কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, দেশের জনগণ সহ আজ পুরো বিশ্ববাসী বুঝে গেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের অধিনে এদেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ক্ষমতাসীনদের দীর্ঘ পনের বছরের দুঃশাসনে জনগণ চরম অতিষ্ঠ। এই পরিস্থিতিতে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন, আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও আলেম ওলামাদের মুক্তি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে আমরা সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছি। দেশের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা জাতির সামনে জনগণের কথা গুলো তুলে ধরতে চাই। এটা আমাদের সংবিধানিক অধিকার। এজন্য পুলিশ কার্যালয়ে প্রতিনিধি দল প্রেরণ করে আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ সফল করার জন্য সহযোগিতার আবেদন করেছি। আমরা প্রত্যাশা করি সমাবেশের দ্রুত সময়ের মধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার সিদ্ধান্ত জানিয়ে আমাদেরকে অবহিত করা হবে। যেন আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ সফল করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারি। জামায়াতে ইসলামী তার ঐতিহ্যগতভাবে এই সমাবেশ শান্তিপূর্ণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আগামী ১০ জুন রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আজ ৮জুন, বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। সমন্বয় সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্দুর রহমান মূসা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির ও এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলওয়ার হোসাইন ও কামাল হোসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার শেখ আল আমিন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সালাম, ড. মোবারক হোসেন, সৈয়দ সিরাজুল হক, কামরুল আহসান, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য আতাউর রহমান সরকার, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য শাহিন আহমদ খান, মোহাম্মদ আলী প্রমুখ সহ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৪ শাখার সভাপতি ও সেক্রেটারিবৃন্দ।
]
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণ দিশেহারা। এটাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থাপনা নেই। আজ তাদের দুর্নীতি, বিদেশে অর্থ পাচার, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে দেশ গভীর সংকটে নিমজ্জিত। দেশের মানুষের জীবনযাত্রা আজ দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষ বাজারে ব্যাগ হাতে নিয়ে খালি হাতে ফিরে আসছে। ডাল কিনলে চাল কেনার টাকা নেই, তেল কিনলে নুন কেনা যাচ্ছে না। দেশের বিদ্যুৎ নিয়ে সরকার চরম টালবাহানা করে যাচ্ছে। গ্রাম-গঞ্জ শহর সবখানে সাধারণ গ্রাহকেরা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করছে অথচ টাকার অভাবে কয়লা, তেল আমদানী না করার কথা বলা হচ্ছে। আজকে কয়লার অভাবে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ। এই সরকার শুধুমাত্র দুর্নীতি ও অনিয়ম-ই করেনি বরং তারা গুম, খুন, নির্যাতন, দমন-পীড়ন চালিয়ে দীর্ঘ সময়ে বাংলাদেশের জনগণকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। বিরোধী মত ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের নামে হাজার হাজার মিথ্যা মামলা প্রদান করেছে। বিরোধী মতের কেউ নিজ বাড়িতে ঘুমাতে পারছে না। জামায়াত নেতৃবৃন্দকে বছরের পর বছর কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। উচ্চ আদালত থেকে জামিন দেওয়ার পরেও তাদেরকে বারবার জেলগেট থেকে পুনরায় গ্রেফতার করে বন্দী রাখা হচ্ছে। তিনি দমন-পীড়ন বন্ধ করে আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমান, নায়েবে আমীর আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর সেলিম উদ্দিন সহ বিরোধী মতের গ্রেফতারকৃত সকল নেতাকর্মীর মুক্তির দাবী জানান। তিনি আরও বলেন, আজকের সমন্বয় সভা থেকে আমরা পুলিশ প্রশাসনকে বলতে চাই, সমাবেশের আর মাত্র একটি দিন বাকি রয়েছে। ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণ জামায়াত শান্তিপূর্ণ সমাবেশ বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা পুলিশ প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে চাই। আমরা ঢাকা মহানগরীর সর্বস্তরের জনশক্তি ও রাজধানীবাসীকে ১০ জুনের সমাবেশে দলে দলে যোগদানের আহ্বান জানাচ্ছি।
আব্দুর রহমান মুসা বলেন, আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আজ দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। শুধু তাই নয় গোটা বিশ্ব আজ আওয়ামী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছে। কেয়ারটেকার সরকারের মাধ্যমে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের ব্যর্থতায় আজকে পুরো জাতির উপরে ভিসা নীতি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার মরিয়া হয়ে রয়েছে। মিডিয়া ও সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এবং জনগণ যেন কথা বলতে না পারে সেজন্যই মূলত ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট নামে আইন করা হয়েছে। দেশের এই ক্রান্তিকালে জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ ঘিরে জনগণ আশার আলো দেখতে শুরু করেছে।