★দেশের মানুষের কষ্ট উপলব্ধি না করে মন্ত্রীরা জনগণের জীবনমান ও খাবার নিয়ে উপহাস করছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কদমতলী পশ্চিম থানার উদ্যোগে আজ ৬ মার্চ, বুধবার সকালে রাজধানীর কদমতলী এলাকায় মাহে রমাদান উপলক্ষে নিম্ন-মধ্যম আয়ের মানুষের মাঝে ইফতার ও সাহরী সামগ্রী বিতরণ করা হয়। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই ইফতার ও সাহরী সামগ্রীর ফুড প্যাকেট বিতরণ করেন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও কদমতলী পশ্চিম থানা আমীর কবিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য মু. জয়নাল আবেদীন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য মহিউদ্দিন, থানা জামায়াত নেতা মাসুদুর রহমান, মনিরুজ্জামান, আব্দুর রহমান সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্দুস সবুর ফকির বলেন, নিত্যপণ্যের অগ্নিমূল্যে জনগণ দিশেহারা। দেশের মানুষ আজ বড় অসহায়। পৃথিবীর মুসলিম রাষ্ট্র গুলোতে রমজানে সবকিছুর দাম কমিয়ে দেওয়া হয় অথচ বাংলাদেশে তার পুরোই উল্টো চিত্র দেখায় যায়। এখন মৌসুমের সময়ে পেঁয়াজ ১২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে, ২০ টাকার আলু ৫০ টাকা দিয়ে কিনতে বাধ্য হচ্ছে। ফলে অসহায় দরিদ্র মানুষ কি দিয়ে ইফতার করবে, কি দিয়ে সেহরি করবে এ নিয়ে বিপাকে আছে। এরমধ্যে আবার শুরু হয়েছে আগুনের ভয়াবহতা। এতদিন অগ্নিকান্ড বন্ধ থাকলেও রমজানকে সামনে রেখে একেরপর এক রেস্তোরা, চিনির গোডাউন, বিভিন্ন ভবন আগুনে পুড়ে যাচ্ছে। এসবের পিছনে কোনো রহস্য ও ষড়যন্ত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। আমাদের দেশে এমন চরিত্রের লোক শাসন ক্ষমতায় বসে রয়েছে যারা জনগণের রক্ত চুষে নেওয়ার জন্য সদা তৎপর। তারা রমজানে মানুষকে আরও কিভাবে শোষন করা যায় সেই পায়তারা করছে। দেশের মানুষ কতটা কষ্টের মধ্যে আছে তা উপলব্ধি করে না সরকারের মন্ত্রীরা জনগণের জীবনযাপন ও খাবার নিয়ে উপহাস করে বক্তব্য দিচ্ছে। ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে তারা বলে ইফতারিতে খেজুর বাদ দিয়ে বরই খাবেন, কাঁঠাল দিয়ে বার্গার বানিয়ে খাবেন। জনগণের সাথে ঠাট্টা, মশকরা ও উপহাস করা বন্ধ করুন। লজ্জা থাকলে অবিলম্বে এসব অর্বাচীন মন্ত্রিদের জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করা উচিৎ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হচ্ছে ‘মানুষের সেবা ও সহযোগিতা করা’। যার ধারবাহিকতায় আজকে আমরা এখানে ইফতার ও সাহরী সামগ্রীর ফুড প্যাকেট অসহায় মানুষের হাতে তুলে দিয়েছি।
যেন তারা এই রমজানে আল্লাহর ফরজ ইবাদত সিয়াম পালনে কিছুটা হলেও সাচ্ছন্দ্য পায়। রমজানের শুরুতেই খাদ্য সামগ্রীর দাম কমিয়ে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সরকারের আরও তৎপর হওয়া উচিৎ ছিলো অথচ সরকার জনগণের চিন্তা না করে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতেই ব্যস্ত রয়েছে। জামায়াতে ইসলামী একটি আদর্শবাদী, গণমুখী ও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে দেশের মানুষের জীবন মান উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সমাজের বঞ্চিত, অবহেলিত ও অসহায় মানুষের কষ্ট লাঘবে নিজেদের সামর্থ্যের আলোকে সহযোগিতা ও
সেবা কার্যক্রম নিয়ে তাদের পাশে আছে। যা দেশবাসী প্রত্যক্ষ করছে এবং স্বীকৃতি দিতেও বাধ্য হচ্ছে। তিনি সমাজের বিত্তশালী ও সামর্থ্যবানদের সমাজের এসব অসহায় মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান।
ড. আব্দুল মান্নান বলেন, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির ফলে দেশের মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী কিনতে পারছে না। জনগণের উপরে জুলুমতন্ত্র চাপিয়ে দিয়ে আজ পুরো বাংলাদেশকে শোষণ করা হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে পারে না, এ অবস্থা থেকে দেশের মানুষের মুক্তির জন্য সচেতন দেশবাসীকে ভূমিকা রাখতে হবে।