বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, ক্ষমতাসীন সরকারের নানা ব্যর্থতা ও অন্যায়ের কারণে দেশে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির ফলে দেশের মানুষের ভোগান্তি আজ চরমে। ক্রয়ক্ষমতার মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। মানুষ আজ বড় অসহায়। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তিনি বলেন, জামায়াতের এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের অনেক নেতা-কর্মীকে সরকার দীর্ঘ দিন কারাগারে আটকে রেখেছে। দেশের বরেণ্য আলেমদেরকে মাসের পর মাস মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও আলেম-ওলামাদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। তিনি বলেন, যতই দমন, পীড়ন করুক না কেন দেশের জনগণকে আটকে রাখার শক্তি এই ভোট ডাকাত সরকারের নেই। রাজপথে মানুষের যে স্রোত শুরু হয়েছে, সেই স্রোত এই দখলদার, ফ্যাসিবাদী সরকার ভেসে যাবে। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের ষড়যন্ত্র, নৈরাজ্য ও অপতৎপরতা রুখে দিতে হবে। তিনি এই অবৈধ সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান।
আজ সোমবার রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং আটককৃত জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী ও কারাবন্দি আলেম-ওলামাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশ তিনি এ কথা বলেন। শনিরআখড়া কাজলা থেকে শুরু হয়ে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা মোড় এলাকা সহ রাজধানীর আশেপাশের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এক প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে এডভোকেট ড. মো. হেলাল উদ্দিন ও মু. দেলোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, মো. শামসুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আমিনুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী পূর্বের সেক্রেটারি ওহিদুল ইসলাম আকিক, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি মেসবাহ উদ্দিন প্রমুখ।
বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে বিভিন্ন সময় এই দেশের মানুষকে রূপকথার গল্প শুনিয়ে ছিলো। ১০ টাকায় চাল খাওয়াবে, ঘরে ঘরে চাকরি দিবে, গ্রামকে শহরে রূপান্তর করবে। কিন্তু এখন ১০ টাকা চালের বদলে ঘরে ঘরে হাহাকার ছাড়া কিছুই নেই। চাকরি বদলে ঘরে ঘরে দলীয় ক্যাডার বাহিনী দিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে খুন, হত্যা, ধর্ষণ, রাহাজানি করছে। দেশে জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। দাম নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে এমন সরকারি কোনো উদ্যোগ জনগণ দেখতে পাচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণেই জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। তাদের লুটপাটের কারণেই দেশের এই করুণ অবস্থা। এভাবে আর চলতে দেয়া যায় না।
তিনি বলেন, ভোট ডাকাতি, দখলদারী, গুম, খুন, দুঃশাসন এবং দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে দেশ গভীর সংকটে পড়েছে। এরই মাঝে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে গেলে। কী পেলো দেশের জনগন? কী চুক্তি হয়েছে, গোপন কিছু হয়েছে কিনা জাতি তা জানতে চায়। তিনি বলেন, নির্বাচন এলেই সরকার বিভিন্ন দেশের কাছে ধরনা দেয়। এখনো সময় আছে, ওসব ধর্না ছেড়ে জনগণের কাছে আসেন। ক্ষমতা ছেড়ে দেন। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জনগণের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করুন।
তিনি আরো বলেন, সরকার জুলুম-নির্যাতনের মাধ্যমে জনগণকে আবারো পনবন্দী করে জোর করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলে রাখতে চায়। এ কারণে আওয়ামী সরকার ভীত হয়ে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কলিজার স্পন্দন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাস্সিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ কারাগারে আটক রেখেছে, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে প্রায় ১১ বছর যাবৎ এবং সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল খালেক মন্ডলকে প্রায় ৭ বছর যাবৎ কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। এছাড়াও জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানসহ জামায়াতের এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের অনেক নেতা-কর্মীকে সরকার দীর্ঘ দিন কারাগারে আটকে রেখেছে। দেশের বরেণ্য আলেমদেরকে মাসের পর মাস মিথ্যা অপবাদ দিয়ে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। তিনি মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি কাজী ইবরাহীম, মুফতি আমীর হামজাসহ আটক ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও আলেম-ওলামাদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, যতই দমন, পীড়ন করুক না কেন দেশের জনগণকে আটকে রাখার শক্তি এই ভোট ডাকাত সরকারের নেই। রাজপথে মানুষের যে স্রোত শুরু হয়েছে, সেই স্রোতে এই দখলদার, ফ্যাসিবাদী সরকার ভেসে যাবে। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের ষড়যন্ত্র, নৈরাজ্য ও অপতৎপরতা রুখে দিতে হবে। তিনি এই অবৈধ সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালনের উদাত্ত আহ্বান জানান।