বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ ১৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর (ভারপ্রাপ্ত) ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য কামাল হোসাইনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সালাম, জামায়াত নেতা সৈয়দ সিরাজুল হক, জসিমুল হক পাটোয়ারি, রবিউল হোসেন, হেদায়েত উল্লাহ প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
সভাপতির বক্তব্যে ড. হেলাল বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে মরিয়া হানাদার বাহিনী ও কুচক্রী মহল ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাংলার বুদ্ধিজীবীদের উপর উন্মত্ত মৃত্যুকামড় দিয়েছিল। সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রে রাতের আঁধারে হত্যা করেছিল দেশমাতৃকার শ্রেষ্ঠ কৃতী সন্তানদের। ঘাতকগোষ্ঠীর হীন লক্ষ্য ছিল, লড়াকু বাঙালী জাতি স্বাধীনতা অর্জন করলেও যেন বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে পঙ্গু, দুর্বল ও দিক-নির্দেশনাহীন হয়ে থাকে।
দেশটির স্বাধীনতা আটকানো না গেলেও শিশুরাষ্ট্রটি জ্বরা আর অপুষ্টিতে মুখ থুবড়ে মারা পড়বে। সেই টার্গেট থেকেই সেদিন হায়েনারা বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল। পৃথিবীর অনেক জাতি যুদ্ধ করে, অনেক জীবন ও রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে; কিন্তু এত প্রাণক্ষয় কোন জাতির ভাগ্যে ঘটেনি। শুধু তাই নয়, জাতির বিবেক বলে খ্যাত বুদ্ধিজীবীদের এমন নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনাও ইতিহাসে বিরল। এ ঘটনায় স্তম্ভিত ও হতবাক হয়ে যায় বিশ্ববিবেক। বাঙালী জাতির মুক্তি সংগ্রামে এসব বুদ্ধিজীবী নিজেদের মেধা, মনন ও লেখনীর মাধ্যমে স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রেরণা যুগিয়েছেন, পথ দেখিয়েছেন মুক্তির, উদ্দীপ্ত করেছেন অধিকার আদায়ে।
ড. হেলাল শহীদ বুদ্ধিজীবীদের যথাযথ মর্যাদায় শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন এবং সকল শহীদদের পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তিনি আরোও বলেন, দীর্ঘ মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে বিজয় অর্জনের পর যারা জাতিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দিতে চায়নি তারাই এই নির্মম ও নিষ্ঠুর হত্যাকান্ডের নেপথ্য শক্তি। স্বাধীনতার ৪ দশক পরেও দেশপ্রেমিক বুদ্ধিজীবীরা এখনো নানাভাবে জুলুম-নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী গোষ্ঠী এই ইস্যুকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের হাতিয়ার হিসেবে গ্রহন করে মিথ্যা অভিযোগে প্রহসনের মাধ্যমে সাবেক আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ সহ জামায়াতের জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও প্রতিবাদী কন্ঠ সমুহকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে।
মূলত চক্রান্তকারীরা জাতীয় নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে দেশকে মেধাহীন ও করদরাজ্য বানাতে চায়। তিনি শহীদদের ত্যাগ ও কুরবানীকে কবুল করতে মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া করেন।