বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের প্রতি আমরা এখন পর্যন্ত নমনীয় আচরণ প্রদর্শন করে আসছি। সংসদে একটি বিরোধী দল আছে যারা এখন অস্তিত্ব সংকটের পথে তবুও দীর্ঘদিন ধরে তারা সরকারের উচ্ছিষ্টভোগ করে বিরোধী দল হয়ে পড়ে আছে। অন্যদিকে গণমাধ্যমে যারা একপেশে সাংবাদ পরিবেশন করে তারাও আজ বিদেশিদের স্যাংশনের ভয়ে আছে। তাই আওয়ামী লীগ চাইলেও এবার আর যেন তেন নির্বাচন করে পার পাবে না। ভিসানীতির যে ভয় তা শুধু আমেরিকার পক্ষ থেকে নয় অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয়ন ইউনিয়নসহ আরও অনেক দেশ থেকেই তা আসার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। চতুর্থদিক থেকে এবার এই অবৈধ সরকারের উপরে নিষেধাজ্ঞা আসছে। এরফলে এটা নিশ্চিত যে পুলিশের আইজি থেকে শুরু করে সিপাহী পর্যন্ত সবাই এবার নানা ধরনের সংকটে পড়বে। দায়িত্বপ্রাপ্ত যেকোনো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এবার জবাব দিতে বাধ্য থাকবে। বাহিরে যতোই লাফালাফি করুক প্রশাসনের ভিতরে সকলের মাঝে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে।
আজ ৬ অক্টোবর ২০২৩, শুক্রবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত সদস্য (রুকন) প্রার্থী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য প্রদান করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আবদুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবু ফাহিম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় শত্রু জামায়াত নয়, এই দলের জন্য এখন সবচেয়ে ভয়ংকর শত্রু হচ্ছে তাদের নেত্রী শেখ হাসিনা। জোর করে, একগুয়েমী করে, কোনো রকমে আরও একটা নির্বাচন করে পার পেয়ে যাওয়া এবার অসম্ভব। শেখ হাসিনার স্বার্থ হাসিল করার জন্য দেশের কর্মকর্তাদের বিপদে ফেলছেন। কর্মকর্তাদের জীবন হুমকিতে ফেলার পাশাপাশি তাদের স্ত্রী সন্তানদেরকেও চরম সমস্যার সম্মুখিন করা হচ্ছে। কারণ তাদের সন্তানদের বিদেশে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে। এরকম একটি পরিস্থিতিতে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সচেতন থাকতে হবে। কোনো রকম বিশৃঙ্খলা বা হঠকারী সিদ্ধান্তে বাস্তবায়ন ঠিক হবে না। আওয়ামী সরকার দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার হরণ করেছে। তারা দেশকে গভীর সংকটে নিমজ্জিত করেছে। এমতাবস্থায় জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে শান্তিপূর্ণ সকল আন্দোলন ও কর্মসূচি সফল করতে দৃঢ় মনোভাব প্রদর্শন করতে হবে। আমরা সরকারকে বলতে চাই, অবিলম্বে কেয়ারটেকার সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় জনগণ রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে আপনাদের নামতে বাধ্য করবে। তিনি সকলকে সাহসিকতার সাথে ময়দানে অগ্রণী ভূমিকা পালনের উদাত্ত আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াতের রোকন প্রার্থী হিসেবে নিজেদেরকে জান্নাতের জন্য প্রস্তুত করার পাশাপাশি এদেশে ইসলামকে বিজয়ী করার জন্য আল্লাহর শর্ত গুলো পূরণে আমাকে ব্যাকুল থাকতে হবে। সংগঠনকে শক্তিশালী ও বিজয়ী আন্দোলনে পরিণত করতে হলে গণমুখি হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তুলতে হবে। সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত সহ সমাজের সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের কাছে জামায়াতের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণকে ইসলামী আন্দোলনের রাজধানীতে পরিণত করতে হবে। নিজেদের পরিশুদ্ধ করে, আরাম আয়েশসহ জান-মালের কুরবানীর মাধ্যমে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীনকে বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
আব্দুস সবুর ফকির বলেন, একজন ঈমানদার হিসেবে দুনিয়ার সুযোগ সুবিধা আমাদের জন্য অগ্রগণ্য না। আমাদের মূল টার্গেট হবে আখেরাতে চূড়ান্ত সফলতা। জামায়াতের রোকন হওয়ার জন্য আপনাকে প্রতিদিনই কুরআন হাদিস অধ্যয়ন করতে হবে। আল্লাহর দেওয়া বিধানের সাথে আপনার সম্পর্ক যতো মজবুত হবে ততো আপনার দ্বারা ইকামতে দ্বীন বিজয়ের কাজ সহজ হয়ে উঠবে।