আজ ৩রা অক্টোবর, ২০২২ সোমবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে ইডেন মহিলা কলেজসহ সারাদেশে ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্য, মাদক ব্যবসা, সাধারণ ছাত্রীদের হেনস্তা ও অনৈতিক কাজে বাধ্য করানোসহ সকল অপরাধমূলক কার্যকলাপের প্রতিবাদে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী হানিফ ফ্লাইওভারের সামনে থেকে শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন ও শামছুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য মু. আব্দুস সালাম, আব্দুর রহমান, মোবারক হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি আব্দুল কাইউম মুরাদ, ঢাকা মহানগরী পূর্বের সভাপতি আরিফুর রহমানসহ ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণ জামায়াতের বিভিন্ন থানা আমীর ও সেক্রেটারিবৃন্দ।
বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ঐতিহ্যবাহী নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। ছাত্রলীগের একের পর এক অনৈতিক ও বিতর্কিত ঘটনায় আজ এ প্রতিষ্ঠানের অতীতের সকল অর্জন ও সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। অবিলম্বে ইডেন মহিলা কলেজসহ সারাদেশে ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্য, মাদক ব্যবসা, অনৈতিকতা ও অসভ্যতা বন্ধ করুন। সম্প্রতি দেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর ছত্রছায়ায় ছাত্রলীগ ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে সাধারণ ছাত্রীদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করছে। যা তাদেরই নেতৃবৃন্দ গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অকপটে স্বীকার করেছেন। আমরা আজকের এই সমাবেশ থেকে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সারাদেশে ছাত্রলীগের কার্যকলাপে এটা প্রতীয়মান যে, ছাত্রলীগের হাতে ৫ বছরের শিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধা পর্যন্ত কেউ নিরাপদ নয়। দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে ছাত্রলীগের এসব নোংরামী ও বেহায়াপনা বন্ধ করতে হবে। শিক্ষার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার স্বার্থে তদন্তের মাধ্যমে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট ও দেশ-জাতি ধ্বংসের মতো অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িত থাকার জন্য ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের বিচার ও তাদেরকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
ড. মাসুদ আরো বলেন, আমরা মনে করেছিলাম স্বাধীন বাংলাদেশে আমাদের ভাই ও বোনেরা তাদের ইজ্জত ও আব্রুর নিরাপত্তা পাবে, তাদের কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে, তারা অর্থনৈতিক মুক্তি পাবে অথচ আমরা দুর্ভাগ্যজনক ভাবে লক্ষ্য করছি ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধের ধোঁয়া তুলে বরং আমাদের স্বাধীনতাকে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। স্বাধীন বাংলাদেশে এই নৈরাজ্য কোনোভাবেই চলতে দেওয়া যায়না। ছাত্রলীগের অভিভাবক সংগঠন হিসেবে আওয়ামীলীগকে তাদের অপকর্মের জবাব দিতে হবে। ছাত্রলীগের নৈরাজ্য বন্ধ করতে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আজকে বাংলাদেশে আলেমদেরকে বন্দী করে রাখা হয়েছে, জামায়াতের নেতৃবৃন্দকে বন্দী করে রাখা হয়েছে। আজকে সারাদেশে জামায়াতের অফিসগুলো বন্ধ করে রাখা হয়েছে। জামায়াতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে লাভ হবেনা উল্লেখ করে তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করেন, সারাদেশে মানুষের ঘরগুলোকে অফিসে পরিণত করে জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই দেশকে মুক্ত করা হবে। তিনি আজকের মিছিল ও সমাবেশে পিছন দিক থেকে পুলিশের অতর্কিত মারমুখী আচরণের নিন্দা জানিয়ে বলেন, আজকের এই কর্মসূচিতে অনাকাঙ্খিত পরিবেশ সৃষ্টি ও আইন শৃঙ্খলায় নিয়োজিত বাহিনীর এই আচরণে জনগণের ক্ষোভ আরো বেড়ে যাবে। তিনি জনগণের বিরুদ্ধে না যাওয়ার জন্য প্রশাসনের ও আইনশৃংখলায় নিযুক্ত সম্মানিত কর্মকর্তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।