বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. দেলাওয়ার হোসেন বলেন, এই রমজান মাস আসলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের রোজা পালনের সুবিধার্থে সম্মানিত ব্যবসায়ীগণ, নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিত্যপণ্য সহ অন্যান্য জিনিসপত্রের মূল্য কমিয়ে বিশেষ অফার ঘোষণা করেন। যাতে করে মানুষ সাচ্ছন্দ্যে আল্লাহর বিধান পালন করতে পারে। অথচ আমাদের দেশে এর পুরো ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। আশ্চর্য হলেও সত্য যে, রমজান মাস এলে মুসলিম প্রধান এই দেশের জনগণের স্বাভাবিক জীবনযাপনের উপকরণ যোগাতেও নাভিশ্বাস উঠে যায়। স্থানীয় সিন্ডিকেট, সরকারী প্রতিষ্ঠান সমূহের উদাসিনতা, কর্তৃপক্ষের গাফিলতি সহ নানা কারণে বাজারে পণ্যের দামে অস্থিরতা বিরাজ করে। অথচ এই রমাদানের মাসে মহান আল্লাহ তায়ালা নিজে মুমিনদের জন্য সাতশত গুণ থেকে অধিক ছোয়াব অর্জনের অফার ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। সেই ধারায় বিশ্বের অনেক মুসলিম শাসকগণ নিজ দেশের মুসলমানদের কথা বিবেচনা করে বিশেষ ছাড় সুবিধা অফার ঘোষণা করেন।
পুরান ঢাকার বংশাল ও চকবাজার এলাকার অসহায় ও দরিদ্রদের মাঝে ইফতার ও সাহরীর ফুড প্যাকেট উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ইফতার ও সাহরীর ফুড প্যাকেট বিতরণে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য যথাক্রমে এ আর রহমান, ঢাকার কোতোয়ালি থানা জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান, বংশাল থানার মাওলানা আব্দুর রহিম মোল্লা, সেক্রেটারি আজিজুর রহমান, কর্মপরিষদ সদস্য এম এ রাজ্জাক, শিক্ষাবিদ হোসাইন সরকার সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
দেলাওয়ার হোসেন বলেন, জনগণ যেন খুব সহজে প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী ক্রয় করতে পারেন। মানুষের রোজা পালনে দুনিয়ার নানা প্রান্তে সে দৃশ্য চলমান রয়েছে। ব্যতিক্রম শুধু বাংলাদেশে, আমাদের দেশে পণ্যের উৎপাদন যথেষ্ট রয়েছে। বাংলাদেশের সবুজ জমিনে মহান আল্লাহর দেওয়া নানা শস্য ফসল খুব স্বাভাবিক ভাবেই ফলে থাকে। পুরো দেশের জনগণের খাদ্য সামগ্রীর যথেষ্ট উৎপাদন থাকলেও সরকারী দুর্নীতি, অনিয়ম, নানা অব্যবস্থাপনার কারণে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত বা দরিদ্র শ্রেণির মানুষকে জোরপূর্বক অধিক মূল্য দিয়ে নিজ পরিবারের খাবার যোগাড় করতে হচ্ছে। মুসিলম দেশ সমূহের শাসকগণ যখন রোজার মাসে মানুষকে ইবাদত বন্দেগিতে সহযোগিতা করে, সেখানে আমাদের বাংলাদেশে কিছু মানুষ একত্রে ইফতার বা পারিবারিক কোনো অনুষ্ঠানে যুক্ত হলেও অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে। রাতের বেলায় তারাবির নামাজে দাঁড়িয়ে অনেক নারী পুরুষকে বাংলাদেশে গ্রেফতার করা হয়েছে। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, জাতি হিসেবে দূর্ভাগ্য আমাদের, আমাদের শাসক নিজেও দাবিদার মুসলিম। কিন্তু তিনি মুসলমান হয়েও রোজার মাসে তেমন কোনো নিদর্শন পেশ করতে পারেন না। আজকে সরকারের উচিৎ ছিলো বাজার নিয়ন্ত্রণে রেখে জনগণকে স্বাভাবিক ভাবে রোজা পালনে সহযোগিতা করা। আমরা আশা করি আগামীতে দেশের জনগণ তাদের দেশ ও জাতির স্বার্থে সঠিক নেতৃত্বকে বাছাই করতে সচেতন হবেন। বাংলাদেশের মানুষকে সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশে একটি সুখি সমৃদ্ধ সফল সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখে। একটি ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে সকল নাগরিকের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের জনগণের ঐক্যবদ্ধ সমর্থন প্রত্যাশা করি আমরা।