পহেলা বৈশাখ চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্যে লালিত অনন্য এক দিন। বাংলার প্রাচীনতম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বাংলা নববর্ষ ১৪২৫ উপলক্ষে নগরবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
শুভেচ্ছা বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ আমাদের আবহমান ঐতিহ্যের লালন এবং আত্মোপলব্ধির এক অনুপম দিন। আমাদের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, কৃষি, ব্যবসা সহ পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে বাংলা সনের ব্যবহার চিরন্তন। সুপ্রাচীন কাল থেকেই এদেশের মানুষ এই দিনটি বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবের মাধ্যমে পালন করে আসছে। দিনটি বাংলাদেশের মানুষের সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের জনগণের রয়েছে নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। কিন্তু আবহমানকাল থেকে চলে আসা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির ওপর চলছে পদে পদে বিজাতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে স্বার্থান্বেষী মহল ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতি ধ্বংসের গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের মূল্যবোধ ও জাতিসত্বা বিরোধী অপসংস্কৃতি সুকৌশলে আমদানি করে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করছে। তাই আমাদেরকে বিজাতীয় সংস্কৃতির গোলামি হতে বেরিয়ে এসে সুস্থ সংস্কৃতি চর্চা ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
জামায়াত নেতৃবৃন্দ আরোও বলেন, দেশে যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা বিদ্যমান। নিজেদের ন্যায্য অধীকার আদায়ে দেশের মেধাবী ছাত্রসমাজ যখন পড়ার টেবিলের পরিবর্তে রাজপথের আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছে। সরকার গণতন্ত্রের লেবাস গায়ে জড়িয়ে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের উপর জুলুম-নির্যাতনের মাধ্যমে ফ্যাসীবাদ কায়েম করেছে। জনগণ তাদের মৌলিক অধিকার হারিয়ে উন্মুক্ত পরিবেশে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। ঠিক এমনই এক নৈরাজ্য ও ভীতিকর পরিস্থিতিতে মুক্তির আহ্বান ও অফুরন্ত আনন্দের বারতা নিয়ে বাংলা নববর্ষ আমাদের সামনে হাজির হয়েছে। এ দিনটি সবাইকে প্রবলভাবে আপ্লুত করে এবং পুরাতনকে পেছনে ফেলে সামনে চলার প্রেরণা যোগায়। তাই এবারের বাংলা নববর্ষে জাতিকে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে জেগে উঠতে হবে।
নেতৃবৃন্দ অতীতের গ্লানি, দুঃখ, জরা মুছে, অসত্য ও অশুভ শক্তিকে পেছনে ফেলে দেশের মানুষ নতুন বছরে তাদের ন্যায্য অধিকার ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে পাক-এ কামনা করেন। সেইসাথে অমিত সম্ভাবনা নিয়ে সমাগত নববর্ষে অতীতের সব বিভেদ ভুলে নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে সুদৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলে জুলুমমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সকলের প্রতি আহবান জানান।