বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, যারা এদেশের বুক থেকে জামায়াতে ইসলামীকে নিঃশেষ করতে চাই, তাদের জেনে রাখা দরকার বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী তৃতীয় শক্তি হিসেবে আজ সুপ্রতিষ্ঠিত। জামায়াতে ইসলামীর সাথে আজ দেশপ্রেমিক কোটি কোটি জনগণ সম্পৃক্ত। বাংলাদেশের সবুজ জমিনে সত্যিকার ইসলামী সংগঠন হিসেবে জামায়াত জনগণের অন্তরে স্থান করে নিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার রাজনীতি করে না বরং সমাজ পরিবর্তনের রাজনীতি করে, মানুষের কল্যাণের রাজনীতি করে। সর্বপরি আমরা কাজ করি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টির প্রত্যাশায়। ষড়যন্ত্রকারীদের টার্গেট ছিলো বাংলাদেশ থেকে সত্যিকার দেশপ্রেমিক জামায়াতে ইসলামীকে নির্মূল করা। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা জানে না জামায়াতে ইসলামীকে এভাবে কোনো দিনই নিশ্চিন্ন করা সম্ভব নয়। কুরআনের কথা হচ্ছে বাতিলেরা যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন, কোনো ফুৎকারে সত্য ইসলামী আন্দোলনকে কখনই তারা নিভিয়ে দিতে পারবে না। আল্লাহর ঘোষণা হচ্ছে তার মনোনীত ইসলামী আদর্শ বিকশিত হবেই। তাই শহীদদের রক্তে রঞ্জিত রাজধানী ঢাকাকে ইসলামী আন্দোলনের দুর্জয় ঘাঁটিতে রূপান্তরিত করতে ওয়ার্ড দায়িত্বশীলদের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
আজ ২৬ মে ২০২৩, শুক্রবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের যাত্রাবাড়ী পূর্বজোনের উদ্যোগে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে দিনব্যাপি ওয়ার্ড দায়িত্বশীল শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি, জোন পরিচালক মুহাম্মদ কামাল হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যাথাক্রমে মু. দেলওয়ার হোসেন ও ড. আব্দুল মান্নান। আরও আলোচনা রাখেন মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান। শিক্ষাশিবিরে উপস্থিত ছিলেন মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য যথাক্রমে যাত্রাবাড়ী পূর্ব থানা আমীর মোহাম্মদ শাহজাহান, কদমতলী থানা আমীর মীর বাহার আমীরুল ইসলাম, যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইল থানা আমীর আবু হাসান, ডেমরা পশ্চিম থানা আমীর বি হাসান ও যাত্রাবাড়ী মধ্য থানা আমীর এডভোকেট একে আজাদ প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকার দেশের জনগণকে জিম্মি করে আজীবন ক্ষমতায় থাকার নানাবিধ ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। তারা জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন নিয়ে নানা রকম চক্রান্ত অব্যাহত রেখেছে। আমীরে জামায়াত যখনই জনগণের মুক্তির জন্য দশ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তখনই তাকে মিথ্যা বানোয়াট মামলায় গ্রেফতার করে কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছে। গত পনের বছর ধরে জামায়াতে ইসলামীর উপরে নির্যাতনের স্টিমরোলার চালানো হচ্ছে। জামায়াত ও ছাত্রশিবিরসহ দেশের বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের পুলিশ ওয়ারেন্ট ও মামলা ছাড়াই জোরপূর্বক গ্রেফতার করে কারাগারে আটকে রেখেছে। আওয়ামী সরকার ভীত হয়ে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম, সাবেক এমপি নায়েবে আমীর আ ন ম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান সহ বরেণ্য আলেম ওলামাদেরকে দীর্ঘদিন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কারাগারে বন্দী করে রেখেছে। একইসাথে এই অবৈধ সরকার জনগণের সকল অধিকারকে হরণ করেছে। দেশের জনগণের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে অর্থ পাচার করে আজ দেশকে নিরব দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। এমতাবস্থায় ইসলামপ্রিয় দেশপ্রেমিক জনগণকে নিরব বসে থাকলে চলবে না। ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও আলেম-ওলামাদের মুক্তির জন্য, জনগণের মুক্তির জন্য নির্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতের প্রত্যেক কর্মীকে স্মরণ রাখতে হবে ইসলামী আদর্শের প্রকৃত বিজয় অর্জন করতে চাইলে হৃদয়ে শিরক মুক্ত ঈমান চাষ করতে হবে। সামরিক শক্তির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, আল্লাহর প্রতি অবিচল ভরসা ও সুদৃঢ় ঈমানি শক্তি। বিজয় আসে আল্লাহর পক্ষ থেকে। আল্লাহর সাহায্য ব্যতিরেকে মুমিনদের বিজয় সম্ভব নয়। এসময় তিনি ওয়ার্ড দায়িত্বশীলদেরকে ইসলামের সুমহান আদর্শকে সুদৃঢ়ভাবে হৃদয়ে আঁকড়ে ধরে ময়দানে আরও কার্যকর ভূমিকা পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান।