বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের রমনা থানার উদ্যোগে আজ জুম্মাবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে অগ্রসর কর্মী ও রুকন প্রার্থী শিক্ষাশিবির অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথি হিসিবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান, মহানগরী মজলিসে শুরা সদস্য ও নিউমার্কেট থানা আমির মুহিব্বুল হক ফরিদ। মহানগরী মজলিসের শুরা সদস্য ও রমনা থানা আমীর আব্দুস সাত্তার সুমনের সভাপতিত্বে ও থানা তারবিয়াত সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল ফারুকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রমনা থানার কর্মপরিষদ সদস্য আবু মুসা, অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, আকবর হোসেন, যুবনেতা আহমেদ আলী সরকার, মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, প্রকৌশলী মোবাশ্বিরুল ইসলাম প্রমূখ।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, কোনো অত্যাচারী শাসককে আল্লাহ এমনিতেই ছেড়ে দেন না। তার জন্য কঠিন পরিণতি অপেক্ষা করে। বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় না হলে তাদের পরিণতিও খুব ভালো হবে বলে মনে হয় না। আবারো একটি একতরফা ভোটারবিহীন ভোট ডাকাতির নির্বাচন করার জন্য সরকার জেলায় জেলায় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করছে। আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করার জন্য শপথ করানো হচ্ছে। জামালপুরের জেলা প্রশাসক আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট চেয়েছেন। আজ গোটা প্রশাসনই এখন আওয়ামী প্রশাসন। আবারো প্রহসনমূলক কোন নির্বাচন এদেশের জনগণ মেনে নিবেনা। হেফাজতের আন্দোলনকে নিষ্ঠুরভাবে দমন ও গণহত্যা ঘটনা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার ফলে সরকার অন্যায়ভাবে আদালত ব্যবহার করে অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান ও একজন পরিচালককে সাজা প্রদান করে। যা চরম মানবাধিকারের লঙ্ঘন। ছাত্রলীগের দাঁত ভাঙতে এখন আর অন্য কাউকে দলের প্রয়োজন হয় না। যারা আমাদের উপর দীর্ঘ ১৫ বছর নির্যাতন চালিয়েছে, গণতন্ত্রকামী মানুষকে অন্যায়ভাবে গুম খুনে নেতৃত্ব দিয়েছে আজ জাতির সামনে তাদের চরিত্র উন্মোচন হচ্ছে। জনগণ আবারো দেখলো জামায়াতের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিতে রাজধানীতে পুলিশ প্রশাসন সরকারের নির্দেশে যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি করে ৪৬ জন নিরাপরাধ মানুষ ও বয়বৃদ্ধকে গ্রেফতার করতে। তারা চোরের মত সমাবেশের শেষে আমাদের লোকদেরকে থাবা দিয়ে ধরে নিয়ে যায়। এর চেয়ে লজ্জা ও নিকৃষ্ট আচরণ আর কি হতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আর অতীতের মত দিনের ভোট রাতে নিয়ে বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে না। একটি সরকার কতটা জনবিচ্ছিন্ন হলে পার্শ্ববর্তী একটি দেশের কাছে সবকিছু বিলিয়ে দেয়। তারা কথায় কথায় অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর কথা বলে। অথচ পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের মদদে এই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্বয়ং পররাষ্ট্রমন্ত্রী নির্লজ্জের মত সেই দেশের কাছে শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় রাখার আবেদন জানিয়ে দেশের গণতন্ত্র সংবিধানকে অবজ্ঞা করেছে। তাদের একমাত্র ভয় জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবির। তারা হিসেব করে দেখেছে বাংলাদেশ মানুষের মাঝে জামায়াতের জনপ্রিয়তা অনেক গুণ বেড়েছে। তারা এখন ভবিষ্যতে জামায়াত সরকার গঠন করবে এমন আতঙ্কে আছে। তাই আগামী দিনে জামায়াতের সম্ভাবনা যাতে নস্যাৎ করা যায় এজন্য জামায়াতের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। আমাদের নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে, গুম খুনের রাজত্ব কায়েম করে তারা ভেবেছিল বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলবে। কিন্তু শহীদ নেতৃবৃন্দের রক্তের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের জমিন জামায়াতে ইসলামীর জন্য আর উন্মুক্ত হয়ে গিয়েছে। দেশের মানুষের আশা ভরসার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে জামায়াতে ইসলামী। সুতরাং শহীদের চেতনায় উজ্জীবিত কাফেলাকে দমিয়ে রাখার সাধ্য এই রাদের ভোটে নির্বাচিত সরকারের নেই।
তিনি বলেন, কেয়ারটেকার সরকারের রূপকার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আমরা দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে বলে দিতে চাই এদেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোন বিকল্প নেই। আগামী দিনে এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করার এক দফা আন্দোলনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করার জন্য তিনি জামায়াতের সকল নেতাকর্মী সহ সকলকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।