“দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিপর্যয়, দ্রব্যমূল্যের অব্যাহত ঊর্ধ্বগতি, জনদুর্ভোগ ও সর্বগ্রাসী দুর্নীতির কবল থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত এবং দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলুন” এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে রাজধানীতে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াত। আজ ২৪ আগস্ট ২০২২ বুধবার সকালে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র মালিবাগ মৌচাক শান্তিনগর কাকরাইল এলাকায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি জননেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট ড. মোঃ হেলাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ড. মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শূরা সদস্য শাহিন আহমেদ খান, শামসুল বারী, রমনা থানা সেক্রেটারি আতিকুর রহমান, পল্টন উত্তর থানা সেক্রেটারি আতিকুর রহমান নজরুল। এছাড়াও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের বিভিন্ন থানার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির শুরু থেকেই বাজারে অবস্থানরত ব্যবসায়ী ও দোকানদ্বার সহ সাধারণ জনগণ জামায়াতের এই কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এসময় সাধারণ মানুষ সরকারের জুলুম অত্যাচার থেকে বাঁচতে মুক্তির নানা শ্লোগান দিতে থাকে। ক্রেতা-বিক্রেতা সহ পথচারী এসব জনগণ জামায়াতের লিফলেট গ্রহণ করে একাত্বতা ঘোষণা করেন।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার জনগণের উপর আস্থা হারিয়ে বিদেশি শক্তি ও ইভিএম এর ষড়যন্ত্রে নির্ভর করতে চায়। আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ আজ চতুর্মুখী সংকটে নিমজ্জিত। বর্তমান সরকারের অদূরদর্শী নানা সিদ্ধান্ত এবং দুর্নীতির কারণে দেশের অর্থনীতি মহাবির্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারের ১৪ বছরের শাসনামলে শেয়ারবাজার, ডেসটিনি, হলমার্ক ও বিভিন্ন ব্যাংক লুটপাট, বিদেশে অর্থ পাচার, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিজার্ভ চুরি, খেলাপি ঋণসহ নানা অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি দেশকে মহাসংকটে নিপতিত করেছে। গত ১৪ বছর যাবত সরকার উন্নয়নের ঢোল বাজিয়ে আসছে। উন্নয়নের অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি হচ্ছে বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ খাতে সীমাহীন দুর্নীতির কারণে গোটা দেশ আজ অন্ধকারে নিমজ্জিত। বিদ্যুৎ সংকটের ফলে অসহনীয় লোডশেডিং এর জন্য জনগণ ভীষণ কষ্টে জীবন অতিবাহিত করছে। বিদ্যুতের অভাবে কল-কারখানা ও উৎপাদন সেক্টরগুলোতে ধস নেমেছে। ইতোমধ্যেই দেশের বৃহৎ দুটি সার কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সরকারের উচ্চ পর্যায় ও সরকার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের অবৈধ অর্থ লুটপাটের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য স্বল্প সময়ের কথা বলে ২০১১ সালে রেন্টাল, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। তখনই জামায়াত এর সম্ভাব্য কুফল ও অর্থ আত্মসাতের সরকারি অপকৌশলের প্রতিবাদ জানিয়েছিল।
ড. মাসুদ বলেন, সরকারের সীমাহীন দুর্নীতির কারণে দেশে বিদ্যুৎ নেই, গ্যাস নেই, পানি নেই, যুবকদের চাকুরি নেই, ব্যাংকে পর্যাপ্ত রিজার্ভ নেই, বিনিয়োগ নেই। চতুর্দিকে শুধু নেই আর নেই। সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশকে দেউলিয়া বানানোর দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সরকারের হাত থেকে দেশকে উদ্ধারের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। দেশে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জনগণের দাবি হচ্ছেঃ জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করতে হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে হবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অবৈধভাবে ব্যয়কৃত জনগণের টাকা জনগণের কোষাগারে জমা করতে হবে। খেলাপী ঋণ ও পাচারকৃত অর্থ ফেরত এনে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতে হবে। জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করার কারণে গ্রেফতারকৃত সকল রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর মুক্তি দিতে হবে। এ সরকারের নিকট দেশ, দেশের জনগণ, রাষ্ট্র কোনোটাই নিরাপদ নয়। এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলে জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতাও নেই। তাই জোর করে ক্ষমতা দখলকারী এ সরকারের হাত থেকে দেশকে উদ্ধার করে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার লক্ষ্যে কেয়ারটেকার বা দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য আমরা দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।