বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. মু. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, শিক্ষাব্যবস্থায় নৈতিক প্রশিক্ষণ বিমুখতার কারণে আজ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ গুলো মাদকের হাটে পরিণত হয়েছে। দেশের জাতীয় পত্রিকাগুলো এ ব্যাপারে আমাদেরকে বার বার সতর্ক করছে। চিন্তাশীল মানুষ মনে করে, একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই কুচক্রী মহল আমাদের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক তুলে দিয়ে পুরো জাতির মেরুদন্ড ধ্বংস করে দিতে চায়। ইসলামী ছাত্রশিবির তরুণ মেধাবী ছাত্রদের মধ্যে নৈতিকতার প্রশিক্ষণ দিয়ে সেই সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আজকে জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো রাজনৈতিক লেজুরবৃত্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশের পথকে একেবারেই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গুলোতে মেধাবীদের পরিবর্তে দলীয় পরিচয়ধারী অযোগ্যদের নিয়োগ দিয়ে বাংলাদেশকে একটি মেধাহীন রাষ্ট্রে পরিণত করার চক্রান্ত চলছে। এ ব্যাপারে শিক্ষার্থী সহ সকলকে সচেতন হতে হবে।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির পটুয়াখালী জেলা শাখার উদ্যোগে ২০২৩ সালের এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ ৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। জেলা সভাপতি মাহাদী হাসান নাহিদের সভাপত্বিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাউফল উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলাম, শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় দাওয়াহ সম্পাদক মুনতাসির মুজাহিদ, পটুয়াখালী শহরের সাবেক সভাপতি কবির হোসাইন, বাউফল উপজেলা জামায়াতের বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা মোহাম্মাদ উল্লাহ। সংবর্ধনায় আরো উপস্থিত ছিলেন, বাউফল উপজেলা পশ্চিমের সভাপতি, হফেজ আরিফুর রহমান, সেক্রেটারি লিমন হোসাইন, উত্তরের সভাপতি কামরুল ইসলাম, সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ, দক্ষিণের সভাপতি জোবায়ের হোসাইন, সেক্রেটারি আবু মূসা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, বাউফল উপজেলা পূর্ব শাখা সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আল্লাহর নির্দেশ মেনে যখন পড়াশোনা করা হয় তখন তা ইবাদতে পরিণত হয়। কারণ আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির উদ্দেশ্যে যে কোরআন নাজিল করেছেন তার প্রথম নির্দেশ ছিল পড়। যে পড়াশোনার সাথে স্রষ্টার নির্দেশ মানা না মানার সম্পর্ক থাকে না তা প্রকৃতপক্ষে কোনো শিক্ষা হতে পারে না। আর সে শিক্ষা একজন মানুষকে প্রকৃত মানুষে পরিণত করতেও পারে না। ফলশ্রুতিতে আজ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে রেজাল্ট যেমন ভালো হচ্ছে, ঠিক সেই অনুযায়ী মানুষ হওয়ার পরিবর্তে সমাজে অমানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা যোগ্যতার সাথে নৈতিকতার সমন্বয় সাধন করতে চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমি পটুয়াখালীর ছাত্র-ছাত্রী সহ সকল মানুষের কাছে থাকার চেষ্টা করি। বিশেষত আমি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় মানুষের কল্যাণে নানামুখি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। আমরা সমৃদ্ধ বাউফল উপজেলা গড়তে কাঙ্খিত নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সেখানে আজকের এই মেধাবী ছাত্রদেরও আমরা সম্পৃক্ত করতে চাই। তোমরা দুনিয়ার প্রাথমিক ধাপে এ প্লাস পেয়ে সফল হয়েছো। এখন তোমাদেরকে উচ্চ শিক্ষার জন্য আরো বড় প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে হবে। আমরা তোমাদের সাথে থেকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখব। একইসাথে পরকালীন জগতেও চূড়ান্ত সফলতার জন্য নিজেদেরকে জান্নাতের উপযোগী হিসেবে তৈরি করতে হবে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বাউফল উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতাধিক কৃতি ছাত্রদের মাঝে ক্রেস্ট, ফুল ও বিভিন্ন বই উপহার দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্য হতে অনুভূতি প্রকাশ করেন বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তাওসিন আলম নাফি, তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার আব্দুর রহমান আদনান, কালাইয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শুভ হালদার, দেশ দেবনাথ প্রমুখ।