বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের ডেমরা পশ্চিম থানার উদ্যোগে আজ বুধবার সকালে শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (রাহি:) এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ কামাল হোসাইন। মহানগরীর মজলিসে শুরা সদস্য ও থানা আমীর বায়েজিদ হাসানের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন থানা নায়েবে আমীর মাহমুদ হোসেন, থানা ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি বেলাল হোসেন সহ থানার কর্মপরিষদ সদস্য বৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জাতীয় সংসদে পরপর দুই বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরেও ক্ষমতা ও শক্তি দিয়ে নয় বরং উত্তম ব্যবহার, কথা ও কাজ দিয়ে জনগণকে যে মন্ত্রমুগ্ধ করা যায় তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (রাহি)। জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনে তিনি সর্বমহলে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছিলেন। এমনকি মাওলানা সাঈদী (রাহি) তার নিজ এলাকায় অমুসলিম জনগণের সমর্থন অর্জনে বিষ্ময়কর সাফল্য অর্জন করেছিলেন। অমুসলিমগণের নিকট তার অবস্থান ছিল মাতৃক্রোড়ে থাকার মতো নিরাপদ। জনগণের প্রতি তার দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহীতা সম্পর্কে জাতীয় সংসদে তাঁর বক্তব্য ছিল অভিভাবকসুলভ। সেই ঐতিহাসিক বক্তব্য সমূহ এখনও কালের স্বাক্ষী হয়ে আছে। ইসলামের প্রচার-প্রসারে তার ভূমিকা ছিলো অনস্বিকার্য। তিনি ইসলামের বাণীকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করে গণমানুষের নিকট ইসলামকে একটি জীবনাদর্শ হিসেবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছিলেন। ইসলামকে বিজয়ী করার জন্য যে গণজাগরণ দরকার তার বুনিয়াদ তিনি রচনা করে গিয়েছেন। বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় কুসংস্কার এর বিরুদ্ধে মানুষকে ব্যাপকভাবে সচেতন করতে পেরেছেন। ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যকে মানুষের কাছে জনপ্রিয় করতে পেরেছেন। আমাদেরকে নিজ নিজ জায়গা থেকে শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (রাহি:) এর জীবন ও কর্মকে সকলের কাছে তুলে ধরতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিমন্ডলে জামায়াতে ইসলামীর উপর সীমাহীন প্রোপাগাণ্ডা, জুলুম ও নির্যাতন সত্ত্বেও আল্লামা সাঈদী সহ জামায়াতের সকল শীর্ষ নেতৃবৃন্দ দেশের জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। দেশের জনগণ মনে করে, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জামায়াতে ইসলামীই অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করছে। অপরদিকে দেশে রাতের ভোটে অবৈধভাবে ক্ষমতা গ্রহণকারী সরকার জনগণের সকল অধিকার হরণ করেছে। তাদের ব্যর্থতায় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, ভয়াবহ বিদ্যুৎ পরিস্থিতি, ব্যাংকের টাকা বিদেশে পাচার সহ নানা কারণে জনগণ সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে। দেশে প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় এই সরকার বহিঃবিশ্বেও গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে বিভিন্ন স্যাংসনের মুখে পড়েছে। জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশে যেন কোনো আন্দোলন গড়ে উঠতে না পারে, সেই ভয়ে ভীত হয়ে সরকার জামায়াতকে কোনো সভা সমাবেশ করতে দিচ্ছে না। জনগণের কণ্ঠকে রুদ্ধ করতে অন্যায়ভাবে নেতাকর্মীদের বাসা বাড়ি, কর্মক্ষেত্র সহ নানা স্থানে পুলিশ গিয়ে গ্রেফতার নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মুক্তির জন্য এই সরকারের পতন ও কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করতে হবে।