চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃতী সন্তান ও জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জননেতা মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল পবিত্র মাহে রমাদান উপলক্ষ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঝিলিম ইউনিয়নে অসহায় ও বঞ্চিত মানুষের মধ্যে সাহরি ও ইফতারের ফুড প্যাকেট উপহার প্রদান করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কবির, ঝিলিম ইউনিয়ন সভাপতি আব্দুর রাকিব এবং সেক্রেটারি হযরত বেলাল সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সহ পুরো বাংলাদেশকে যদি শান্তিপূর্ণ জনপদ হিসেবে গড়ে তুলতে হয়, সত্যিকার ভাবে মানুষের প্রয়োজন পুরন নিশ্চিত করতে হয়, তাহলে ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা বা ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া তা কোনো ভাবেই সম্ভব নয়। আজকে মানবরচিত মতবাদ দিয়ে মানুষের মুক্তি খুঁজতে আমরা ব্যাকুল হয়ে পড়েছি, অথচ তা দিয়ে মানুষের মুক্তি মিলবে না। প্রকৃত পক্ষে মানুষের মুক্তি নিহিত রয়েছে আল কুরআন ও ইসলাম নির্দেশিত পথে। আজকে গোটা পৃথিবীতে যে অমানবিকতার ঝনঝনানি যুদ্ধ সংঘাত তা মূলত কুরআন থেকে দূরে সরে যাওয়ার ফল। জামায়াত দেশের শাসন ব্যবস্থার সকল স্তরে অযোগ্য ও অসৎ নেতৃত্বের বদলে আল্লাহভীরু, সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব কায়েমের জন্য জনগণের সরাসির সমর্থনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পন্থায় চেষ্টা চালাচ্ছে। আজকে একদিকে জনগণের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেকে দুর্নীতি, চুরি, ডাকাতি করে জনগণের সম্পদ আত্মসাৎ করে বিদেশে অর্থপাচার করছে। অন্যদিকে দেশের সাধারণ মানুষ তার নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য পরিবর্তন ছাড়া কোনো পথ নেই। সুতরাং মুসলিম প্রধান বাংলাদেশে যারা ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে সত্যিকারভাবেই জনগণের কল্যাণে কাজ করতে চাই তাদেরকেই প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সমাজের নেতৃত্বের আসনে তাদেরকে নিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সমাজ পরিবর্তনের কাজ করে যাচ্ছে। সমাজের কল্যাণ ও সংস্কারমূলক কাজের অংশ হিসেবে আজ আমরা আপনাদের কাছে ছুটে এসেছি। আমাদের যা সামর্থ্য রয়েছে তা একত্রিত করে চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসীর হাতে তুলে দিচ্ছি। যাতে করে রমজানে এসব ভাই-বোনেরা সহজে রোজা পালনে করতে পারেন। আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আপনাদের কিছু খাবার সামগ্রী তুলে দিয়েছি, কিন্তু এটাতেই আপনাদের সব প্রয়োজন পূরণ হবে না। এজন্য মহান আল্লাহর কাছে ইবাদতের মাধ্যমে চাইতে হবে। নেতৃত্বের পরিবর্তন ছাড়া সমাজের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে না।
আজকে আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় রয়েছে। তারা সরাসরি জনগণের সমর্থনের ভিত্তিতে আসে নাই বিধায় তাদের কাছে তারা জনগণের সুবিধা-অসুবিধা কোনো কিছুর তোয়াক্কা নেই। আগামী দিনেও এরা জনগণের ভোট ছাড়াই ক্ষমতায় থাকতে চায়। জামায়াত সহ বিরোধী দলীয় নেতৃবৃন্দের উপরে তারা নির্যাতন জুলুম করে আবারো সেই পরিবেশ তৈরির ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রকে রুখে দেওয়ার জন্য সকলকে রাজপথে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে। আজকে স্বাভাবিক ভাবে জামায়াতকে রাজপথে কোনো কর্মসূচিও পালন করতে দেওয়া হয় না।
তিনি আরও বলেন, আজ বাংলাদেশের সকল বিরোধী দল ঐক্যবদ্ধ, দাবি একটাই, দেশে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন দিয়ে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেখানে একমাত্র আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে নির্বাসিত করে জনগণের সমর্থনের বাহিরে গিয়ে আবারো ক্ষমতা দখলের জন্য নির্বাচনের নামে প্রহসন মঞ্চস্থ করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বাংলাদেশের জনগণ সেই প্রহসন আর মেনে নেবে না। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আজ পুরো জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচিতে দেশের সকল বিরোধী দলমত আজ একই দাবি জানাচ্ছে। আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান যখন যুগপৎ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন তার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাকে এই ফ্যাসিস্ট অবৈধ সরকার মিথ্যা নাটক সাঁজিয়ে গ্রেফতার করেছে। জামায়াতে ইসলামীর ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করতে, জামায়াতের অগ্রগতিকে থামিয়ে দিতে এবং গণমানুষের আন্দোলনকে বাঁধাগ্রস্ত করতেই সরকার আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে। আমরা আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের অবিলম্বে মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। একইসাথে বলে দিতে চাই, গ্রেফতার করে, জুলুম চালিয়ে, গুম ও খুন করে জামায়াতে ইসলামীর অগ্রযাত্রাকে রুখা যাবে না। আমরা ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো ইনশাআল্লাহ।