নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ও দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার দাবিতে আজ ২২ অক্টোবর ২০২২ শনিবার বিকেলে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি জননেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে শুরু হয়ে আশেপাশের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন ও মু. দেলওয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী পূর্বের সভাপতি আরিফুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি আব্দুল কাইউম মুরাদ সহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের বিভিন্ন থানা আমীর, সেক্রেটারি ও বিভিন্ন পর্যায়ের জামায়াত-শিবির নেতৃবৃন্দ।
প্রতিবাদ সমাবেশে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধিতে দেশের মানুষ দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল দ্রব্যেমূল্য আগের তুলনায় কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই ক্রমবর্ধমান চাপ দ্রুত রোধ করা প্রয়োজন। তা না হলে সাধারণ মানুষের জীবন ধারণ কঠিন হবে। সরকারের অব্যবস্থাপনা, অনিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থা ও অতিরিক্ত মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের জন্যই সাধারণ মানুষকে আজ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণে দ্রুত তিনি সরকারের প্রতি দাবী জানিয়ে বলেন অবিলম্বে দ্রব্যমূল্যের লাগাম টানুন অন্যথায় পদত্যাগ করুন।
তিনি বলেন, দেশের অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট রোধ করতে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। অসৎ ও মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। টিসিবিকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। প্রতি সপ্তাহে প্রয়োজনীয় পণ্যের খুচরা ও পাইকারি মূল্যের তালিকা মনিটর করতে হবে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে জোরালোভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অসাধু ব্যবসায়ীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
ড. মাসুদ বলেন, বাংলাদেশসহ ৪৫টি দেশে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা। আওয়ামী সরকারের কথিত খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এই বাংলাদেশেই গত বছর খাদ্য আমদানি করতে হয়েছে এক কোটি পাঁচ লাখ ৩৩ হাজার টন। আর এমনই বাস্তবতায় বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে এবং বিশ্বে চরম খাদ্য সংকটে পড়ার আশঙ্কায় থাকা ৪৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। আমরা বলতে চাই, আজ বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কার প্রধান কারণ রাতের ভোটে ক্ষমতাসীন হওয়া এই আওয়ামী সরকার। তাদের দুঃশাসন, ভোট ডাকাতি, দখলদারী, গুম, খুন, ব্যাংক লুঠ, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনে ব্যার্থতায় দেশ গভীর সংকটে পড়েছে।
এমতাবস্থায় আপনাদের বিদায় হচ্ছে এদেশে দুর্ভিক্ষ ঠেকাবার প্রাধান নিয়ামক। তাই অনতিবিলম্বে জনগণের জীবনমান স্বাভাবিক রাখতে দ্রব্যমূল্যের দাম কমিয়ে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনুন, অন্যথায় আন্দোলনের মাধ্যমে আপনাদের পদত্যাগে বাধ্য করে জনগণের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আজ বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও দেশের বরেণ্য আলেমদেরকে মাসের পর মাস মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। তাদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাস্সিরে কুরআন আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী, জামায়াতের সহঃ সেক্রেটারি এটিএম আজহারুল ইসলাম, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহঃ সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল খালেক মন্ডলকে সরকার দীর্ঘ দিন ধরে কারাগারে আটকে রেখেছে। আমরা জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ সহ সকল রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানাচ্ছি।