বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, বাংলাদেশে মানুষ প্রতিনিয়ত অসংখ্য অগ্নিকাণ্ডের বিপর্যয় দেখছে, অথচ আশ্চর্যের বিষয় এসকল অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ সব সময়েই অন্ধকারে থেকে যাচ্ছে। এসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে সঠিক কারণগুলো জাতির সামনে তুলে ধরুন এবং যথাযথ প্রতিকারের ব্যবস্থা করুন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আমরা মনে করি এটা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব। ক্ষমতাসীন সরকারের আগ্রহ ও ঐকান্তিক ইচ্ছা থাকলে এসব অগ্নিদূর্ঘটনা রোধ করা অবশ্যই সম্ভব। আমরা লক্ষ্য করেছি ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী সকল দূর্ঘটনার পিছনে বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র বলে বক্তব্য দিয়ে জাতির সামনে নিজেদের ব্যর্থতাকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। দেশের জনগণ অবাঞ্চিত এধরনের বক্তব্য আর শুনতে চাই না। জনগণ সঠিক তথ্য ও বাস্তব সম্মত কারণ জানতে চাই। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকলে যেকোনো ঘটনার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করা খুবই সাধারণ বিষয় এটা জনগণও বোঝে। আমরা এসব ঘটনার প্রকৃত রহস্য জাতির সামনে তুলে ধরতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
আজ বুধবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে নিউমার্কেটে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী দেলওয়ার হোসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সালাম, হাফিজুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসের শুরা সদস্য মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ ফরিদ, শাহীন আহমদ খান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্রাইসিস হল দেশপ্রেমিক নেতৃত্বের। সু-দক্ষ লিডারশীপ না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশের ভাগ্যের পরিবর্তন বার বার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এটা চরম লজ্জার যে, স্বাধীনতা অর্জনের অর্ধশতাব্দি পরেও বাংলাদেশকে বিদেশী প্রভুদের দ্বারস্থ হয়ে পথ চলতে হয়। বাংলাদেশের যেকোনো জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে আমরা আজও ঐক্যমতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়নি। আজকে পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। জনগণের অধিকার ও মর্যাদা বর্তমান আওয়ামী শাসক শ্রেণির কাছে সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত হয়ে আছে। যে গণতন্ত্রের কথা বলা হয় তা বাংলাদেশে পরিপূর্ণভাবে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। জনগণের ভোট, ভাত, কাপড়, শিক্ষা সহ সকল অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। সবকিছুর অধিকার আজ চরমভাবে ভূলুন্ঠিত। এমতাবস্থায় দেশ গঠনে ইসলামের সুমহান আদর্শের ভিত্তিতে সংগ্রাম করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। যে আদর্শ প্রতিষ্ঠিত হলে দেশের বিশ কোটি মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাসূল সা. এর দেখানো আদর্শের ভিত্তিতে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছে। দেশপ্রেমের প্রথম শর্ত হচ্ছে সততা। মূল উপাদান হচ্ছে মানুষ। যারা দুর্নীতি করে মানুষকে ঠকায় তারা দেশপ্রেমিক হতে পারে না।
এসময় অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে নিউমার্কেটের এসব দোকান মালিক ও ব্যবসায়ীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এসময় ৩৫জন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের প্রত্যেককে নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা করে অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়।