বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, যেখানে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত নয় সেখানে ঈমানদারদের প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিৎ তাঁর দ্বীনকে বিজয়ী করার আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালানো। আল্লাহর সবচেয়ে পছন্দনীয় ও বড় ইবাদত হচ্ছে ইকামতে দ্বীনের কাজকে আঞ্জাম দেওয়া। এ ব্যাপারে সামান্যতম দূর্বলতা প্রদর্শন আমাদের আখেরাতের সফলতাকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে। আমাদের যাবতীয় ইবাদতের মূল লক্ষ্য হচ্ছে ইকামতে দ্বীনের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা। আল্লাহর আদেশ পালনের ক্ষেত্রে হযরত ইব্রাহীম আ. ও হযরত ইসমাঈল আ. যে আদর্শ স্থাপন করেছেন তা আমাদের অনুসরণ করতে হবে। ত্যাগ ও কুরবানীর মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে আমাদের সকলকে ইকামতে দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের যাত্রাবাড়ী পশ্চিম থানার উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য ও যাত্রাবাড়ী পশ্চিম থানা আমীর খন্দকার এমদাদুল হকের সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি মাওলানা সাদেক বিল্লাহ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সবুর ফকির, এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল হাসান, হুমায়ূন কবির প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বাংলাদেশে প্রচলিত প্রতিহিংসা ও প্রতিপক্ষ নির্মূলের ধ্বংসাত্মক রাজনীতির বিপরীতে জামায়াতে ইসলামী ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য আদর্শিক রাজনীতির চর্চা করছে। ইসলাম হলো আমাদের জীবনাচরণকে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে বাস্তবে প্রয়োগ করার নাম, যা মানুষের কল্যাণ সাধনের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন সম্ভব। তাই জামায়াতে ইসলামী ইসলামের সু-মহান আদর্শকে ধারণ করে সমাজের অসহায়-বঞ্চিত মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। জামায়াতকে রুঁখে দেওয়ার জন্য কুশীলবরা বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্রের ফাঁদ পেতেছে, জেল-জুলুম-নির্যাতনের স্টীম রোলার চালিয়েছে তবুও এই আদর্শিক আন্দোলনের অগ্রযাত্রার পথকে রুদ্ধ করা সম্ভব হয়নি। বরং ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, যে জমিনে শাহাদাতের রক্ত ঝরেছে সেখানে ইসলামের বিজয় সুনিশ্চিত হয়েছে। তাই কোন রকম ভয় কিংবা হতাশ না হয়ে জাতির এই ক্রান্তিকালে আন্দোলনের দায়িত্বশীলদেরকে সাহস, হিম্মত ও বলিষ্ঠতার সাথে ভূমিকা পালন করতে হবে। ঈদুল আযহার চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মানবতার কল্যাণ ও জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আজ ইসলাম বিরোধী শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাশ্মীর, ফিলিস্তিন, আরাকান, সিরিয়া সহ পৃথিবীব্যাপী মুসলমানদের উপর যুলুম নির্যাতন চালিয়ে তাদেরকে রক্তাক্ত করছে। সম্পুর্ন অন্যায়ভাবে কাশ্মীরের জনগনের অধিকারকে হরণ করা হয়েছে। মিয়ানমারে আরাকানের মজলুম রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষন ও বাস্তুচ্যুত করে রাষ্ট্রহীন করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিস্তিনের ভূমি জবরদখল করে ইহুদীবাদী রাষ্ট্র ইসরাইল প্রতিষ্ঠা করে শতাব্দীর ভয়াবহ সংকট তৈরী করা হয়েছে। যার ফলে ফিলিস্তিনিরা আজ নিজ দেশেই পরবাসী হয়ে রয়েছে। এমতাবস্থায় তিনি মানবতার কল্যাণে সাড়া দিয়ে কাশ্মীর সহ বিশ্বব্যাপী নির্যাতিত-নিপীড়িত মজলুম মুসলমানদের সাহায্যে মুসলিম বিশ্ব সহ শান্তিপ্রিয় বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।