পবিত্র সিরাতুন্নবী (সা) উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের শ্যামপুর-কদমতলী জোনের উদ্যোগে স্থানীয় একটি মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকিরের সভাপতিত্বে উক্ত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন শ্যামপুর কদমতলী জোনের সহকারী পরিচালক মাওঃ মুহসিন উদ্দিন, জোন টিম সদস্য খন্দকার এমদাদুল হক, কদমতলি দক্ষিণ থানা আমীর ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান, কদমতলি মধ্য থানা সেক্রেটারি আব্দুর রহমান, শ্যামপুর পশ্চিম থানা সেক্রেটারি আসাদুল্লাহ শেখসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, রাসুল (সা.) মানবতার শিক্ষক হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরিত হয়েছিলেন। এজন্য মহাগ্রন্থ আল কুরআনে তাঁকে সমগ্র মানব জাতির জন্য একমাত্র অনুকরণীয় আদর্শ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ রাসূলের রেখে যাওয়া আদর্শ থেকে মুসলমানরা বিমুখ হওয়ায় বর্তমান বিশ্বে অশান্তির আগুন জ্বলছে। অন্যায়, অবিচার আর বর্বরতার সীমা আইয়ামে জাহেলিয়াতের সময়কেও ছাড়িয়ে গেছে। তাই অশান্ত এই পৃথিবীতে শান্তিপ্রতিষ্ঠায় মুহাম্মদ (সাঃ) এর মহান আদর্শ প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যাবস্থায় রাসুলের আদর্শকে বাদ দিয়ে সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে ফলে শিক্ষার্থীরা নিজেদের মানবতার বন্ধু হিসেবে গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি শিক্ষা ব্যবস্থায় রাসুলের সীরাত ও আদর্শকে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার আহবান জানান।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে যারা রাসূলের রেখে যাওয়া আদর্শ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে যাচ্ছেন তাদের পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয়। কাফের ও মুসলিম নামধারী কিছু মুনাফিকদের ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত রয়েছে। এদেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য বাতিলের রোষানলে পড়ে জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী সহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে শাহাদাতবরণ করতে হয়েছে। বিশ্ব বরেণ্য মুফাসসীরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী দীর্ঘদিন কারাগারে বন্দি থেকে গতমাসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহাদাত বরণ করেন। এখনো আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং দেশের বহু আলেম কারাগারে বন্দী রয়েছেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ সহ সকল আলেম-ওলামাদের মুক্তির দাবী জানান। একইসাথে সকল জুলুম-নির্যাতন ও ষড়যন্ত্র মুকাবেলা করে এদেশে রাসুলের আদর্শকে প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভুমিকা পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে আব্দুস সবুর ফকির বলেন, বিশ্ব নবীর জীবনের সকল বিষয় অতুলনীয় ও ভারসাম্যপূর্ণ। আর সত্যিকার জ্ঞান হলো অহীর জ্ঞান, এটি ছাড়া সকল জ্ঞানই অসম্পূর্ণ। তাই ক্ষতবিক্ষত এ সমাজ থেকে মুক্তি পেতে রাসুলের রেখে যাওয়া জ্ঞান ও আদর্শকে গ্রহণ করতে হবে। প্রচলিত এ জুলুমতন্ত্রের পর বিশ্বনবীর আদর্শেই গোটা দুনিয়া হেরার আলোয় জেগে উঠবে এমন প্রত্যাশা জানিয়ে রাসুল সা. এর আদর্শে সভ্যতা বিনির্মাণ ও তাওহীদ ভিত্তিক সমাজ গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, রাসুল (সাঃ) মানুষের অধিকার রক্ষায় অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছেন। বর্তমান ক্ষয়িষ্ণু সভ্যতার সামাজিক অবক্ষয় ও পতন রোধ করে মানবতাবোধ জাগ্রত করার জন্য, মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আমাদের রাসুল (সাঃ) শিক্ষা ও আদর্শকে সমাজে বাস্তবায়ন করতে হবে।