ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক পানির মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
আজ মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নেতৃবৃন্দ বলেন, “করোনা মহামারির এই সময়ে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক পানির মূল্য বৃদ্ধি করার যে প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে তা অত্যন্ত অমানবিক। বৈশ্বিক এই মহামারির মধ্যে সারা পৃথিবীর মানুষ যেখানে তার জীবন ও জীবিকার জন্য শংকিত। এমন বাস্তবতায় জীবন বাঁচানোর অন্যতম উপাদান পানির দাম বাড়ানোর উদ্যোগ দুঃখজনক ও মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। এ অযৌক্তিক সিদ্ধান্তে রাজধানী ঢাকা বাসীর জীবনযাত্রার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। সরকার এখনও ঢাকা মহানগরীতে বসবাসরত জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারেনি। সকল মানুষের জন্য নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়নি। এ ছাড়া রাজধানী ঢাকা মহানগরীর অনেক এলাকার পানি মারাত্মক দুর্গন্ধযুক্ত হওয়ায় তা ব্যবহারের অনুপযুক্ত। দীর্ঘদিন যাবত সাধারণ মানুষ তাদের প্রতিক্রিয়ায় নিরাপদ পানির জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছে। ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ নিরাপদ পানি সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে পানির মূল্য বৃদ্ধির যে উদ্যোগ নিয়েছে তা অনাকাঙ্খিত এবং জনস্বার্থ বিরোধী। তাদের এ উদ্যোগ সেবার পরিবর্তে জনগণের দুর্ভোগ আরো বৃদ্ধি করবে। এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে। এমতাবস্থায় মূল্য বৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত ‘মরার উপর খাড়ার ঘাঁ’।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর গত ১৩ বছরে ১৩ বার পানির দাম বাড়ানো হয়। এবারের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে এই সময়ে মোট ১৪ বার পানির দাম বাড়বে। আবাসিকে প্রতি হাজার লিটার পানির মূল্য ১৫ টাকা ১৮ পয়সা এবং বাণিজ্যিক কারখানায় ৪২ টাকা করার প্রস্তাব কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মানুষের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ সমস্যার স্থায়ী সমাধানকল্পে ঢাকা ওয়াসার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
জাতীয় এই দুর্যোগের সময় জনগনের স্বার্থে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃক পনির মূল্য বৃদ্ধির এ অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।