আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (রাহি:) এর জানাজার নামাজ ঢাকায় করতে না দেওয়া, সারাদেশে গায়েবানা জানাজার নামাজে হামলা গ্রেফতার এবং কক্সবাজারের চকরিয়ায় জামায়াত কর্মী ফোরকান উদ্দিনকে হত্যার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর কাওরান বাজার থেকে শুরু হয়ে পান্থপথ হয়ে গ্রীনরোডে প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিল ও সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান। কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন, মাওলানা আবু সাদিক, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, কামরুল আহসান, আমিনুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরী পুর্বের সভাপতি তাকরিম হাসান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, ঢাকা কলেজ সভাপতি সহ জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন থানা আমীর-সেক্রেটারী সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রহ. একটি বিপ্লবের নাম, একটি আন্দোলন, একটি ইতিহাস। ইসলামের প্রচার প্রসার, দেশের সত্যিকার স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এবং মজলুম মানুষের মুক্তির লক্ষ্যে তিনি আমৃত্যু লড়াই সংগ্রাম করেছেন। দুনিয়ার লালসা, বাতিলের রক্তচক্ষু, সরকারের জেল জুলুম নির্যাতন এমনকি ফাঁসির মঞ্চ তাকে অভিষ্ঠ লক্ষ্য থেকে চুল পরিমাণ সরাতে পারেনি। দীর্ঘ ১৩ বছর জেলখানার বন্দী রাখার পরে বিনা চিকিৎসায় তাকে পরিকল্পিত ভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। দুই বারের সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য আল্লামা সাঈদীর চিকিৎসার জন্য কোন মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়নি, হার্ট অ্যাটাকের রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা পিসিআইও করা হয়নি। এমনকি তার পরিবারের সদস্যদেরও দেখতে দেওয়া হয়নি।
ড. হেলাল বলেন, শহীদ দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী র: এর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ শতাব্দীর জঘন্যতম মিথ্যাচার। সাজানো নাটকে তাঁকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অথচ আল্লামার মৃত্যুর পরও সরকার তার লাশ নিয়ে চরম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির অবতারণা করে। পরিবারের হাতে লাশ হস্তান্তর না করে, পরিবারের সদস্যদের লাশ দেখতে না দিয়ে ও পরিবারের ইচ্ছানুযায়ী ঢাকায় কোন জানাজা না করতে দিয়েই পিরোজপুর কফিন নিয়ে যায়। সেখানেও বিদেশে অবস্থানরত তার সন্তানদের জন্য অপেক্ষা না করেই তাড়াতাড়ি জানাজা করে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করে। অপরদিকে সারাদেশে আল্লামার গায়েবানা জানাজায় হামলা করে অসংখ্য মানুষকে গ্রেফতার করে এবং গুলি চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে আহত করার পাশাপাশি জামায়াত কর্মী ফোরকান উদ্দিনকে হত্যা করে। আমরা সরকারের এই অন্যায় আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা মনে করি শহীদ আল্লামা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীর জানাজার নামাজ রাজধানীতে পড়তে না দেওয়ার ক্ষোভ সরকার পতনের আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লুটেরা গোষ্ঠী জনগণকে জিম্মি করে ফায়দা লুটে নিচ্ছে। ভোটডাকাতি, দখলদারী, গুম, খুন, দুঃশাসন এবং বিদ্যুৎ, গ্যাস সহ দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে দেশ আজ গভীর সংকটে পড়েছে। দেশের মানুষ এই ব্যর্থ সরকারের কবল থেকে মুক্তি চাই। জনগণের মুক্তির জন্য এই ফ্যাসিস্ট অগণতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ সরকারকে অতি দ্রুত বিদায় করা ছাড়া জনগণের প্রকৃত মুক্তি মিলবে না। আওয়ামী সরকার জুলুম-নির্যাতনের মাধ্যমে জনগণকে জিম্মি করে আবারো জোরপূর্বক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলে রাখতে চাই। এ কারণে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, এটিএম আজহারুল ইসলাম, নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান সহ অসংখ্য দেশ বরেণ্য আলেম-ওলামাদেরকে সরকার দীর্ঘদিন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কারাগারে বন্দী করে রেখেছে। এই মুহূর্তে দেশপ্রেমিক জনগণকে আর নিরব বসে থাকলে চলবে না। দেশের স্বার্থে রাজপথে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে কেয়ার টেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি এই অবৈধ সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে আন্দোলন সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান।