বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ আজ ১৫ জুন ২০২৩, বৃহস্পতিবার বিকালে বংশাল থানা জামায়াত আয়োজিত দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তিনি বলেন, আমাদের মাতৃভূমি প্রিয় বাংলাদেশ এক গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে। ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে দেশ, দুর্যোগময় মূহুর্ত পার করছি আমরা। আজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে যেমন দেশের জনগণের মাঝে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে, তেমনি আন্তর্জাতিক পরিম-লও আমাদেরকে তীক্ষè ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। জনগণের মতপ্রকাশের অধিকার, বাক স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের বাঁধা আমরা এদেশে কিভাবে চলাফেরা করছি তা সকলে দেখছে। খুব স্বাভাবিক ভাবে এই সময়ে বাংলাদেশ এসব না চাইলেও অতিত অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখেছি বিদেশী সেসব দেশের সিদ্ধান্ত কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেশের উপরে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। অপছন্দনীয় হওয়ার পরেও জনগণকে তা মানতে বাঁধ্য করা হয়েছে। আমরা আশা করি সেরকম ষড়যন্ত্রমূলক আর কোনো পরিকল্পনায় প্রিয় বাংলাদেশে না চলুক, সেদিকে যেন ধ্বাবিত না হয়। সরকার ইতোমধ্যেই যে ধরনের ফাঁদ তৈরি করে ফেলেছে, বাংলাদেশকে এক ধরনের বিপদের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। যেভাবে দেশকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে আর বেশি বিলম্ব করলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে বলে জনগণ মনে করে।
দায়িত্বশীল সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. দেলাওয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শূরা সদস্য ও বংশাল দক্ষিণ থানা আমীর মাহবুব আলম ভূঁইয়া, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শূরা সদস্য জনাব আহসান উল্লাহ সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বাংলাদেশের যে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় রয়েছে তাদের দ্রুত বোধদয় হবে, শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং খুব দ্রুতই দেশে কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে নির্দলীয় একটি সরকার ব্যবস্থার অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনগণের ভোটের প্রয়োগ নিশ্চিত হয় এমন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে দ্রুত সেই পরিবেশ তৈরি করুন। না হলে জনগণের ক্ষোভ একবার বিস্ফোরিত হলে আপনারা চরম মূল্য দিতে হবে। আজকে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় অভাব হচ্ছে যোগ্য, সৎ ও সত্যিকার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের। জনগণ সেই নেতৃত্ব ফিরে পাবার প্রত্যাশা করছে। তাই জনগণের চাওয়া পূরণের চিন্তায় মনোযোগ দিন। জনগণ আজ সৎ দক্ষ ও যোগ্য শাসক দেখতে চায়।
ড. মাসুদ বলেন, জনগণ জুলুম ও শোষনের অবসান দেখতে চায়। এই সরকার তাদের সকল অবৈধ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য, জনগণের কণ্ঠকে রুদ্ধ করার জন্য অন্যায়ভাবে জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে তার শেষ দেখতে চায়। বর্তমান বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম সিপাহসালার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্মানিত আমীর ডা. শফিকুর রহমানকে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় গ্রেফতার করে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। দেশের জনগণের স্বার্থে দশ দফা যুগপৎ কর্মসূচি ঘোষণার পরপরই আমীরে জামায়াতকে গ্রেফতার করা হয়। মুলত দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনতে জামায়াতে ইসলামী যেন কোন আন্দোলন করতে না পারে, সেই ভয়েই এই অবৈধ সরকার পরিকল্পিতভাবে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দকে বন্দী করে রেখেছে। আমরা সরকারকে বলতে চাই, অবিলম্বে আমীরে জামায়াত ও সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দকে মুক্তি প্রদান করুন। জনগণের উপরে সকল অন্যায় ও জুলুমের জবাব দিতে আমরা রাজপথে রয়েছি। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য, বঞ্চিত অসহায় প্রতিটি মানুষের ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, জনগণের সকল ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের আন্দোলন চলছে তা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। জীবনবাজি রেখে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা জনগণকে সাথে নিয়ে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অটুট রাখার স্বার্থে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সকলকে অংশগ্রহণ করার উদাত্ত আহ্বান জানান।