আগামী ১০ জুন রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ বাস্তবায়ন উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের রমনা থানার উদ্যোগে আজ ৭ জুন বুধবার স্থানীয় একটি মিলনায়তনে ওয়ার্ড ও ইউনিট দায়িত্বশীল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য ও রমনা থানা আমীর আবু জাওয়াদের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য আশরাফুল আলম ইমন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে রমনা থানার সকল ওয়ার্ড ও ইউনিট দায়িত্বশীলরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে প্রত্যেক নাগরিককে সংগঠন ও সভা সমাবেশ করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। দেশের সংবিধান মোতাবেক আমরা সকল কর্মসূচী পালনের অধিকার রাখি। অথচ সরকার জামায়াতে ইসলামীকে সভা সমাবেশ করতে দিচ্ছে না। তারা আমাদেরকে জনবিচ্ছিন্ন করতে সকল প্রকার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। সারাদেশে জামায়াতের অফিস গুলোকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে জোরপুর্বক বন্ধ করে রেখেছে। অফিসের কর্মকর্তা- কর্মচারী এমনকি পার্শ্ববর্তী দোকান মালিকদেরও গ্রেফতার করেছে। এতকিছুর পরেও জামায়াতে ইসলামী এদেশের জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। অপরদিকে দেশে জনগণের ন্যায্য অধিকার হরণ, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধগতি, ভয়াবহ বিদ্যুৎ পরিস্থিতির ফলে সরকার আজ জনগণের তোপের মুখে পড়েছে। প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ফলে বহিঃবিশ্বেও গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে বিভিন্ন স্যাংসনের মুখে পড়েছে। এভাবে জামায়াতকে জনবিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে ক্ষমাতাসীন আওয়ামী সরকার আজ নিজেই গোটা বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিরোধ, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের মুক্তি, কেয়ারটেকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিতে গত ৫ জুন আমরা সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচি দিয়ে সহযোগিতা চেয়ে ডিএমপির কাছে আবেদন করেছিলাম অথচ প্রশাসন কর্ম দিবসের (ওয়ার্কিং ডে) ঠুনকো অযুহাতে আমাদের আবেদনকে নাকচ করে দেয়। আমরা মাত্র কয়েক ঘন্টার জন্য সমাবেশ করতে চেয়েছিলাম অথচ আওয়ামী লীগ বছরের পর বছর ধরে গুলিস্তানে তাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তা দখল করে বন্ধ করে দিয়েছে, ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর সড়কটিও ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে রেখেছে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে যুদ্ধাবস্থার পরিবেশের সৃষ্টি করা হয়েছিলো। রাষ্ট্রের নাগরিকদের বিরুদ্ধে সরকারের এই যুদ্ধ প্রস্তুতি দেখে দেশের জনগণ হতবাক হয়ে যায়। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ফলে ৫ জুনের পরিবর্তে আগামী ১০ জুন বন্ধের দিনে নতুনভাবে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কথা গুলো জাতির সামনে তুলে ধরতে চাই। আমরা প্রত্যাশা করি ডিএমপি আমাদের কর্মসূচি বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা করবে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমাদেরকে তা নিশ্চিত করবে। যেন সমাবেশের সকল প্রস্তুতি আমরা ভালো মতো সম্পন্ন করতে পারি। আমরা পুলিশ প্রশাসনকে নিশ্চয়তা দিতে চাই, জামায়াতের সমাবেশ বাস্তবায়নে আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রত্যেক নেতাকর্মী শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করবে ইনশাআল্লাহ।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় জামায়াতে ইসলামী যেন কোন আন্দোলন করতে না পারে, সেই ভয়ে ভীত হয়ে এই অবৈধ সরকার জামায়াতকে কোন সভা সমাবেশ করতে দিচ্ছেনা। জনগণের কণ্ঠকে রুদ্ধ করতে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সরকারকে বলতে চাই, জনগণের উপরে জুলুম ও শোষন বন্ধ করে অবিলম্বে আমীরে জামায়াত সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দকে মুক্তি প্রদান করুন। সেই সাথে আগামী ১০ জুনের সমাবেশ সফল করতে সহযোগিতা করুন। দেশপ্রেমিক সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামী তার বক্তব্য জনগণের সামনে তুলে ধরতে চাই। এটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার।