আগামী ১০ জুন রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ বাস্তবায়নে সহযোগিতার আহবান জানিয়ে নিম্নোক্ত যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও ঢাকা জজকোর্টের ১১৫ জন আইনজীবী।
যৌথ বিবৃতিতে আইনজীবীগণ বলেন, জনগনের অধিকার আদায়ে সু-নির্দিষ্ট ৩টি দাবীতে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন, নেতৃবৃন্দের মুক্তি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবীতে আগামী ১০ জুন শনিবার রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে তারা এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে চায়। সমাবেশ যথাযথভাবে বাস্তবায়নের লক্ষে এরইমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সহযোগিতার আবেদনও করা হয়েছে। সংবিধান হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন। বাংলাদেশের সংবিধানে নাগরিকদের স্বাধীনভাবে চলাফেরা, মত প্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ মিছিল-সভা সমাবেশ করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসংগত বিধিনিষেধ-সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হইবার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে।’
আইনজীবীগন বলেন, সংবিধান স্বীকৃত সভা সমাবেশের অধিকার বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব। কিন্তু আমরা উল্টো প্রবণতা লক্ষ্য করছি। ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর ও চলতি বছরের ১১ই ফেব্রুয়ারি ও ২৫ ফেব্রুয়ারি সমাবেশ ও মিছিল করার জন্য সহযোগিতা চেয়ে ডিএমপিতে আবেদন করে জামায়াতে ইসলামী। প্রশাসন কোনটার ক্ষেত্রেই সহযোগিতা করেনি। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীগণের একটি প্রতিনিধি দল সমাবেশের আবেদন নিয়ে ডিএমপি কমিশনারের নিকট গেলে ডিএমপি কার্যালয়ের গেট থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। যা মত প্রকাশ ও সভা-সমাবেশে বাধা দেয়ার একটি নিকৃষ্ট নজির হয়ে থাকবে। সর্বশেষ গত ৫ জুন সমাবেশ ও মিছিল করার জন্য সহযোগিতা চেয়ে ডিএমপিতে আবেদন করা হয়। কিন্তু কর্মদিবসের (ওয়ার্কিং ডে) কথা বলে সেই আবেদনটিও নাকচ করে দেন ডিএমপি কমিশনার। এভাবে বারবার সহযোগিতা চাওয়ার পরও প্রশাসন জামায়াতে ইসলামীকে সভা সমাবেশ করতে দিচ্ছে না। আমরা আইনজীবীগন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে থাকি ফলে সংবিধান স্বীকৃত এই অধিকার বাস্তবায়নে জামায়াতে ইসলামীর শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা করার উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।
আইনজীবীগণ আরও বলেন, আমরা লক্ষ করছি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচীকে ঘিরে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদেরকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে তাদের বাসাবাড়ি ও কর্মস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও অসংখ্য নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যবৃন্দকে বিনা অপরাধে হয়রানী করা হয়েছে যা আইনের শাসনের চূড়ান্ত পরিপন্থি। পুলিশ প্রশাসন যেন গনতন্ত্র বিরোধী, শান্তিপূর্ন নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে নিজেদের প্রতিবন্ধক হিসেবে দাড় না করায় আমরা সেই আহ্বানও জানাচ্ছি।