বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জাতীয় জীবনে নেতৃত্বের ঘাটতি পূরণেই বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। দেশের কল্যাণে সৎ, দক্ষ ও খোদাভীরু নেতৃত্বের চাহিদা পূরণে ছাত্রশিবির অনবদ্য ভূমিকা রেখে চলেছে। সকল অবস্থানে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশমাতৃকার সেবায় অত্যন্ত সততার পরিচয় দিতে আমরা সক্ষম হয়েছি। ছাত্রশিবিরের সদ্য বিদায়ী কার্যকরী পরিষদের সদস্যবৃন্দ যারা রয়েছেন তারা প্রত্যেকেই দেশ ও জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের যোগ্যতা রাখেন। জামায়াত এদেশে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এই সংগঠনের নেতৃত্বের বড় একটি অংশ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির থেকে আসে। আজকে ছাত্রজীবন শেষ করে যারা মূল আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন তাদেরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।
তিনি ২৩ জুন শুক্রবার রাতে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ছাত্র আন্দোলনের সদ্য বিদায়ী ভাইদের নিয়ে প্রীতি সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় প্রীতি সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি দেলওয়ার হোসাইন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফেজ রাশেদুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ছাত্রশিবির এমন একটি ছাত্র সংগঠন যারা তাদের কর্মীদেরকে সমাজের সকল পঙ্কিলতা ও কলূষতা থেকে মুক্ত করে তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। যা দলমত ছাপিয়ে ভিন্ন আদর্শের ব্যক্তিদের কাছেও প্রশংশিত হয়েছে। সেই ছাত্র সংগঠন থেকে বিদায় নিয়ে বৃহৎ অঙ্গনে সম্পৃক্ত হয়ে সমাজের পরিবর্তনে নিজেদের সর্বোচ্চ মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে দেশ ও মানবতার কল্যাণে পাশে থাকবেন বলে আমরা প্রত্যাশা করি। ছাত্রশিবির ছিলো আমাদের সবার কাছে একটা স্বপ্নের স্থান। সেই স্বপ্নকে সাথে নিয়ে আজ বাস্তব সমাজে আপনাদের পদচারণা শুরু হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি ছাত্রশিবির আমাদেরকে আল্লাহর সন্তুষ্টির উপযোগী করে গড়ে তুলেছে। সমাজের সকল প্রেক্ষাপটে কাজ করার মতো দক্ষ করে এই সংগঠন আমাদেরকে প্রস্তুত করেছে। সুতরাং দেশ ও জাতীর কল্যাণে আত্মনিবেদিত এবং যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও সত্য ও ন্যায়ের প্রতি অবিচল থেকে দ্বীন কায়েমের কাজে সদ্য বিদায়ী নেতৃত্বকে আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ছাত্র আন্দোলনের দীর্ঘ সময়ে আপনারা যে দায়িত্ব পালন করেছেন তা জীবন পরিচালনার সকল ক্ষেত্রে আপনাদেরকে আরও দৃঢ় ও অনুপ্রাণিত করবে। আজকে আপনারা ছাত্রজীবনের প্লাটফর্ম থেকে জীবনের নতুন এক প্লাটফর্মে যুক্ত হয়েছেন। এই প্রবাহমান জীবনধারার মাঝপথে আমরা যদি কোনো প্ররোচনায় পথ ভুলে যায় অথবা ব্যর্থ হয়ে যায়, তাহলে আমার আগের সকল অর্জনই বৃথা হয়ে যাবে। এজন্য সদ্য বিদায়ী ছাত্র ভাইদেরকে সতর্ক হয়ে পথ চলতে হবে। বাইয়াত বা শপথ ইসলামী আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। ইসলামী আন্দোলনের সফলতার জন্য বাইয়াতের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। এজন্য শপথের আলোকে আন্দোলনের সক্রিয় জনশক্তি হিসেবে বাকি জীবন অতিবাহিত করা আমাদের ঈমানী দাবি।
দেলাওয়ার হোসেন বলেন, ছাত্রজীবনে আমাদের পড়ালেখা এবং সংগঠনের নির্ধারিত কর্মসূচি পালনই মূখ্য ছিলো। এখন ছাত্রজীবন শেষ করে আপনারা নতুন জীবনে পদার্পন করেছেন। এখানে শুধু আন্দোলন নয়, বাস্তবতার আলোকে আমাদেরকে অনেকগুলো পরিস্থিতির মোকাবেলা করে জীবন পরিচালনা করতে হবে। সবগুলোকে সমন্বয় করে সফল হতে পারলেই আমাদের ছাত্র আন্দোলন থেকে শিখে আসা যোগ্যতার প্রতিফলন ঘটবে। সুতরাং খুবই ধৈর্যের সাথে আমাদেরকে আগামীর পথ পাড়ি দিতে হবে।