বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মাওঃ আ ন ম শামছুল ইসলাম বলেছেন, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুস সোবহানের মৃত্যুতে আমরা ইসলামী আন্দোলনের একজন অগ্রসৈনিককে হারিয়েছি। তার ইন্তেকালে আমাদের জাতীয় জীবনের এবং ইসলামী আন্দোলনের যে ক্ষতি হয়েছে তা কখনোই পূরণীয় হবার নয়। ইসলামী আন্দোলনের নেতা ও সমাজসেবক হিসেবে মাওলানা আবদুস সোবাহান ছিলেন এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। তিনি সব সময় শাহাদাতের তামান্না পোষণ করতেন। আমরা যে প্রেক্ষাপটে তাঁকে হারিয়েছি তাতে আমরা মনে করি নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাঁকে শহীদ হিসাবে কবুল করে নিয়েছেন। তিনি মরহুমের জীবনের নেক আমলগুলোকে কবুল ও তাঁকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা প্রদানের জন্য মহান আল্লাহ তা’য়ালার দরবারে দোয়া করেন এবং তার অসমাপ্ত কাজকে সমাপ্ত করতে ইসলামী আন্দোলনের প্রত্যেক কর্মীকে আরও সক্রিয়ভাবে কুরআন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান।
রবিবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত মাওলানা আব্দুস সোবহানের রূহের মাগফিরাত কামনায় ‘আলোচনা সভা ও দোয়া’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর মঞ্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে দেলওয়ার হোসাইন ও আবদুল জব্বার, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সবুর ফকির, আরোও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ফরিদ হোসাইন, অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, যুবনেতা কামাল হোসাইন, হাফিজুর রহমান, মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য সিরাজুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার সুমন, শাহীন আহমদ খান, আশরাফুল আলম ইমন প্রমুখ।
মাওঃ আ ন ম শামছুল ইসলাম বলেন, মরহুম মাওলানা আব্দুস সোবহান ছিলেন একাধারে বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন, সমাজসেবক, প্রবীণ জননেতা ও ৫ বারের নির্বাচিত সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য। তিনি একজন দক্ষ সংগঠকও ছিলেন। তিনি তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে ইসলামী আন্দোলনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে গেছেন এবং জীবনের শেষদিন পর্যন্ত সংগঠনের নায়েবে আমীরের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি অসংখ্য স্কুল, কলেজ, মসজিদ, হাসপাতাল সহ বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজের সকল স্তরের মানুষের খেদমত করে গেছেন। তাঁর এই সমাজসেবামূলক কর্মের মাধ্যমে অনেক অমুসলিমরাও উপকৃত হয়েছেন। তিনি মরহুমের সমাজসেবামূলক কাজগুলোকে সদকায়ে জারিয়াহ হিসাবে কবুল করে নিতে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করেন।
সভাপতির বক্তব্যে নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, মরহুম আব্দুস সোবহান আমৃত্যু দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য জীবনের সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন। তিনি সবসময় সামনে থেকে দেশ ও জনগনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, জুলুমবাজ সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থের জন্য কথিত বিচারের নামে প্রহসন করে তাকে কারারুদ্ধ করে তিলে তিলে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। বার্ধক্যের কারণে তিনি জামিন পাওয়ার হকদার হলেও তাকে জামিন দেয়া হয়নি। তিনি যে সমাজ বাস্তবায়নের স্বপ্ন দেখতেন তা তিনি দেখে যেতে পারেননি। তাই আমাদেরকে মহান এই দায়িত্বশীলের শোককে শক্তিতে পরিণত করে ইসলামী আন্দোলনকে আরোও বেগবান করতে হবে। তিনি ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলকে আরোও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান।
মঞ্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, মাওলানা আবদুস সোবহান ছিলেন আমাদের নেতা ও শিক্ষক। তিনি আজীবন হকের জন্য লড়াই করেছেন। তিনি কোনো দিন অন্যায় ও অসত্যের কাছে মাথা নত করেননি।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, মরহুম মাওলানা আব্দুস সোবহান ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের কালোত্তীর্ণ ও অজেয় সিপাহসালার। তাঁর অসমাপ্ত কাজকে আমাদেরই সমাপ্ত করতে হবে।
অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি মরহুম আব্দুস সোবহানের রুহের মাগফেরাত ও শাহাদাতের মর্যাদা কামনা করে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে বিশেষ দোয়া ও মুনাজাত করেন।