বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে পবিত্র মাহে রমাদান ও মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আর্তমানবতার সেবায় দুঃস্থ ও বেকার মানুষদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মুগদায় বেকার শ্রমজীবী মানুষের মাঝে রিকশা-ভ্যান, মালামাল ও নগদ পুঁজি বিতরণ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব উপকরণ বিতরণ করেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. দেলাওয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সমাজকল্যাণ সম্পাদক শাহীন আহমদ খান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও মুগদা পূর্ব থানা আমীর মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও মুগদা উত্তর থানা আমীর মতিউর রহমান, শ্রমিক নেতা শামীম হোসাইন সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, কর্মক্ষম বেকার মানুষদের সাবলম্বী করতে আমরা জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ হতে নানাবিধ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছি। সীমিত সামর্থের আলোকে সমাজের বঞ্চিত মানুষের মুখে আমরা হাসি ফুটাতে চাই। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের সমাজকল্যাণ বিভাগের উদ্যোগে আজ রিকশা, ভ্যান, মালামাল ও নগদ পুজি প্রদান করা হচ্ছে। আমরা আর্তমানবতার পাশে থেকে ও বেকার মানুষদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে তাদেরকে সাবলম্বী করে সমাজে মাথা উঁচু করে দাড়ানোর সুযোগ করে দিচ্ছি। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে জামায়াতের এই প্রচেষ্টা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, আওয়ামী সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে দেশের অর্থনীতি আজ বিপর্যস্ত। নিত্যপণ্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও দারিদ্র্যের কষাঘাতে দেশের মানুষ আজ দিশেহারা। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় পবিত্র রমাদান মাসেও দেশের দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষগুলো দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, তেল সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী অসহায় ও নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে গেছে। দেশের সকল স্তরে বিরাট বৈষম্য তৈরি হওয়ায় জনগণ কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছে না। এমতাবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করা সাধারণ মানুষের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এই অসহায় জনগোষ্ঠীর পাশে সহযোগিতার হাত নিয়ে দাঁড়ানোর দায়িত্ব ছিলো সরকারের। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের জনগণের প্রতি কোন দায়বদ্ধতা নেই। বার বার ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতা দখল করা এই সরকার দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে জনগণকেই শোষণ করে চলেছে। এমতাবস্থায় দায়িত্বশীল সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামী মানুষের কল্যাণে এগিয়ে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা রমাদানের এই পবিত্র মাসে রাজধানীতে ইতোমধ্যেই ৬৫টি স্থানে মানুষের মাঝে রিকশা, ভ্যান, নগদ পুঁজি সহ নানাবিধ উপকরণ বিতরণ করেছি। আল্লাহ তায়ালা কিছু মানুষকে সম্পদ দিয়েছেন আবার সম্পদশালীদের এই সম্পদে সমাজের অসহায় মানুষেরও হক রয়েছে। ফলে আমরা যারা যাকাত ও সদাকা দিচ্ছি এতে বড়ত্বের কিছু নেই আর আমরা যারা নিচ্ছি তাদেরও হীনমন্যতার কিছু নেই। ইসলামের সুমহান আদর্শের ভিত্তিতে বাংলাদেশে একটি কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারলে বঞ্চিত মানুষেরা তাদের অধিকার ফিরে পাবে। জামায়াতে ইসলামী সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি সেই কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সকলকে শরিক হওয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান।