মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ জেলার বন্যাকবলিত বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে মানুষের মাঝে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের পক্ষ হতে ফুড প্যাকেট উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব বন্যার্তদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী প্যাকেট তুলে দেন। এসব ফুড প্যাকেট উপহার প্রদানে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. কামাল হোসাইন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য শ্রমিকনেতা আব্দুস সালাম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সমাজকল্যাণ সম্পাদক শাহীন আহমেদ খান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মৌলভীবাজার জেলা আমীর ইঞ্জিনিয়ার শাহেদ আলী, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি আলাউদ্দিন আবীর, মৌলভীবাজার পৌর জামায়াতের আমীর তাজুল ইসলাম সহ স্থানীয় জামায়াতের কয়েক শত নেতাকর্মীরা।
অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, আজকে আমরা জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ হতে মৌলভীবাজারের এসব পানি বন্দি মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের আমীর জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল সার্বক্ষনিক বন্যার্তদের খোঁজখবর রাখছেন। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন। বিপদগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানো আমরা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী হিসেবে ঈমানী দায়িত্ব হিসেবে মনে করি। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র আমাদের সাথে প্রতিবেশীর মতো আচরণ করছে না। ফলে বন্যাসহ উদ্ভূত সব দুর্যোগ পরিস্থিতির স্বীকার হচ্ছে বাংলাদেশ। সীমান্তে বড় বড় দু’টি নদীতে বাঁধ দিয়ে তারা নদীর স্বাভাবিক প্রবাহকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। টিপাই মুখে ভারতের সুবিধা অনুযায়ী তারা বাঁধ বন্ধ করে রাখে। অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রয়োজনের সময়ে তারা পানি আসতে দেয় না এবং পরে ইচ্ছে মতো বাঁধ খুলে দিয়ে আমাদেরকে ঢুবিয়ে মারতে চাই। এভাবেই পুরো বাংলাদেশের নদীর সীমান্ত মুখে তারা বাঁধ দিয়ে দেশের দুর্যোগকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এদিকে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ সাহেব তার নিজ এলাকায় হাওড়ের মধ্য দিয়ে যে রাস্তা তৈরি করেছেন। যেখানে যথেষ্ট পরিমাণে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। তার ফলেও প্রতিবছর সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার অত্র এলাকা বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে। মিঠামাইন উপজেলা সহ আশেপাশের এলাকার এ রাস্তা আমাদের আরও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের কাছে যদিও দাবি জানিয়ে কোনো লাভ নেই তবুও তাদের কাছে আহ্বান করছি। সরকারের প্রতি আহ্বান অতি দ্রুততম সময়ে অষ্টগ্রাম মিঠামাইনে রাস্তায় প্রয়োজনীয় সেতু, কালভার্ট ও অবকাঠামো তৈরি করে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
তিনি বলেন, দেশের অর্থ বিদেশে পাচার, জনগণের সম্পদ লুটপাট, আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মী বাহিনী এবং সরকারের প্রশাসনে তাদের নিয়ন্ত্রিত যেসব লোক দায়িত্বে কর্মরত আছেন সকলেই দুর্নীেিত দেশকে গ্রাস করছেন। বিশেষ করে বেনজির আহমেদ ও সাবেক সেনাবাহিনীর প্রধান আজিজ সহ লাখ সংখ্যক অফিসার সুবিধা ভোগ করে এই অবৈধ সরকারকে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে। তারা ব্যাপকভাবে দুর্নীতি অনিয়ম, শোসনের মাধ্যমে দেশের অর্থ পাচার করে দেশকে দুর্ভিক্ষের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এমনিতেই দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জনগণ দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। এ অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না। জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলেই কেবল পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। আওয়ামীদের সিন্ডিকেট দিয়ে মানুষের কথা চিন্তা না করেই একটার পর একটা অপ্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এ অবৈধ সরকার দেশে সবকিছুই অস্বাভাবিক করে ফেলেছে। এ সরকারের জনগণের সরকার নয়। সে কারণে জনগণের কথা চিন্তা না করে সবকিছুই নিজেদের আখের গুছাতে করে চলেছে।
তিনি ফ্যাসিষ্ট সরকারের সকল ধরনের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে জনগণের দাবি আদায়ের যেকোনো আন্দোলন সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধভাবে সচেতন দেশবাসীকে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।