আজ ০৯ অক্টোবর সোমবার ফিলিস্তিনের নির্যাতিত-নিপীড়িত মুসলমানদের ওপর অবৈধ ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর হামলা ও আগ্রাসনের প্রতিবাদে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে বার বার পুলিশের ন্যাক্কারজনক হামলা এবং সম্পুর্ন আন্যায়ভাবে জামায়াত নেতা কামাল হোসাইনসহ ২৫ জন নেতা-কর্মী ও নিরীহ পথচারিকে আটকের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেন।
বিবৃতিতে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আজ ৯ অক্টোবর দুপুরে ফিলিস্তিনের গাজায় অবৈধ দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলায় শত শত ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত ও হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নাগরিক আহত হওয়ার নৃশংস এবং নির্মম ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানীর মৌচাকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল শুরু করার পুর্বেই পুলিশ মৌচাকে অবস্থানরত জামায়াত নেতাকর্মীসহ সাধারণ পথচারীদের উপর হামলা ও গণগ্রেফতার শুরু করে এক ভীতিকর পরিস্থিতির অবতারণা ঘটায়। এমতাবস্থায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ বাস্তবায়নের লক্ষে মিছিলের স্থান পরিবর্তন করে রাজধানীর মালিবাগ রেলগেট থেকে মিছিল শুরু করলে সেখানেও পুলিশ হামলা করে। জামায়াত নেতাকর্মীরা বার বার পুলিশী হামলাকে উপেক্ষা করে চরম ধৈর্যের পরীক্ষা দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বাস্তবায়ন করে। এসময় বিক্ষোভ শেষে ফেরার পথে কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি কামাল হোসাইনসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আমি এই ন্যাক্কারজনক হামলা ও গণগ্রেফতারের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত জামায়াত নেতা কামাল হোসাইনসহ সকল নেতাকর্মী ও নিরীহ পথচারীদের মুক্তির দাবী জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের নির্যাতিত-নিপীড়িত মুসলমানদের ওপর ইসরাইলের আগ্রাসী হামলা বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর কলিজায় আঘাত হেনেছে। ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্বের দেশে দেশে শান্তিকামী মানুষেরা প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে। অথচ বাংলাদেশে ফিলিস্তিনের মজলুম মানুষের পক্ষে সমর্থনের বিক্ষোভে পুলিশ হামলা করে, সাধারণ মুসলমানদের গ্রেফতার করে চরম ধৃষ্টতার পরিচয় দিয়েছে। সুদীর্ঘ ৭৫ বছর যাবত ইসরাইলিরা ফিলিস্তিনে বর্বর গণহত্যা ও সন্ত্রাস চালাচ্ছে। তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের উচিত ছিল আনুষ্ঠানিকভাবে এই নির্মম ঘটনার জোরালো প্রতিবাদ জানানো কিন্তু সরকার তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি নিজের সহমর্মিতার কথা জানালেও ফিলিস্তিনের পক্ষে বাংলাদেশের শান্তিকামী জনতার বিক্ষোভে পুলিশ দিয়ে ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়ে সাধারণ জনগণকে গ্রেফতার করেছে। যা সম্পূর্ণ বে-আইনী, ধর্মীয় ও সাংবিধানিক অধিকার এবং মানবাধিকারের চরম পরিপন্থী। এ ঘৃণ্য অপরাধের নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতার ও নির্যাতন চালিয়ে জনগণের কন্ঠরোধ করা যাবেনা। ফিলিস্তিনের নির্যাতিত-নিপীড়িত মুসলমানদের মুক্তির পাশাপাশি এদেশের জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নিপীড়ন যত বৃদ্ধি পাবে এদেশের জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনও তত বেগবান হবে ইনশাআল্লাহ। পরিশেষে আমি ফিলিস্তিনে যারা নিহত হয়েছেন তাদের শাহাদাত কবুল এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতার জন্য আমি মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করছি। সেইসাথে ফিলিস্তিনি সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।