হোসেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখে থানা কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুল কাদের পাটোয়ারী, মো. হারিসুর রহমান, মো. আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার ফিরোজ আহমেদ, মো. মোতাহার হোসেন, আব্দুল বারী আকন্দ প্রমূখ।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছে, শাহাদতের তামান্নায় উজ্জীবিত থেকে সাহসিকতার সাথে ত্যাগ এবং কোরবানীর নজরানা পেশ করার জন্য আমাদেরকে সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা যেন মনে না করি আমাদের সব অর্জন হয়ে গেছে। একটি স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত্তি অর্জিত হয়েছে মাত্র। এটাকে স্থায়ী রূপ দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আগামী দিনের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য যেকোনো ধরনের কোরবানীর জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
তিনি আরো বলেন, গণবিপ্লবের পরে আমীরে জামায়াত আমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন, অমুসলিমদের বিভিন্ন উপাসানালয়, স্থাপনা এবং তাদের প্রতিষ্ঠান পাহারা দিতে। সমগ্র বাংলাদেশে আমাদের সর্ব স্তরের নেতা-কর্মীরা পাহারা দিয়েছিল। একটি সুবিদাবাদী ও চক্রান্তকারী গোষ্ঠি যারা সব সময় ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। তারা ৫ই আগস্ট পরবর্তী তাদের সেই চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে পারেনি। আগামীতে আবার পূজা আসছে, পূজাকে সামনে রেখে একটি কুচক্রি গোষ্ঠি আবারও নতুন নতুন চক্রান্ত ঘটানোর জন্য যাতে কোনো প্রচেষ্টা চালাতে না পারে সে ব্যাপারে আমাদের সর্বদা সজাগ থাকতে হবে। আমাদের হিন্দু ধর্মাম্বলী ভাইরা যাতে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান ভালোভাবে পালন করতে পারে সে বিষয়ে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করতে হবে।
অধ্যাপক ইজ্জত উল্লাহ বলেন, দায়িত্বশীলদের ব্যক্তিগত সকল কাজের মাঝেও দ্বীনের এই মহান দায়িত্ব সঠিকভাবে আঞ্জাম দেয়ার জন্য সদাপ্রস্তুত থাকতে হবে। নিজেদের ও সংগঠনের কাজে ভারসাম্যপূর্ণ সমন্বয় করতে হবে। একইসাথে আমাদেরকে বহুবিধ যোগ্যতা ও সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। ইকামাতে দ্বীনের এ কাজে একনিষ্ঠ হয়ে সবার কাছে সংগঠনের দাওয়াত পৌঁছিয়ে দিতে হবে। সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুদৃঢ় ক্ষেত্র প্রস্তুত করা খুব জরুরি। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের সকল স্তরের দায়িত্বশীলদেরকে নৈতিকতার সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করতে হবে। খোদাভীতি, মেধা, প্রজ্ঞা ও বিবেকবোধের আলোকে নিজেকে ও সংগঠনকে পরিচালনা করতে পারলেই কেবল আমাদের প্রতিটি স্তরের সাফল্যের পাশাপাশি পরকালীন মুক্তি লাভ সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।