বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ আজ ৬ এপ্রিল ২০২৩, বৃহস্পতিবার ১৪ রমজান রাজধানীতে কওমি ও স্থানীয় আলেমদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে বলেন, দ্বীন বিজয়ের যেকোনো প্রচেষ্টাকে আমরা দৃঢ়ভাবে সমর্থন করি। বাংলাদেশে আকিমুদ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজে যারা আত্মনিবেদিত সকলের প্রচেষ্টাকে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কবুল করুন। মাহে রমজান হচ্ছে মানবতার মুক্তি সনদ মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাযিলের মাস। এই মাসে নিজেদেরকে পরিপূর্ণ মুত্তাকী হিসেবে গড়ে তোলার শপথ নিতে হবে। এই মাসে কুরআন হাদীসের আলোকে জীবন পরিচালনার পাশাপাশি ইনসাফভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে আলেম-উলামাসহ সবাইকে কাজ করতে হবে। কুরআনের বিজয়ের মাস মাহে রমজানের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে ঐক্য অটুট রেখে এদেশে ইসলামী জাগরণ তৈরির সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কদমতলী পূর্ব থানার উদ্যোগে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে আয়োজিত কওমি ও স্থানীয় আলেমদের সম্মানে ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও কদমতলী পূর্ব থানা আমীর আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং মাওলানা জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য মীর বাহার আমিরুল ইসলাম। উক্ত ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন আশেপাশের বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসার মুহতামিম, তলবে এলম ছাত্র, স্থানীয় মসজিদ সমূহের ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিনসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন থানা কর্মপরিষদ সদস্য একাব্বর হোসেন, আব্দুল মুনিম খান, নুরুল ইসলাম মনির, ইমাম হাসান। ইফতার মাহফিলে প্রায় ১২০ জন কওমি ও অন্যান্য সম্মানিত আলেমগণ উপস্থিত ছিলেন।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ইসলামে মুসলমানদের পারস্পরিক সর্ম্পক ভ্রাতৃত্বের। এই ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্য বজায় রাখার ব্যাপারে মহান আল্লাহ তায়ালা এবং রাসূল (সা.) জোর তাগিদ দিয়েছেন। মুমিনগণ একজন মানুষের মতো, যার চোখ আক্রান্ত হলে সমস্ত শরীর আক্রান্ত হয়; আর তার মাথা আক্রান্ত হলে সমস্ত শরীর আহত হয়। অথচ আজ আমাদের একজন বিপদে পড়লে অন্যজন মনে মনে খুশির ঢেকুর তুলি। এটা খুবই দুর্ভাগ্যের যে, আমরা কেন এক হয়ে সকল অন্যায় জুলুম অত্যাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে পারি না। দেশের সম্মানিত আলেমগণ আপনারা দেখেছেন সকল কঠিন পরিস্থিতিতে জামায়াতে ইসলামী হক ও ন্যায়ের পথে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদেরকে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। এজন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে শাহাদাতবরণ করতে হয়েছে। মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী দীর্ঘদিন যাবৎ কারাগারে বন্দি। দেশের বহু আলেম আজ কারাগারে আটক রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় বসা আওয়ামী সরকার জামায়াতে ইসলামীকে নেতৃত্ব শূন্য করার অপচেষ্টা চালিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে গিয়ে আজ চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। আজ পুরো দেশবাসী সেই ষড়যন্ত্র বুঝতে সক্ষম হয়েছে। দেশের জনগণ এই ফ্যাসিবাদ সন্ত্রাসের কবল থেকে মুক্তি চাই। পবিত্র মাহে রমজান সিয়াম সাধনার মাস। সবাইকে এ মাসে তাকওয়া অর্জন করতে হবে। সিয়াম সাধনার মাস মাহে রমজানের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে বিভাজন-বিভক্তির রাজনীতি পরিহার করতে হবে। জালিম সরকারের হাত থেকে জাতিকে রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সকলে মিলে এই দেশকে নিজেদের মত করে সাজানোর প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করি। দেশ ও জাতি চরম ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছে। জাতির ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের ন্যায় চেপে বসা স্বৈরাচারী সরকারের হাত থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হবে। রমজানের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে সমাজের সকল স্তরে ন্যায় ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বাংলাদেশে শান্তি-সমৃদ্ধি এবং ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আলেমগণকে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান।