বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকার প্রহসন ও তামাশার নির্বাচনী নাটক মঞ্চস্থ করে আবারো ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে চাচ্ছে। এদেশের সকল বিরোধী দলগুলোকে নির্বাচনের বাহিরে রেখে তারা ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায়। এমতাবস্থায় দেশের জনগণকে ঘরে বসে থাকলে চলবে না। নিজেদের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে দুর্বার গণআন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়ে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় জানাতে হবে। আর এই দুর্বার গণআন্দোলনে জামায়াতে ইসলামীর প্রত্যেক ইউনিট দায়িত্বশীলকে নেতৃত্ব দিতে হবে। চলমান গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে আমরা ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের জনগণের হাতে ১০ লাখ লিফলেট তুলে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছি। এই কার্যক্রমকে তৃণমূল পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে ইউনিট দায়িত্বশীলদের কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে। এছাড়াও আগামী দিনে জামায়াতে ইসলামীর লাগাতার কর্মসূচি থাকবে। সুতরাং তৃণমূলের দায়িত্বশীল হিসেবে সামনের দিনগুলোতে আরও সজাগ থেকে, সকল দুর্বলতাকে ঝেড়ে ফেলে, ময়দানে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে সোমবার সন্ধ্যায় ভার্চ্যুয়াল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত ইউনিট দায়িত্বশীল সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির ও অ্যাডভোকেট ড. মো. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন ও ড. আব্দুল মান্নান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবু ফাহিম। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দ, থানা আমীর-সেক্রেটারি সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, দেশের মানুষকে রক্ষায় জামায়াতের নেতাকর্মীদের সময়, শ্রম, মেধা ও অর্থ-সম্পদের কুরবানী দিয়ে ভূমিকা পালন করতে হবে। আজকে বাংলাদেশে আওয়ামী সরকার জালেম সরকার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তারা চায় আমাদের বন্দি করতে, হত্যা করতে অথবা দেশ ছাড়া করতে। আমাদেরকে মহান আল্লাহর উপরে তাওয়াক্কুল করে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাজপথে এই আওয়ামী স্বৈরাচারকে মোকাবিলা করতে হবে। পবিত্র কুরআনের সূরা আনফালের ৩০নং আয়াত উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, আমাদের যার যা সামর্থ্য আছে সেই আলোকে সাহসিকতার সাথে ময়দানে ভূমিকা রাখতে হবে। আমাদের সামর্থ্য হচ্ছে আল্লাহর ভয় ও তাঁর সাহায্য, ধৈর্য্য এবং জনগণের শক্তি। সুতরাং এই সামর্থ নিয়েই ত্যাগ এবং কুরবানীর চেতনায় উজ্জিবিত হয়ে পরিস্থিতি উত্তরণে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। মনে রাখতে হবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই সর্বোত্তম কৌশলী আর আমরা যদি ময়দানে অবস্থান করতে পারি তাহলে তিনি বেঈমান ও যড়যন্ত্রকারীদের সমুচিত জবাব দিবেন ইনশাআল্লাহ।
আব্দুস সবুর ফকির বলেন, ইউনিট দায়িত্বশীলরাই মূলত সংগঠনের মূল ম্যাসেজ জনগণের কাছে পৌঁছানোর দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে গণসংযোগের অংশ হিসেবে প্রতিদিনই আপনাদের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের হাতে ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে লিফলেট পৌঁছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা যে সমাজ পরিবর্তনের জন্য কাজ করছি সেই কাজে ইউনিট সভাপতি ও সেক্রেটারীদেরকে আরও তৎপর ভূমিকা রাখতে হবে।
অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, নিজ নিজ দায়িত্বের হক আদায় করে আজকে জামায়াতের প্রত্যেককে রাজপথে ভূমিকা রাখতে হবে। আজকে আমাদের উপরে কঠিন জুলুম অত্যাচার নির্যাতন চলছে। তিন মাস জেলখেটে বের হলেও পরদিন আবার তাকে জেলে যেতে হচ্ছে। অসংখ্য নেতাকর্মীর ত্যাগ ও কুরবানীর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজপথে লড়াই সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশী সকল চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিতে হবে। রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে সকল ভয়-ভীতি ও নফসের লাগামকে আমাদের টেনে ধরতে হবে। নিজের প্রবৃত্তির কাছে জামায়াতের কোনো নেতাকর্মী পরাজিত হতে পারে না। আমরা আল্লাহর পথের সৈনিক ফলে দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে মৃত্যুর সকল প্রস্তুতি নিয়ে অর্থাৎ শহীদ হওয়ার আকাঙ্খা নিয়ে আমাদেরকে ময়দানে অবস্থান করতে হবে।