বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, হজ্ব একটি মৌলিক ইবাদত। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে হজ্ব পালন করা। মহান আল্লাহ যাদেরকে আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান ও শারীরিকভাবে সুস্থ রেখেছেন তাদের জন্য হজ্ব অবশ্যই পালনীয় বা বাধ্যতামূলক ফরজ ইবাদত। একজন মুসলিম হিসেবে আমরা চাই, হজ্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি ফরজ ইবাদত যেন আল্লাহ আমাদের সকলের জন্য কবুল করেন। একে অন্যের প্রতি বিশেষ দরদ মন নিয়ে হজ্বের সময়ে সেখানে অবস্থান করবেন।২০২৪ সালে হজ্বে যাওয়ার জন্য যারা সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তারা মুলত এখন থেকেই মহান আল্লাহর বিশেষ মেহমান হিসেবে গণ্য হয়েছেন। আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে দাওয়াত এসেছে বলেই আপনারা হজ্বে যেতে পারছেন। যে আল্লাহ আপনাকে তার মেহমান হিসেবে কবুল করেছেন, এখন থেকে জীবনের বাকি সময়টুকুও ঐ আল্লাহর হুকুম পালনে তার রাস্তায় নিজেকে উজাড় করে দিতে হবে। বাংলাদেশের সবুজ ভূ-খন্ডে পরিপূর্ণভাবে ইকামাতে দ্বীনের বিজয়ের জন্য সত্য ও সুন্দরের পক্ষে দৃঢ়তা প্রদর্শন করতে হবে।
- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ২০২৪ সালে হজ্ব গমনেচ্ছুদের নিয়ে হজ্ব গাইডলাইন কর্মশালা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় কর্মশালায় হজ্বের গাইড লাইন প্রদান করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে মু. দেলওয়ার হোসাইন, মুহাম্মদ কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান। কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য যথাক্রমে শামসুর রহমান, এডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন, ড. মোবারক হোসাইন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মোশাররফ হোসাইন, সৈয়দ জয়নুল আবেদীন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী প্রচার সম্পাদক আশরাফুল আলম ইমন, সহকারী অফিস সম্পাদক আব্দুস সাত্তার সুমন, সহকারী সমাজকল্যাণ সম্পাদক শাহীন আহমদ খান সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, হজ্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদতটি কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে পালন হওয়া খুবই জরুরি। এখানে অনেক কর্মসূচি রয়েছে, যা একজন হাজ্বীকে পর্যায়ক্রমে সম্পাদন করতে হয়। আজকে হজ্ব গাইডলাইন কর্মশালায় সেই বিষয় গুলো শেখানো হয়েছে। এজন্য ঢাকা মহানগরী দক্ষিণকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। প্রিয় রাসূল (সা) হজ্ব পালনে যেসব নির্দেশনা দিয়ে গেছেন সেভাবেই সবার হজ্ব পালন হওয়া দরকার। সফল হজ্ব বা হজ্বে মাবরুর আল্লাহর নিকট কবুল হওয়ার জন্য যথাযথ নিয়ম গুলো হাজ্বীদেরকে অনুসরণ করতে হবে, যাতে করে হজ্ব পালন শেষে আমরা নিজেকে পুতপবিত্র করতে পারি। যাদেরকে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন হজ্ব পালনে কবুল করেছেন তারা অবশ্যই সম্মানিত। তাদেরকে এটাও মনে রাখতে হবে এই হজ্ব পালনের বাহিরেও সামগ্রিক জীবনে আমাদের আরও কিছু মৌলিক ইবাদত ও দায়িত্ব মহান আল্লাহ প্রদান করেছেন। সেসব ইবাদতেও যেন আমরা লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক বলার যোগ্যতা অর্জন করি। খেয়াল রাখতে হবে, হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে যেন সকল পর্যায়ে এটা আমাদের দাওয়াতী কাজেরও অংশ হিসেবে পরিগণিত হয়।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, পবিত্র হজ্ব পালন আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার নৈকট্য লাভের একটি মাধ্যম, যা আল্লাহর আদেশ। তিনি যাকে পছন্দ করেন তাকে তার মেহমান হিসেবে কবুল করে নেন। সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের নির্ধারিত স্থানে গিয়ে হজ্ব পালনের মাধ্যমে মূলত আল্লাহর কাছে হাজির হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের হজ্ব পালন করা যেন শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা না হয় বরং তা যেন আমাদের আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের মাগফেরাতের উছিলায় পরিনত হয় সে ব্যাপারে হাজী সাহেবদের সচেতন থাকতে হবে।
ড. খলিলুর রহমান মাদানি বলেন, ইসলামের মূল স্তম্ভসমূহের পঞ্চমটি হল হজ্বে বায়তুল্লাহ। ঈমান, নামায, যাকাত ও রোযার পরই হজ্বের অবস্থান। হজ্ব মূলত শারীরিক ও আর্থিক উভয়ের সমন্বিত একটি ইবাদত। তাই উভয় দিক থেকে সামর্থ্যবান মুসলিমের উপর হজ্ব পালন করা ফরয।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, যারা হজ্বে যাওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেন তারা প্রকৃত আল্লাহর মেহমান। তাই প্রত্যেকের উচিত সর্বদা আল্লাহর আনুগত্য ও তার মুহববতের অনুভূতি নিয়ে সেখানে অবস্থান করা। বায়তুল্লাহ ও আল্লাহর অন্যান্য নিদর্শনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। সকল প্রকার গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। হজ্বে থাকা অবস্থায় পরিবার-পরিজন ও নিজ দেশের কল্যাণে বিশেষ দোয়া করা আপনাদের নিকট এটা আমাদের সবার চাওয়া।
হজ্ব গাইডলাইন কর্মশালা ও দোয়া অনুষ্ঠানে আল্লাহর মেহমান সম্মানিত হাজ্বীদেরকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের পক্ষ থেকে বিশেষ উপহার হিসেবে লাগেজ ব্যাগ সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।