দেশে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও ওলামায়ে কেরামের মুক্তি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে আগামী ১লা আগস্ট রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি মিলনায়তনে আইনজীবী ও শিক্ষক নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ডক্টর মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট সেক্রেটারি এডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান, শিক্ষক নেতা নাজির আহমেদ, অ্যাডভোকেট লুৎফর রহমান, অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম খন্দকার, এডভোকেট সাজেদুর রহমান, অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক, অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান আনাস সহ বিভিন্ন পর্যায়ের আইনজীবী ও শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, দেশে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত নেই বলেই জনগণের দূর্ভোগ আজ চরম আকার ধারণ করেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধগতিতে জনগণ দিশেহারা। বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি দেশের বরেণ্য ওলামায়ে কেরামগণ কারাগারে বন্দি। মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী, মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি আমীর হামজা সহ সকল ওলামায়ে কেরামগণকে দেশের তৌহিদী জনতা মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেছে। আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আওয়ামী এই স্বৈরাচারের চূড়ান্ত পতন ঘটিয়ে বিশ্ববরেণ্য সব আলেমদেরকে মুক্ত করা হবে। এর জন্যই আগামী ১লা আগস্ট রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে জামায়াত শান্তিপূর্ণ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। প্রশাসনকে অনুরোধ জানায় জামায়াতের মতো সুশৃঙ্খল শান্তিকামী রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মসূচির অনুমতি দিতে কোন অজুহাত খুঁজবেন না। কোনো অজুহাত দিয়ে টালবাহানা করে আর জনগণকে দাবিয়ে রাখা যাবে না। জনগণ দেখছে এক একটা নতুন নতুন পয়েন্ট অজুহাত ব্যক্ত করে জনগণের আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে। জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রশাসনকে স্মরণ করে দিতে চাই, আপনারা যদি রাষ্ট্রের বা প্রজাতন্ত্রের সত্যিকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হয়ে থাকেন, তাহলে জনগণের সেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করুন। কারণ বাংলাদেশের জনগণের করের টাকায় আপনার বেতন হয়ে থাকে। তাই জনগণের অধিকার আদায়ের প্রশ্নে এই শান্তিপূর্ণ সমাবেশ নির্বিঘ্নে সফল করতে প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করবেন এটাই জনতার ন্যায্য দাবি। আজকে আইনজীবী নেতৃবৃন্দ এবং বিশিষ্ট সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ প্রতিনিধিগণ আপনারা দেশের এই সংকট পরিস্থিতি উত্তরণে সার্বিক সহযোগিতার কথা ব্যক্ত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, জনগণের চলমান এই আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে দেশে সত্যিকার শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হবে। কতিপয় কর্তা ব্যক্তির বক্তব্যে জনগণ শুনেছে। আপনারা বলেছেন অমুক মাসে কোনো কিছু করতে দেওয়া হবে না, কিছু বলতে দেওয়া হবে না। মনে রাখবেন মাস কারো পৈত্রিক সম্পত্তি নয়, ঐ মাসের দোহায় দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করা থেকে বিরত থাকুন। ঐ মাসের অজুহাত সামনে এনে জনগণকে ব্লাকমেইল করে আটকানোর চেষ্টা করলে সেটা বরং এই সরকারের বা প্রশাসনের জন্য হিতেবিপরীত হবে। জনগণ ঐ রকম দিন তারিখ মাসকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করতে বাধ্য হবে। জামায়াতের এই সমাবেশ কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য, এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য, ফ্যাসিবাদের কবল থেকে জনগণের মুক্তির জন্য। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে দেশের মানুষ আজ দিশেহারা। দেশের এই পরিস্থিতিতে আমরা বসে থাকতে পারি না। জামায়াতে ইসলামী একটি নিপিড়িত মজলুম সংগঠন। দেশের মানুষ ও মানবতা রক্ষায় আমরা দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি ১লা আগস্ট রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটের সমাবেশে দলে দলে যোগদান করার জন্য রাজধানীবাসীর প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।