বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের চলমান আন্দোলনে আমাদের সকল ধরনের কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। দেশের এই সংকটকালে জামায়াতে ইসলামীর সকল নেতাকর্মী ও সদস্যদেরকে রাজপথে আরও কার্যকর ও সক্রিয় ভূমিকা রেখে জনতার মুক্তির আন্দোলনকে গন্তব্যে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এদেশের জনগণ একটি সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় জামায়াতে ইসলামীর দিকে চেয়ে আছে। দেশের যে কোন দুর্যোগে, আন্দোলন-সংগ্রামে আমরা ময়দানে একনিষ্ঠভাবে কাজ করেছি এটা সকল মহলের কাছে আজ প্রমাণিত। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পক্ষ হতে বিশেষ প্রাপ্তি যে, সকলে একথা বলতে বাধ্য যে, দেশের যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির সবচেয়ে অগ্রগামী এবং পরীক্ষিত সংগঠন। সুতরাং দেশের চলমান সংকট উত্তরণে আমাদেরকে আবারো ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি আজ ২৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের খিলগাঁও জোন ও বংশাল জোনের রুকন সম্মেলন প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। অনলাইন প্লাটফর্ম জুমে আয়োজিত খিলগাঁও জোনের রুকন সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুর সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও খিলগাঁও অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা আবু ফাহিমের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগরী মজলিসে শূরা সদস্য ও খিলগাঁও অঞ্চলের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আমিন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য আব্দুর রহমান, আশরাফুল আলম ইমন, আসিফ আদনান, মাওলানা মাহমুদুর রহমান সহ বিভিন্ন থানা সমূহের সেক্রেটারি ও কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দ।
অপরদিকে বংশাল জোনের পৃথক রুকন সম্মেলনে কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. দেলাওয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুর সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সংগ্রামী সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ড. আব্দুল মান্নান। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরার সদস্য শামীমুল বারীর সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বংশাল জোনের বিভিন্ন থানা সমূহের আমীর, সেক্রেটারি ও কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দ।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দেশের মানুষ আজ তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ ইসলামী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবেও মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকার দেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি ও জামায়াত ইসলামীকে নির্বাচন থেকে দূরে রেখে নামসর্বস্ব গুটি কয়েক আজ্ঞাবহ দল নিয়ে ২০১৪ ও ২০১৮ এর মত আরও একটি প্রহসনের নির্বাচন করতে চায়। জামায়াত নির্দলীয় নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকার ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে কেয়ারটেকার সরকারের দাবি আদায় করে দেশে একটি আবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের বাক-স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, জামায়াত শত জুলুম নির্যাতনের মধ্যেও ময়দানে আন্দোলন সংগ্রামে যে ভূমিকা রেখেছে তা দেশবাসী অবগত আছে। গত ১৯ নভেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের বিরুদ্ধে করা আপিল খারিজ করে ন্যাভ্রষ্ট রায় প্রদান করে জামায়াতের প্রতি যে অন্যায় ও জুলুম করেছে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য জনগণের প্রতি যে পরিমাণ অন্যায় অবিচার করেছে, দুর্নীতি ও লুটপাট করেছে তা তাদেরকে আতংকিত করে তুলেছে। তারা খুব ভালো করেই জানে যে, ক্ষমতা হারালে তাদের পরিণাম কি হবে। সরকার এত গুম, খুন, হত্যা ও নেতৃবৃন্দকে ফাঁসি দেওয়া সত্ত্বেও জামায়াতের জনপ্রিয়তা কোনো অংশেই কমাতে পারেনি। পশ্চিমা বিশ্বের কাছেও জামায়াত গণতান্ত্রিক ও মডারেট ইসলামী দল হিসাবে স্বীকৃত। সামনের দিন গুলোতে আন্দোলন সংগ্রামে আরো নতুন মাত্রা যোগ হবে। ৭ই জানুয়ারীর প্রহসনের নির্বাচন রুখে দিয়ে এদেশের মাটিতে আওয়ামী অপশক্তিকে আর কোন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না ইনশাআল্লাহ।
আব্দুস সবুর ফকির বলেন, চলমান আন্দোলন সংগ্রামে জান মালের কুরবানী করে হলেও আমাদেরকে রাজপথে থাকতে হবে। বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনের চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও আমাদের প্রস্তুতি যথাযথভাবে সমন্বয় হলেই কেবল এদেশে ইকামাতে দ্বীন বিজয়ের প্রচেষ্টা সফল হবে ইনশাআল্লাহ।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সংগ্রামে আমরা জীবনবাজি রেখে ময়দানে লড়াই করে যাচ্ছি। চলমান যেকোনো কর্মসূচি হতে জামায়াতে ইসলামীর রুকন সদস্যগণ ছুটি ছাড়া ময়দানে অনুপস্থিতি থাকা গুনাহের শামিল বলে আমরা মনে করছি। বর্তমান জগদ্দল পাথরের ন্যায় বসে থাকা এই দুর্নীতিবাজ ফ্যাসিস্ট সরকার। তারা দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার হরণ করেছে। দেশকে গভীর সংকটে নিমজ্জিত করেছে। এই অবস্থা আর চলতে দেওয়া যায় না। এক দফা আন্দোলনের মাধ্যমে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এজন্য একদফা আন্দোলনে রাজপথে সাহসিকতার সাথে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য তিনি সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।