২৬ জুন আন্তর্জাতিক মাদকবিরোধী দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকাস্থ বাউফলবাসীদের নিয়ে “মাদককে না বলুন, সুস্থ ও সুন্দর জীবন গড়ে তুলুন স্লোগানে রাজধানীতে মাদক বিরোধী জন সচেতনতামূলক কর্মসূচি উদ্বোধন ও মাদক বিরোধী লিফলেট বিতরণ করেন বাউফলের গণমানুষের নেতা, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদ্য বিদায়ী কেন্দ্রীয় দাওয়াহ সম্পাদক ছাত্রনেতা মুজাহিদুল ইসলাম, যুবনেতা মো. জুয়েল, আইনজীবী মো. পলাশ হোসেন, বিশিষ্ট আলেম আব্দুল্লাহ শিবলীসহ ঢাকাস্থ বাউফল উপজেলার সচেতন কয়েক শতাধিক বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ।
লিফলেট বিতরণকালে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বাউফল ফাউন্ডেশন সমাজের কল্যাণে ও মানবতার সেবায় নিবেদিত একটি প্রতিষ্ঠান। আমরা আমাদের প্রিয় বাউফল উপজেলাকে সোনার বাউফলে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যে আমরা জনকল্যাণমুখী সকল কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছি। এক্ষেত্রে আমরা সাধারণ মানুষের যে সহযোগিতা পাচ্ছি তার জন্য কৃতজ্ঞ। বাউফল উপজেলার সাড়ে তিন লাখ জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে আমরা আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। আজকে আপনাদের হাতে মাদকবিরোধী সচেতনতামূলক একটা লিফলেট পৌঁছে দিয়েছি। মাদকের জন্য যুব সমাজ আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। বাউফলের সাংবাদিকসহ অনেকেই মাদকের ভয়াবহ চিত্র আমার সামনে তুলে ধরেছেন। মাদকের বিরুদ্ধে গণ সচেতনতা সৃষ্টির জন্য বাউফলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন। এ থেকে জনগণকে রক্ষা করা খুব জরুরি। আমাদের প্রিয় বাউফলকে রক্ষা করার জন্য যারা এগিয়ে এসেছেন আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমার বাউফলের মেধাবী ছাত্র, তরুণ ও যুবকদের মাদকের হাত থেকে রক্ষার জন্য যদি আমাদের জীবনের ঝুঁকিও নিতে হয় আমরা সেই ঝুঁকি নিতেও প্রস্তুত রয়েছি। এজন্য কোনো প্রকার চাপ ও অপশক্তির কাছে আমরা নতিস্বীকার করবো না।
ড. মাসুদ বলেন, প্রত্যাশিত বাউফল ও কাঙ্খিত নেতৃত্ব গড়ার প্রত্যয়ে আমরা আজকের কর্মসূচি পালন করছি। তরুণ যুবকদের কুরআন উপহার প্রদান করে আমরা সমাজকে সভ্য করে গড়ে তুলতে চাই। মানব সভ্যতার জন্য হুমকি মাদককে মানবতার মুক্তির দিশারি ইসলাম হারাম করেছে। প্রশাসনের কতিপয় লোককে বাদ দিলে মোটামুটি সচেতন কর্মকর্তাবৃন্দ মাদকের সয়লাব থেকে সমাজকে রক্ষা করার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি যুব সমাজের হাতে মাদক পৌঁছিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসনের কিছু অসাধু ব্যক্তি জড়িত রয়েছেন। তারা ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে যুব সমাজ ধ্বংসের এ অন্যায় অপকর্ম করছেন। এর মাঝেও প্রশাসনের যোগ্য কর্মকর্তাগণ মাদক নির্মূলে আপ্রাণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদেরকে বাউফল ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই। বাউফলবাসী মনে করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও কার্যকর প্রদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। তবে প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গের একটা অভিযোগ রয়েছে যে, সরকার দলীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের ছত্রছায়ায় মাদকের এই সিন্ডিকেট পরিচালিত হওয়ার কারণে সব সময়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায় না। তাই আমি মনে করি, মাদকের এই ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে হলে রাজনৈতিক ঐক্যমত প্রয়োজন।
ড. মাসুদ আরও বলেন, আমরা কেবল ভোটের জন্য রাজনীতি করি না, বাউফলে কাউকে আমরা প্রতিপক্ষ মনে করি না। এখানে বসবাসকারী সকল মানুষই আমার ভাই, আমার প্রিয়ভাজন। এই পরিস্থিতিতে আমরা সচেতন বাউফলবাসী হিসেবে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারি না। মাদকের ভয়াবহতা থেকে বাউফলের জনগণকে রক্ষা করতে আমরা সকল প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ। আমরা আজকে যে লিফলেট বিতরণ করছি এখানে পুরো বাউফলের চিত্র তুলে ধরেছি। কোথায় কোথায় মাদক বিক্রি হয়, হেরোইন গাঁজা কারা সরবরাহ করে তার তথ্য দিয়েছি। এটার মধ্য দিয়ে সমাজের সচেতন মহল বুঝতে পারবেন তার সন্তান কোথায় গিয়ে নষ্ট হচ্ছে, পথহারা ও মাদকাসক্ত হচ্ছে। আজকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে ইসলামের অনুশাসন যথাযথ শেখানো হচ্ছে না। যার ফলে আমাদের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো এক একটা মাদকের হাটে পরিণত হয়েছে। তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে ইসলামের অনুশাসন ও নৈতিক শিক্ষা প্রদান বাধ্যতামূলক করার আবেদন জানান।