বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, জামায়াত একটি গণমুখী রাজনৈতিক দল। বর্তমান বাংলাদেশের সবচেয়ে সুগঠিত ও সুশৃঙ্খল শান্তিপ্রিয় রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ইতোমধ্যেই সর্বমহলে প্রশংসিত। জামায়াতে ইসলামী এদেশের জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠাসহ জনগণের সকল অধিকার আদায়ের আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে আছে। আর এভাবেই রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমেই জনগণের অধিকার আদায় করবে জামায়াত।
তিনি আজ শনিবার ধানমণ্ডি উত্তর থানা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য ও ধানমণ্ডি উত্তর থানা আমীর মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জোন টিম সদস্য এডভোকেট জসীম উদ্দিন তালুকদার, মোস্তাফিজুর রহমান সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, সরকার ভীত হয়ে জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমান-সহ শীর্ষ জাতীয় নেতৃবৃন্দকে জনগণের ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলন সংগ্রামে বাধা দিতেই কারাগারে বন্দী করে রেখেছে। বার বার জামিন হওয়ার পরেও নেতৃবৃন্দকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচার ব্যবস্থাকেও কোনো তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। অবিলম্বে আমরা এসব নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবি করছি। সম্প্রতি ঢাকাসহ সারাদেশে জামায়াতের মিছিল সমাবেশ ও রাজনৈতিক যেকোনো নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনে বাঁধা প্রদান, নেতা-কর্মীদের গণগ্রেফতার করে পুলিশ। অন্যদিকে পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের বর্বরোচিত হামলা নির্যাতন, বয়বৃদ্ধ নাগরিকদের সাথে ন্যাক্কারজনক সব ঘটনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের উপর জুলুম নির্যাতন চালানো তাদের কাজ নয়। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সহ সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান সমূহকে অমানবিক আচরণ পরিহার করে সংবিধানের আলোকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানাচ্ছি।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, দেশ আজ কঠিন সময় অতিক্রম করছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিসহ দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতিতে মানুষ আজ চরম অসহায় অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, মানবিক অস্থিরতা ও পাশবিকতা আজ গোটা সমাজ ব্যবস্থাকে বিষিয়ে তুলেছে। অসংখ্য পরিবারের মা-বাবা আজ নির্ঘুম অবস্থায় দিন-রাত অতিবাহিত করছেন। প্রিয় সন্তানকে গুম করা হয়েছে, বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে, শুধুমাত্র বিরোধী মতের কারণে হাজার হাজার মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করার মতো ন্যাক্কারজনক বিষয় সবখানেই পরিলক্ষিত হচ্ছে। মাজলুম সেইসব পরিবার সহ দেশের জনগণের মুক্তির জন্য জামায়াতের নেতাকর্মীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। নির্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। জামায়াত সবসময় জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে। জেল-জুলুম, মামলা-হামলা, নির্যাতন ও হত্যার ভয় দেখিয়ে জামায়াতকে দমিয়ে রাখা যাবে না। একইসাথে জনগণের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকেও বন্ধ করা যাবে না। তিনি নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই জুলুমবাজ সরকারকে বিদায় জানানোর জন্য দেশের জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, দেশের জাতীয় নেতৃত্বে একদল যোগ্য মানুষ আজ সবচেয়ে বড় বেশি প্রয়োজন। জাতির এই দুর্দিনে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে সুসংহত করতে সৎ দক্ষ ও দেশপ্রেমিক ব্যক্তিদের সম্মুখে এগিয়ে আসতে হবে। সাধারণ মানুষের কল্যাণে জামায়াতের প্রত্যেক দায়িত্বশীলকে সবার আগে এগিয়ে যেতে হবে। জামায়াতের একজন দায়িত্বশীল হিসেবে আমরা ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির জন্য আমাদের সকল কাজ আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছি। তিনি এদেশে একটি সফল ইসলামী বিপ্লবের জন্য আন্দোলনের সকল দায়িত্বশীল ও কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।