জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃতী সন্তান জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল আজ তীব্র শীতে বিপর্যস্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জের অসহায় ও শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র উপহার প্রদান করেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা আমীর অধ্যাপক আমানুল্লাহ, সদর উপজেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কবির সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশে সৎ-যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব তৈরির মাধ্যমে একটি ন্যায়-ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। মূলত জামায়াতের নেতাকর্মীরা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই এসব কাজ পরিচালনা করছে। সততা, যোগ্যতা ও দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে একজন মানুষ যখন আল্লাহর ভয় নিজের মধ্যে লালন করবে তখনই কেবল সত্যিকার ভাবে সমাজে ন্যায় ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। ইসলাম হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ জীবন বিধান। মানবজাতির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে ইসলাম একটি নিয়ামত স্বরূপ। সুতরাং ইসলামকে ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার একমাত্র উৎস মেনে নিয়ে জামায়াত তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই জনগণের কল্যাণে পাশে থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। আজকেও আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে জনগণের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন এজন্য তাঁর শুকরিয়া আদায় করছি। আজকে দেশে অনির্বাচিত অবৈধ সরকার জনগণের উপরে চেপে বসে আছে। গোটা বাংলাদেশের মানুষ যখন শীতে কষ্ট পাচ্ছেন। এ অবস্থায়ও সরকারের যদি নূন্যতম দায়িত্ববোধও থাকতো তাহলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রংপুর, দিনাজপুর সহ উত্তরবঙ্গের অসহায় মানুষ কিছুটা হলেও উপকৃত হতো। যেহেতু তারা জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতা আসে নাই। তাই ক্ষমতায় বসার পরে জনগণের সুখ-দুঃখ নিয়ে তাদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। সরকার তার দায়িত্বের কথা ভুলে গিয়ে সারাদেশে বিরোধী দলমতের মানুষকে গ্রেফতারে ব্যস্ত রয়েছে। এমতাবস্থায় তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সকলকে কার্যকর ভূমিকা পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, আজ বাংলাদেশের সকল বিরোধী দল ঐক্যবদ্ধ, দাবি একটাই, দেশে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধিনে নির্বাচন দিয়ে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেখানে একমাত্র আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে নির্বাসিত করে জনগণের সমর্থনের বাহিরে গিয়ে আবারো ক্ষমতা দখলে রাখার জন্য নির্বাচনের নামে একটি প্রহসন মঞ্চস্থ করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ সেই প্রহসন আর মেনে নেবে না। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আজ পুরো জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচিতে দেশের সকল বিরোধী দলমত আজ একই দাবি জানাচ্ছে। আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান যখন যুগপৎ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন তার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাকে এই ফ্যাসিস্ট অবৈধ সরকার মিথ্যা নাটক সাঁজিয়ে গ্রেফতার করেছে। জামায়াতে ইসলামীর ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করতে, জামায়াতের অগ্রগতিকে থামিয়ে দিতে এবং গণমানুষের আন্দোলনকে বাঁধাগ্রস্ত করতেই সরকার আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে। আমরা আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। একইসাথে বলে দিতে চাই গ্রেফতার করে, জুলুম চালিয়ে, গুম ও খুন করে জামায়াতে ইসলামীর অগ্রযাত্রাকে রুখা যাবে না।
নূরুল ইসলাম বুলবুল আরও বলেন, আজ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। তরুণ-যুবকদের অনৈতিক শিক্ষায় ধাবিত করা হচ্ছে। পরবর্তী প্রজন্ম দেশ ও জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে না পারে সেই ষড়যন্ত্র হচ্ছে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে পঙ্গু করে দিয়ে আগামীর সম্ভাবনাকে পুরোপুরি শেষ করে দেওয়া হচ্ছে। চারিদিকে আওয়াজ উঠেছে এইসব বই-পুস্তক বাদ দিয়ে প্রকৃত নৈতিকতা ও সঠিক জ্ঞান শিক্ষা দিয়ে জাতিকে সঠিক পথে পরিচালনা করুন। জামায়াতের পক্ষ থেকে আওয়ামী সরকারের এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে আমরা প্রত্যখ্যান করছি। শিক্ষা ব্যবস্থায় দেশের মধ্যে বসবাসকারী প্রত্যেক ধর্মের মানুষের সুন্দর ও সঠিক জ্ঞান শিক্ষা দিতে হবে। ইসলামের যেসব শিক্ষামূলক দিক-নির্দেশনা রয়েছে তা সঠিকভাবে তুলে ধরতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থায় অশ্লীলতা-বেহায়াপনা-যৌনাচার ছড়িয়ে দিয়ে তরুণ-যুব সমাজকে ধ্বংসের চক্রান্ত বন্ধ করতে হবে। জাতিকে ধ্বংস করার দীর্ঘমেয়াদী ষড়যন্ত্রের অংশ এই শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রিয় জনগণ কখনো মেনে নেবে না।