বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃতী সন্তান জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, সমাজে প্রতিষ্ঠিত সকল বিধানের উপরে ইসলামকে বিজয়ী আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্যই মহান আল্লাহ রাসূল (সা)-কে নির্দেশনা দিয়ে পাঠিয়েছিলেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুরআনের বিধান প্রতিষ্ঠার সেই ধারাবাহিকতায় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের এই ভূ-খন্ডে আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন কায়েম করতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য প্রচলিত রাজনীতির মত যে কোন ভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার রাজনীতি জামায়াতে ইসলামী করেনা। জামায়াত এদেশে সৎ লোকের নেতৃত্ব গ্রহণ ও রাষ্ট্রীয় শক্তি অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এটাই ইসলামের সাধারণ শিক্ষা। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। আমরা আমাদের আখেরাতকে সুন্দর করতে চাই। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে দুনিয়ার মানুষকে বিশেষ করে বাংলাদেশের মানুষকে বসবাসের উপযোগী একটি শান্তিপূর্ণ ভূ-খন্ড উপহার দেওয়া। সৎ ও দক্ষ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে এদেশ সুখি-সমৃদ্ধশালী একটি দেশে পরিনত হবে। যেখানে কোনো অন্যায়-জুলুম থাকবে না, অন্যের অধিকার হরন করা হবে না। যেখানে মানুষের অধিকার দ্বারে দ্বারে পৌঁছে যাবে। যার যা প্রাপ্য সঠিক ভাবে তিনি তা পাবেন। এই ধরনের একটি সুখি-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জামায়াত এদেশের জনগণকে আল্লাহমুখী করে গড়ে তুলতে চাই।
তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জে সদর উপজেলার চর-বাগডাঙ্গা ইউনিয়নের কর্মী ও শুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের আমীর মাওলানা মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুল আলীম, ইউনিয়ন সেক্রেটারি আনোয়ার মিলন সহ জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, রাসূল (সা) একদল যোগ্য লোক তৈরি ও তাদেরকে সংঘবদ্ধ করে সমাজে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা পালন করেছেন। যারা ইসলাম গ্রহণ করেছেন তাদেরকে চার দফা কর্মসূচীর ভিত্তিতে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছেন। প্রথমত, আল্লাহর আয়াত পেশ করে সত্যের দাওয়াত সমাজের সকলের কাছে পৌঁছিয়ে দেওয়া। দ্বিতীয়ত, মানুষকে কুরআনের মাধ্যমে পরিশুদ্ধ-পবিত্র-সংশোধন কার্যক্রম পরিচালনা। তৃতীয়ত, এসব মানুষকে আল্লাহমুখী করে গড়ে তোলা। চতুর্থত, সমাজ-দেশ-রাষ্ট্রে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো যোগ্য-দক্ষ করে ঈমানের ভিত্তিতে লোক তৈরি করা। এভাবেই আল্লাহর রাসূল প্রশিক্ষনের মাধ্যমে প্রত্যেককে কুরআনের সৈনিক হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। বিজ্ঞান-কৌশল-বুদ্ধিমত্তা প্রজ্ঞা সবকিছুকে কাজে লাগিয়ে মূলত ইসলামকে প্রতিষ্ঠা ও সকল বাঁধা বিপত্তিকে মোকাবেলা করার মতো যোগ্য লোক প্রস্তুত করেছিলেন। একইভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য, এই জনপদকে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ জনপদে পরিনত করার জন্য কুরআন এবং হিকমার জ্ঞানে উদ্দীপ্ত একদল যোগ্য লোক তৈরী করতে হবে। যারা নিজের ঈমানী চেতনাকে জাগ্রত করে সমাজ পরিবর্তনের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে। তিনি কুরআনের নির্দেশনা ও রাসূলের (সা) গৃহীত কর্মসূচীর আলোকে নিজ নিজ এলাকায় সেই প্রচেষ্টা চালানোর জন্য সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশের মানুষের সকল ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে যাচ্ছে। অথচ সরকার জামায়াতে ইসলামীর ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করতে, জামায়াতের অগ্রগতিকে থামিয়ে দিতে এবং গণমানুষের আন্দোলনকে বাঁধাগ্রস্ত করতেই আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে। আমরা আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ সকল জামায়াত নেতৃবৃন্দের মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। একইসাথে বলে দিতে চাই গ্রেফতার করে, জুলুম চালিয়ে জামায়াতের অগ্রযাত্রাকে রুখা যাবে না। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে আজ পুরো জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সকলের দাবি একটাই, দেশে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অথচ আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে নির্বাসিত করে ক্ষমতা দখলে রাখার জন্য নির্বাচনের নামে একটি প্রহসন মঞ্চস্থ করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ সেই প্রহসন আর মেনে নেবে না। তিনি দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলকে কার্যকর ভূমিকা পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান।