বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আজ সোমবার চলমান তীব্র শীতে বিপর্যস্ত ঢাকাবাসীর মাঝে শীতবস্ত্র উপহার প্রদান করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল আজ রাজধানীর অসহায় ও শীতার্ত মানুষের মাঝে এই শীতবস্ত্র উপহার প্রদান করেন। শীতবস্ত্র উপহার প্রদানে আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও পল্টন দক্ষিণ থানা আমীর শাহীন আহমদ খানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
শীতবস্ত্র বিতরণকালে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত। এরফলে সারাদেশের মত ঢাকা নগরীতেও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও শ্রমজীবি মানুষ প্রচন্ড শীতে কষ্ট পাচ্ছেন। এমতাবস্থায় আমরা আমাদের সীমিত সামর্থ্য নিয়ে আপনাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। সরকারের অব্যাহত ব্যার্থতায় মানুষের চরম অসহায়ত্ব প্রকাশ পাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, দেশের অর্থ লুটপাট, ব্যাংক ধ্বংস করা এবং দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করার ফলে মানুষের অর্থনৈতিক দুরাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। যা পুরো বাংলাদেশকে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। একদিকে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিরোধী দল-মতের উপরে জুলুম-নির্যাতন, গ্রেফতার-হুলিয়া, মিথ্যা মামলা দিয়ে দমন পীড়নের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী আজীবন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্নে বিভোর। সেজন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যববহার করে তাদের সব রকমের চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র অব্যাহতভাবে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। দেশের জনগণ বিশ্বাস করে ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে যাওয়া বর্তমান সরকার খুব দ্রুতই বিদায় নিবে এবং দেশে জনগণের সমর্থিত একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাসহ মানুষের কথা বলার অধিকার ফিরিয়ে দিতে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প কিছু নেই। এমতাবস্থায় অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন ও জণগণকে নিজের ভোট নিজে প্রদানের সুযোগ দিতে অবিলম্বে কেয়ারটেকার সরকার বা নিরপেক্ষ একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশের মানুষের সকল ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে দেশের সচেতন মহলকেও এগিয়ে আসতে হবে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, দেশের জনগণ দেখেছে গত বছরে সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যাসহ দেশব্যাপী অীগ্নকান্ড, জলোচ্ছাস, ভিন্নধর্মালম্বিদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যেতে গিয়ে দুর্যোগে বিপদে পড়া ব্যক্তিদের সহযোগিতা ও প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান দলমত নির্বিশেষে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে জামায়াতে ইসলামীর সেবা-সহযোগিতা তুলে দিয়েছেন। অথচ দেশের জনগণের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এই অবৈধ ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তাঁকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক বানোয়াট অভিযোগে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে। আজকে জামায়াতে ইসলামীর উপরে অব্যাহতভাবে নির্যাতন, মামলা-হামলা করা হচ্ছে। জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়াও জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর আ ন ম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহঃ সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খানসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতা-কর্মীকে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। জনগণ দেখেছে জামায়াতে ইসলামী এদেশের প্রকৃত উন্নয়ন অগ্রগতিতে সবসময়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এসেছে। দেশে ন্যায় এবং ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থার কথা কেবল জামায়াতে ইসলামী বলে আসছে। এছাড়াও সমাজের নানা অসঙ্গতি দূরীকরণের মাধ্যমে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন জামায়াত করে যাচ্ছে। জনগণের সমর্থনের ভিত্তিতে জামায়াত এদেশে একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখে। জামায়াতে ইসলামী সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি নিরাপদ ও সমৃদ্ধ দেশ গঠন করার স্বপ্ন দেখে। যেখানে সকল মানুষ কর্মের নিরাপদ ক্ষেত্র পাবেন ও সেখানে প্রত্যেক মানুষের জান-মাল সুরক্ষিত থাকবে।