পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে নগরবাসীসহ মুসলিম উম্মাহর প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা বার্তায় মহানগরী নেতৃবৃন্দ বলেন, এক মাস সিয়াম সাধনা শেষে খুশীর সওগাত নিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর আমাদের দ্বারে সমাগত। ঈদুল ফিতর ধনী-গরিবের ভেদাভেদ ভুলে মানুষকে ভাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করে শান্তি ও সহমর্মিতার অনুপম শিক্ষা দেয় এবং সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করে একটি শোষণমুক্ত সমাজ গঠনের জন্যে অনুপ্রেরণা দেয়। আমরা যদি বাস্তব জীবনে ইসলামী আদর্শ অনুসরণ করে সমাজে ন্যায় ও ইনসাফ কায়েম করতে পারি তাহলেই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব। নেতৃবৃন্দ ঈদুল ফিতরের এই দিনে রাসূলুল্লাহ সা. ও তাঁর সাহাবাগণের ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের ভাষায় শুভেচ্ছা জানান, ‘তাক্বাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম’ অর্থ : মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের ও আপনার নেক আমল তথা ভাল কাজগুলো কবুল করুন। অসহায় মানুষকে সহযোগিতার মাধ্যমে এবার ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করতে এবং রমাদান মাসের প্রকৃত শিক্ষা ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রতিফলন ঘটিয়ে দেশে কল্যাণকামী সরকার বা নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
শুভেচ্ছা বার্তায় নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বাংলাদেশে আমরা এমন এক সময় ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে যাচ্ছি যখন দেশে নিত্য-প্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে নিম্ন-মধ্য আয়ের মানুষের জন্য জীবিকা নির্বাহ করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের আমলে মানুষের জান ও মালের কোনো মূল্য নেই। সম্প্রতি রাজধানীর বঙ্গবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, নিউমার্কেটের অগ্নিকাণ্ড সহ সারাদেশে অসংখ্য বিপদ-মুসিবতে মানুষ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে ঈদের আনন্দ ম্লান হয়েছে। মূলত আওয়ামী সরকারের অদূরদর্শিতা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর গাফিলতির কারণেই একেরপর এক দূর্ঘটনা সমূহ ঘটছে বলে দেশবাসী মনে করে। রমজান মাস জুড়ে এসব অগ্নিকাণ্ডের ধরণ ও সময় প্রায় একই রকম হওয়ায় জনমনে সন্দেহ বাড়ছে। আমরা ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করছি। সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রের সহায়তায় ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করে ফ্যাসিবাদ কায়েমের মাধ্যমে দেশের জণগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ফলে জাতীয় জীবনে ঈদকে অর্থবহ করতে হলে এই ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের কোনো বিকল্প নেই। তাই নেতৃবৃন্দ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়ে নগরবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিপরীত সব দল মতকে দমন পীড়ন নীতির কারণে দীর্ঘ সময় ধরে দেশের বরেণ্য আলেম ওলামাদের কারাগারে বন্দি ও নির্যাতনের মাধ্যমে মানুষের কণ্ঠ বন্ধ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বিশ্ব নন্দিত মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সরকারের জুলুমের শিকার হয়ে প্রায় এক যুগ ধরে কারাগারে বন্দী রয়েছেন। রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে ঈদের আনন্দকে ঐক্যের সুদৃঢ় বন্ধনে পরিণত করতে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, আল্লামা সাঈদী, এ টি এম আযহারুল ইসলাম, আ ন ম শামসুল ইসলাম, মাও. রফিকুল ইসলাম খান সহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।