বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আজ ১লা জানুয়ারি সোমবার রাজধানীর বস্তি স্কুল গুলোতে অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বই উৎসব, স্কুল ড্রেস ও শীতবস্ত্র উপহার প্রদান করা হয়। কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই স্কুল গুলোতে নতুন বছরের বই, স্কুল ড্রেস ও শীতবস্ত্র উপহার প্রদান করেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী, শাহীন আহমদ খান, জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন, কামারাম মুনিরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেলাওয়ার হোসেন বলেন, জামায়াতে ইসলামী মানবতার কল্যাণকামী একটি সংগঠন। যেখানে রাষ্ট্র কাজ করতে পারেনা, যেখানে সমাজের বিত্তশালীদের চোখ নেই সেখানে জামায়াতে ইসলামী সমাজের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগরীতে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ বস্তি গুলোতে বসবাস করে যারা চিকিৎসা সুবিধা, শিক্ষা সুবিধা, অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সমাজের এই অবহেলিত বঞ্চিত বস্তিবাসীর পাশে শিক্ষা, চিকিৎসা সহ মানবিক সাহায্য নিয়ে জামায়াতে ইসলামী এসে দাঁড়িয়েছে। তাদের শিশুদের শিক্ষার আলো দিয়ে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সারাদেশে একযোগে স্কুলগুলোতে যখন নতুন বই বিতরণ করা হচ্ছে সেই সময় সমাজের অবহেলিত, সুবিধা বঞ্চিত বস্তির ছোট্ট সোনামণিদের হাতে আমরা নতুন বই, স্কুল ড্রেস ও অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ তুলে দিতে পারছি এজন্য আমরা অত্যন্ত আনন্দিত ও আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক শত প্রতিকূলতার মধ্যেও জামায়াতে ইসলামী একদিকে যেমন দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য, গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধারের জন্য রাজপথে সংগ্রাম করে যাচ্ছে পাশাপাশি সমাজকে গড়ার জন্য মানবতার কল্যাণে ভূমিকা পালন করছে। রাজধানীর বস্তি গুলোতে অনেক প্রতিভা লুকায়িত আছে যাদের বিকশিত করতে পারলে সমাজ ও রাষ্ট্র অনেক বেশি উপকৃত হবে। অথচ এদিকে সরকারের কোনো ভ্রƒক্ষেপ নেই। শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হয়ে সুযোগ সুবিধা না পেয়ে বস্তির এই কোমলমতি শিশুরা একসময় ভয়ংকর সন্ত্রাসীতে পরিনত হচ্ছে। সরকার ও সমাজের বিত্তশালীরা যদি বস্তির এই ছোট্ট কিশোর কিশোরীদের সুন্দর ও সুস্থ রূপে গড়ে তোলার জন্য এগিয়ে আসতো, কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতো তাহলে আগামী দিনে এই বস্তিগুলোই আলোকবর্তিকা হিসেবে গড়ে উঠতো।
ছোট্ট সোনামণিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমাদেরকে নিয়ে আমরা অনেক বড় স্বপ্ন দেখি, তোমরা অনেক বড় হবে, পিতা মাতার স্বপ্ন পূরণ করবে, মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করে আগামী দিনের বাংলাদেশকে গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটাই তোমাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা। এজন্য তোমাদের যে সহযোগিতা লাগবে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে তা প্রদান করা হবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের পক্ষ থেকে বস্তিগুলোতে আমরা স্কুল প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই, খাতা, ব্যাগ, পোষাক, খাবার সহ সকল শিক্ষা উপকরণ ও সুযোগ সুবিধা প্রদান করছি। শুধুমাত্র ছোট্ট সোনামণিদের নিয়েই নয় তাদের অভিভাবকদের নিয়েও আমরা কার্যক্রম পরিচালনা করছি। পিতাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বিভিন্ন উপকরণ প্রদান করছি। মা-বোনদের সেলাই প্রশিক্ষণ প্রদান ও সেলাই মেশিন উপহার দিয়ে তাদের আমরা স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলছি। অন্ধকার বস্তিগুলোকে আলোকিত করে গড়ে তুলতে আমরা কার্যকর ভুমিকা পালন করে যাচ্ছি। তিনি জামায়াতে ইসলামীর এই সামাজিক কার্যক্রমে সহায়তার হাত প্রসারিত করতে সমাজের সামর্থ্যবানদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।